১৯৯৪ সালে পাবনার ঈশ্বরদীতে তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে বহনকারী ট্রেনে গুলি করার মামলায় ৩০ অভিযুক্ত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার (৩০ জুন) এ মামলার যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে পাবনার অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত-১ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক রোস্তম আলী এ নির্দেশ দেন।
দুপুরে মামলার ৫২ আসামির মধ্যে ৩০ জন আদালতে উপস্থিত হয়ে জামিন আবেদন করেন; যাদের সবাই বিএনপি-নেতাকর্মী। আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
একই সঙ্গে আদালতে উপস্থিত না হওয়ায় আরও ৫ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এ মামলার পরবর্তী যুক্তিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে সোমবার (০১ জুলাই)।
জামিন নামঞ্জুর হওয়া ৩০ আসামির মধ্যে বিএনপি নেতা একেএম আক্তারুজ্জমান আকতার, সাহাপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান নেফাউর রহমান রাজু, ঈশ্বরদী উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আজিজুর রহমান শাহীন প্রমুখও রয়েছেন।
আর মামলার প্রধান আসামি ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক পৌরমেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু এবং বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবীর দুলাল হাজির না হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।
পাবনা জেলা আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আকরামুজ্জামান মামুন বাংলানিউজকে জানান, এ মামলায় মোট আসামি ৫২ জন। এর মধ্যে রোববার নির্ধারিত যুক্তিতর্ক শুনানিতে ৩০ জন উপস্থিত হন। আদালত তাদের জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করছেন অ্যাডভোকেট গোলাম হাসনায়েন। আর আসামি পক্ষে ছিলেন খন্দকার মাসুদ।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর খুলনা থেকে ট্রেনে ঈশ্বরদী হয়ে সৈয়দপুরের দলীয় কর্মসূচিতে যাচ্ছিলেন তৎকালীন বিরোধীদলের নেত্রী শেখ হাসিনা। তাকে বহনকারী ট্রেনটি ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে প্রবেশের মুহূর্তে ওই ট্রেন ও শেখ হাসিনার কামরা লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। স্টেশনে যাত্রাবিরতি করলে আবারও ট্রেনটিতে হামলা চালানো হয়।
এ ঘটনায় পরবর্তীতে দলীয় কর্মসূচি সংক্ষিপ্ত করে শেখ হাসিনা দ্রুত ঈশ্বরদী ত্যাগ করেন। পরে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জিআরপি থানার ওই সময়কার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদী হয়ে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা ও বর্তমানে ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ সাতজনকে আসামি করে মামলা করেন।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর পুলিশ মামলাটি পুনঃতদন্ত করে। তদন্ত শেষে নতুনভাবে স্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ ৫২ জনকে এ মামলার আসামি করা হয়।
এদিকে মামলা করার পর ওই বছর কোনো সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ। কিন্তু আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য তা সিআইডিতে পাঠান। পরে তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে সিআইডি।
বার্তা কক্ষ
২০ জুন ২০১৯