Home / শীর্ষ সংবাদ / চাঁদপুরে ৫৩ হাজার হতদরিদ্রের মাঝে ১০টাকায় চাল বিতরণ শুরু
ten-taka-rice
ফাইল ছবি

চাঁদপুরে ৫৩ হাজার হতদরিদ্রের মাঝে ১০টাকায় চাল বিতরণ শুরু

‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’ এই শ্লোগানে সারা দেশের ন্যায় চাঁদপুরেও হতদরিদ্রদের মাঝে ১০টাকা কেজি দরে চাল বিতরণ শুরু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত ইউনিয়ন পর্যায়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই চাল বিতরণ করা হচ্ছে।

১২ সেপ্টেম্বর সোমবার থেকে কার্ডধারি প্রতিটি পরিবারকে ১০টাকা কেজি মূল্যে ৩০কেজি করে চাল দেয়া হয়। এই কর্মসূচিতে সেপ্টেম্বর, অক্টোবর ও নভেম্বরÑ এই তিন মাস তারা ৩০ কেজি করে চাল পাবে।

চাঁদপুর জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, চাঁদপুর জেলায় ১২৩ জন ডিলারের মাধ্যমে ৫৩ হাজার ১৫৬ পরিবারের মাঝে ৩০ কেজি করে সর্বমোট ১৫৯৪. ৬৮০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হবে। এরমধ্যে চাঁদপুর সদর উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়নে ২৩জন ডিলারের মাধ্যমে কার্ডধারি ৮ হাজার ৭৩৬টি পরিবারের মাঝে থেকে চাল বিতরণ শুরু হয়।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকালে চাঁদপুর সদর উপজেলার ১২নং চান্দ্রা, ১০নং লক্ষ্মীপুর, ৯নং বালিয়া ইউনিয়নসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে একাধিক ডিলারদের মাধ্যমে এই চাল বিতরণ করা হয়। তবে কোথাও কোথাও ৩০০ টাকায় ৩০ কেজি চাল বিক্রির কথা থাকলেও উল্লেখিত টাকার চেয়ে ২০ টাকা বেশি নিয়েও পরিমাণে কম চাল দেয়ার অভিযোগ পাওয়ার গেছে। ৩০ কেজি পরিমানের প্রতিটি বস্তায় বোঙা দিয়ে ফুটো করে চাল সরিয়ে ফেলা হচ্ছে বলে জানায় কেউ কেউ।

এ বিষয়টি অস্বিকার করে ডিলারদের বক্তব্য হলো, চাল বিক্রির ক্ষেত্রে পরিবহণ এবং শ্রমিকসহ নানা খাতে খরচ রয়েছে। তাছাড়া ৩০ কেজি পরিমানে বস্তা হলেও গোডাউন থেকে চাল ওজনে কম দেয়া হচ্ছে। কিন্তু আমরা গ্রাহকদের বস্তাসহ চাল দিয়ে দিচ্ছি।

১২ সেপ্টেম্বর সদর উপজেলার ১০নং লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের বেপারী বাজারে ডিলার মো. ইউনুছ গাজীর মাধ্যমে শান্তিপূর্ণভাবে চাল বিক্রি করা হয়। ওই এলকায় কার্ডধারীর সংখ্যা ৫৪৮জন। সেখানে ট্যাগ অফিসার নুরুল ইসলামসহ দলীয় নেতাকর্মী ও গণমান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

একই ইউনিয়নের বহরিয়া বাজার ডিলার ফিরোজ বেপারীর মাধ্যমে ৫৪০ টি কার্ডধারী পরিবারের মাঝে চাল বিক্রি করা হয়। ৯নং বালিয়া ইউনিয়নের ফরাক্কাবাদ বাজারের ডিলার মো. কাদির গাজীর মাধ্যমে চাল বিতরণ উদ্বোধন করেন ইউপি চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম মিজি। সেখানে সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ৪৪৯টি পরিবারের মাঝে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়।

একই ইউনিয়নে ডাইনেগো বাড়ি এলাকায় ডিলার মো. হারুন আর রশীদের মাধ্যমে ৪১০ পরিবারের মাঝে চাল বিতরণ করা হয়। ১৩নং হানারচর ইউনিয়নে ডিলার মো. ওয়ালিউল্লাহ মোস্তানের মাধ্যমে ২৩০ পরিবারের মাঝে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়।

১২নং চান্দ্রা ইউনিয়নে ডিলার ইব্রাহিম ইবুর মাধ্যমে চাল বিক্রির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খান জাহান আলী কালু পাটওয়ারী। এখানে কার্ডধারি ৩৯৩ পরিবারের মাঝে ৩০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়। এই ইউনিয়নের ডিলার স্বপন বেপারী ৩৯০ পরিবারের মাঝে চাল বিতরণ করে। তবে এখানে চাল নিতে আসা কিছু পরিবার অনিয়মের অভিযোগ করেন।

তাদের অভিযোগ ৩০ কেজি বস্তায় ৩০ কেজি চাল নেই। ডিলার প্রতিনিধিরা বলেন, গোডাউন থেকে ৩০ কেজির যে বস্তা পেয়েছি সেটিই আমরা গ্রাহকদের তুলে দিচ্ছি। কোনো বস্তায় একটু বেশি আর কোনো বস্তায় একটু কম রয়েছে। যা গোডাউন থেকেই আসছে।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান খান জাহান আলী কালু বলেন, আমরা ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে যে ত্রানের চাল দেই সেখানে সরকার আমার খরচ দেয় না। কিন্তু ১০টাকা কেজি মূল্যেই এই চালের ক্ষেত্রে সরকার ডিলারদের কেজি প্রতি ২টাকা কম অর্থাৎ ৮টাকা রাখছে। তাই কোনো অবস্থাতেই তাদের চাল কম দেবার সুযোগ নেই। কেউ কম দিলে সেটি অবশ্যই অনিয়মের মধ্যে পড়ে।

প্রতিবেদক :আশিক বিন রহিম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯