‘আমরা যদি মরে যাই শ্বশুর-শাশুড়ি, শশুরের ভাই মেম্বার ও শ্যালক দায়ী। উনাদের জন্যে এ পরিস্থিতি আমাদের। এই যে আমার ছেলে, কত সুন্দর ফুটফুটে বাচ্চা। সুন্দর মত বাঁচতে চেয়েছিলাম কিন্তু তারা আমাদের বাঁচতে দেয়নি। আমাদের সাথে তারা অনেক খারাপ ব্যবহার করেছে। এ জিনিসগুলো আপনাদের জানিয়ে রাখলাম।’
এভাবেই ফেসবুকে প্রকাশিত ভিডিওতে বলছিলেন মাঈনুদ্দিন। ভিডিওটি প্রকাশ করে রোববার(১৬ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে চাঁদপুর সদর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের দেবপুর গ্রামের বড় হুজরের বাড়িতে মাঈনুদ্দিন তার স্ত্রী ও সন্তানদেরকে খুন করে আত্মহত্যা করেন।
নিহতরা হলেন স্ত্রী ফাতেমা বেগম(২৪),মেয়ে মিথিলা(৫) ও ছেলে সিয়াম(১),স্বামী মাঈনউদ্দিন।
রামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল-মামুন পাটোয়ারী বলেন, ‘মাঈনউদ্দিন চট্টগ্রামে একটি বেকারিতে কাজ করতো। দু’দিন আগে সে বাড়িতে আসে। রোববার সে ছেলেকে নিয়ে পারিবারিক কবরস্থান পরিষ্কার করে এবং তা ভিডিও করে তার প্রবাসী ভাইকে পাঠায়।’
এছাড়া রাতে তার ফেসবুক আইডি থেকে সে স্ট্যাটাস দেয়, ‘আমি মরে যাবো। এর জন্য দায়ী থাকবে আমার শ্বশুর ও শাশুড়ি।’ ওই স্ট্যাটাস থেকে মাঈনউদ্দিনের প্রবাসী ভাই তার মাকে বিষয়টি জানায়।
এরপর প্রথমে সে তার স্ত্রীকে বাড়ির পুকুরে চুবিয়ে হত্যা করে এবং পরে দুই সন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। স্ত্রী সন্তানকে হত্যার পর সে নিজে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে। পরে সকালে মাঈনউদ্দিন, তার স্ত্রী ও দুই সন্তানের লাশ পাওয়া যায় ।
ঘটনাস্থল থেকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি-সার্কেল) জাহিদুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে— মাঈনউদ্দিন তার স্ত্রী ও সন্তানদের হত্যার পর নিজে আত্মহত্যা করেছে। মাঈনউদ্দিনের স্ত্রী ফাতেমার লাশ পাওয়া গেছে বাড়ির পাশের পুকুরে।
আর মাঈনুদ্দিনের লাশ পাওয়া গেছে ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায়। এছাড়া তার দুই শিশু সন্তানের লাশও ঘরে পাওয়া গেছে। তাদের শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।’
মাঈনুদ্দিনের সে ভিডিওটি দেখুন-
চাঁদপুর টাইমস রিপোর্ট
১৭ ডিসেম্বর, ২০১৮