রোহিঙ্গা শিবির নিয়ে নেপথ্যে থেকে অনেক দেশি-বিদেশির বিরুদ্ধে কলকাঠি নাড়ার অভিযোগ উঠেছে। কক্সবাজারে এরকম দেশি-বিদেশি অনেক লোক গোপনে অবস্থান নিয়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।
অনেক বিদেশি নাগরিক রয়েছেন ট্যুরিস্ট ভিসা নিয়েই অবস্থান করছেন কক্সবাজারে। আবার অনেকের ভিসার নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হলেও তারা বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। এরকমই দুই বিদেশিনীকে মাত্র একদিনের নোটিশে কক্সবাজার ত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে।
জানা গেছে, কক্সবাজার সাগর পাড়ের বেশ কয়েকটি তারকা হোটেলে এরকম মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসা নিয়ে বিদেশি নাগরিকদের অবস্থান রয়েছে। কক্সবাজারের সংশ্লিষ্ট আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী কর্তৃপক্ষ গোপন সূত্রে খবর পেয়ে শহরের কলাতলি সাগর পাড়ের একটি হোটেল থেকে দুই বিদেশিনীকে চ্যালেঞ্জ করেন। বিদেশিনীদ্বয় অকপটে স্বীকার করেন তাদের মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসা নিয়ে অবস্থানের কথা।
এমনকি বিদেশিনীদ্বয় এনজিও’র কাজ তদারকির কথা বলে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতিদিন যাওয়া আসার কথাও জানান। তাদের একজন অস্ট্রেলিয়া ও ব্রিটেনের যৌথ নাগরিক। তাঁর নাম মিস ইবা বুঝো। অপরজনের নাম মিস এ্যানাবেল। তিনি আমেরিকার নাগরিক। তারা দুইজনই রবিবার কক্সবাজার ত্যাগ করেন।
অপরদিকে আলোচিত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর রোহিঙ্গা সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস এন্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) এর ৫২ সদস্যের মজলিসে শুরার পর সংগঠনটির উপদেষ্টা কমিটি নিয়ে নিয়েও এখন ব্যাপক আলোচনা চলছে। রোহিঙ্গা সংগঠনটিতে বাংলাদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সম্পৃক্ততা নিয়েও উঠেছে নানা সন্দেহ।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে কক্সবাজারের উখিয়া ডিগ্রী কলেজের মাসুদ সিদ্দিকী নামের একজন প্রভাষকের ভূমিকার বিষয়টি নিয়েও তদন্ত করা হচ্ছে। প্রভাষক মাসুদ সিদ্দিকী গত ২৫ আগস্টের লাখো রোহিঙ্গা সমাবেশের মঞ্চেও উপস্থিত ছিলেন। তিনি এ বিষয়ে জানিয়েছেন, একটি মানবাধিকার সংগঠনের কর্মী হিসাবে সেদিন সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। সংগঠনের উপদেষ্টা কমিটিতে স্থানীয় তিনজন আইনজীবী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক এবং একজন মাওলানার জড়িত থাকার বিষয়টি নিয়েও এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে।
ওদিকে গত ২৫ আগস্টের লাখো রোহিঙ্গা সমাবেশের গেঞ্জি, প্ল্যাকার্ড, ব্যানার, পোস্টারসহ অন্যান্য আনুসাঙ্গিক জিনিস ছাপা ও সরবরাহ দেওয়ার কাজে জড়িত ৩টি প্রতিষ্ঠান শনাক্ত করা গেছে।
প্রতিষ্ঠান ৩টি হচ্ছে উখিয়া উপজেলা সদরের মসজিদ মার্কেটের কম্পিউটার ও প্রেস যথাক্রমে নিশাত প্রিন্টার্স, মিডিয়া প্রিন্টার্স এবং সফট কম্পিউটার্স নামের প্রতিষ্ঠান।
এসব বিষয়ে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নিকারুজ্জামান জানিয়েছেন, আমি রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহর সংগঠনের উপদেষ্টাদের নাম ধামও সংগ্রহ করেছি। সেই সঙ্গে সমাবেশে সরবরাহ করা প্ল্যাকার্ড ও গেঞ্জি ছাপানোর প্রতিষ্ঠান ৩টির মালিকদের লিখিত বক্তব্য গ্রহণ করেছি। তারা অনেক তথ্য গোপন করছে বলে সন্দেহ করছেন ইউএনও। এসব ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
বার্তা কক্ষ, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯