চাঁদপুর হাজীগঞ্জের রাজারগাঁও গ্রামের জিয়া উদ্দিন ব্যাপারী বাড়ির বাচ্চু ব্যাপারী ও পারুল বেগম দম্পতির আদরের সন্তান শামীম। নকশা মিস্ত্রি হিসেবে বেশ নাম-ডাক ছিলো তার। কাজ করে যে টাকা পেতেন তা দিয়ে বেশ ভালোই চলছিল সংসার। শামীমের তিন ভাই ও দুই বোন। বিয়েও করেছেন, আছে দেড় বছরের একটি ফুটফুটে সন্তান। এখন সন্তানের দিকে তাকান আর নীরবে চোখের পানি ফেলেন তিনি। সন্তানও বাবা বলতে পাগল।
দুই বছর আগেও এই শামীমের জীবন ছিলো স্বাভাবিক। হাসি-আনন্দে মেতে থাকতেন সারাদিন। জীবনের মোড়টা সবে ঘুরতে শুরু করেছিল। হঠাৎ জানতে পারেন, তার দুটো কিডনিই নষ্ট। কিন্তু মৃত্যুর দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে ছেলেটি এখনও বাঁচার স্বপ্ন দেখেন। বলছিলাম শামীম বেপারী (৩০) নামে এক যুবকের কথা। তার কষ্টের কথা জানান রিফাত কান্তি সেন।
২০১৫ সালে বিয়ে করে সুখে-শান্তিতে জীবন-যাপন করছিলেন শামীম। দুই বছর আগে হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিভিন্ন জায়গায় চিকিৎসক দেখিয়েও বুঝতে পারছিলেন না আসলে তার রোগটা কী? অতঃপর ছয় মাস আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়ে জানতে পারেন, তার দুটো কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। এখন তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
শামীমের পরিবারের পক্ষে চিকিৎসার ব্যয় বহন প্রায় দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। সপ্তাহে দু’বার কিডনি ডায়ালাইসিস করতে হয়। সপ্তাহে খরচ প্রায় সাত হাজার টাকা। মাস শেষে দাঁড়ায় প্রায় ৩০ হাজারের মতো। নিজের জায়গা-জমি যা ছিল সবটাই বিক্রি করে এখন নিদারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। অর্থের কাছে যেন বার বার হেরে যাচ্ছেন শামীম।
চিকিৎসকরা বলেছেন, বাঁচতে হলে কিডনি ডায়ালাইসিস করতেই হবে। কিন্তু এত টাকা পাবেন কোথায়? এদিকে সদ্য যে নবজাতক পৃথিবীতে এসেছে তার ভবিষ্যতের জন্য কী করতে পারছেন শামীম? হয়তো এজন্যই নীরবে চোখের জল ফেলছেন আর স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা করছেন, যেন তার এ রোগ মহান আল্লাহ ভালো করে দেন।
শামীম জানান, তিনি বাঁচতে চান, কিন্তু এত টাকা পাবেন কোথায়? কীভাবে চলবে তার চিকিৎসা? সে চিন্তায় তিনি রাতে ঘুমাতে পারেন না। সারা শরীরে প্রচণ্ড যন্ত্রণা। জীবনপ্রদীপ দিন দিন নেভার পথে, তবুও তিনি স্বপ্ন দেখেন বাঁচার।
কথা হয় শামীমের স্ত্রীর সঙ্গেও। তিনি বলেন, জায়গা-জমি যা ছিল সবই বিক্রি করেছি। চিকিৎসার ব্যয় বহন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। প্রতি সপ্তাহে দু’বার ডায়ালাইসিস করতে হয়। মাস শেষে ওষুধপত্র মিলিয়ে ৫০-৬০ হাজার টাকা খরচ হয়। আমরা এখন নিরুপায়।
সমাজের বিত্তবানরা যদি সাহায্যের হাত বাড়ান তাহলে হয়তো আমার স্বামী সুস্থ হবেন। আমাদের সংসার আবারও হাসি-আনন্দে ভরে উঠবে।
‘কিন্তু অর্থের অভাবে স্বামীর কিছু হলে দুধের বাচ্চা নিয়ে আমি কোথায় যাব? এখন তার দ্রুত চার ব্যাগ রক্তের প্রয়োজন। রক্তের গ্রুপ এবি পজেটিভ। এ অবস্থায় কেউ যদি আমাদের পাশে দাঁড়াত তাহলে হয়তো আমরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারতাম, আমার স্বামীর চিকিৎসা চালিয়ে যেতে পারতাম। কয়েক দিন ধরে অর্থের অভাবে চিকিৎসা বন্ধ তার।’
ইচ্ছা করলে যে কেউ শামীমকে সাহায্য করতে পারেন। তার কোনো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নেই। তবে ০১৮৩৮-১২৪৮৮৫ (রোগীর নম্বর) ও ০১৬৩৯-৭০৩৭৭৫ (রোগীর স্ত্রী) নম্বরে যোগাযোগ করা যাবে।
বার্তা কক্ষ
১৪ মার্চ,২০১৯
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur