Home / উপজেলা সংবাদ / ফরিদগঞ্জ / দীর্ঘবছর থেকে রূপসা জমিদারি ঐতিহ্যের রাস্তায় বেহাল দশা
rupsa-road-fact
ফরিদগঞ্জ-রূপসা সড়কের বেহাল দশা। ছবি- চাঁদপুর টাইমস

দীর্ঘবছর থেকে রূপসা জমিদারি ঐতিহ্যের রাস্তায় বেহাল দশা

চাঁদপুরের ফদিরগঞ্জ উপজেলার ফরিদগঞ্জ -রুপসা সড়কে এক সময়ে জমিদারদের হাতি ঘোড়া চলতো । মেঘনা পাড়ের ঐতিহ্যবাহী জমিদার ও তাদের অনুগত লোকজন ছাড়াও নানা শ্রেণি পেশার মানুষের চলাচলে সরগরম ছিল রাস্তাটি। কিন্তু এখন এ রাস্তা দিয়ে যান চলাচল দূরের কথা হেঁটে চলাও দায় হয়ে পড়েছে। সাধারণ মানুষের চলাচল ও একসময়ের জমিদারদের স্মৃতি ধরে রাখতে রাস্তাটি সংষ্কারের প্রয়োজন মনে করছে না কেউ।

বর্তমানে খানাখন্দে ভরা ৭ কিঃমিঃ ওই রাস্তাটি দেখলে মনে হয় যেনো কোনো কোনো শত্রুবাহিনী পিচঢালা রাস্তাটি উড়িয়ে দিয়ে গেছে ।

সরেজমিনে দেখা যায় লন্ডভন্ড ফরিদগঞ্জ-রুপসা রাস্তাটিতে এখন আর আগের মত জনগনের চলাচল নেই। গত কয়েক বছরেও রাস্তাটিতে উন্নয়নের কোনো ছোঁয়া লাগেনি। এ নিয়ে ভক্তুভোগীরা দিন দিন ক্ষিপ্ত হয়ে এখন শুধু গালাগাল দেয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ রাস্তাটি সংষ্কারের জন্য শুধু আশ্বাসের বাণী শুনিয়ে গেলেও মূলত কবে নাগাদ এই সড়কের সংষ্কার কাজ শুরু হবে তা সুনির্দিষ্ট ভাবে কেউই বলতে পারছে না।

রুপসা যাওয়ার রাস্তাটিতে যানবাহন চলাতো দূরের কথা এখন ওই গুরুত্বপূর্ন রাস্তাটি দিয়ে হাঁটাচলা করতেও ভয় পাচ্ছে নারী পুরুষ। আগে এই রাস্তা দিয়ে অহরহ ছোটবড় যান চলাচল করতো। আর এখন রাস্তাটির দূরব্স্থার কারনে দু’এক ঘণ্টায়ও কোন যান চলাচল করতে দেখা যায় না। যে কারনে অনেক পথ ঘুরে আসা যাওয়া করতে হয় রুপসা কিংবা খাজুরিয়াসহ উপজেলার পূর্বাঞ্চলের পথচারিদের। তবে সবচেয়ে বেশি বিপাকে আছে এই সড়কের পাশবর্তী লোকজন।

এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীরা জানায়, উপজেলা গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা হিসেবে ফরিদগঞ্জ থেকে উপজেলার পূর্বাঞ্চল তথা পাশবর্তী লক্ষীপুর জেলার রামগঞ্জ উপজেলায় যাতায়াতের মাধ্যম । প্রতিদিন রাস্তাটি দিয়ে শতশত যানবাহন সহ হাজার হাজার লোকের চলাচলে রাস্তাটি ছিল সরগরম। শুধু তাই নয় চাঁদপুর জেলার মেঘনার পূর্ব পাড়ের ঐতিহ্যবাহী জমিদারদের বসত বাড়ি হলো ফরিদগঞ্জের রুপসায়। প্রতি মাসেই রুপসা জমিদার বাড়িতে বিভিন্ন অনুষ্ঠান কিংবা আয়োজিত বনভোজনে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা গুরুত্বপূর্ন ব্যক্তিরা গাড়ি নিয়ে আসতেন। প্রায় দুই বছর যাবত ওই সড়কের বেহাল দশার কারণে এখন সবই অতিত হয়ে গেছে

রুপসা এলকায় বাড়ি প্রবাসী জাহাঙ্গীর ক্ষোভের সাথে জানান গত ২৩ মাস আগে বিদেশ থেকে এসে রাস্তাটি যেমন দেখেছি এবার এসেই সেই রাস্তাটির একই অবস্থা দেখছি। রাস্তাটিতে কোন উন্নয়নের ছোঁয়াই লাগেনি। ভুক্তভোগী সহিদুল্লাহ জানান এই রাস্তায় চলতে গিয়ে শুনা যায় ক্ষিপ্ত হয়ে কত মানুষ যে শুধু জনপ্রতিনিধি ও সরকারকে শুধু ভোঁড় চৈতাল কয়।

ইউনিয়র আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজিম উদ্দীন পাটওয়ারী চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ফরিদগঞ্জ-রুপসা রাস্তাটির যে ঐতিহ্য ছিল তা এখন আর নেই। এই সড়কের ঐতিহ্য এবং বর্তমান দুরবস্থার কথা বর্ননা করে দীর্ঘদিন থেকে রাস্তাটি সংষ্কারের দাবি জানিয়ে বহু আবেদন করেছি।

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চাঁদপুর টাইমসকে বলেন , লন্ডভন্ড রাস্তাটি সংষ্কারের দাবি জানিয়ে এমপি মহোদয় বরাবরে আবদেন দিয়েছি।
সড়কের দুরবস্থার কথা স্বীকার করে স্থানীয় সরকার বিভাগের ফরিদগঞ্জের প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম মজুমদার চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, রাস্তাটির দুই পাশে তিন ফুট করে বৃদ্ধি করাসহ নুতন ভাবে সষ্কার অন্য আরো কয়েকটি রাস্তার উন্নয়ন কাজের প্যাকেজের সাথে এ রাস্তাটির জন্যে ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রয়েছে। এখন শুুধু টেন্ডারের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগের কাজটি চুড়ান্ত হলেই দ্রুত ওই রাস্তাটি সংষ্কার কাজ শুরু করা হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেনে।

ঠিকাদার কবে নাগাদ চূড়ান্ত হবে জানতে চাইলে এ প্রকৌশলী বলেন, রুপসা সড়কের কাজ করতে ঠিকাদার চুড়ান্ত করার জন্য চলতি বছরের গত এপ্রিল মাসে টেন্ডার আহবান করা হয়েছিল। কিন্তু উক্ত কাজ সম্পাদনের জন্য টেন্ডারে কোন ঠিকাদার অংশ গ্রহন না করায় তা আবার রি টেন্ডার করা হয়েছে। আশা করি ঠিকাদার চুড়ান্তু হলে জুনের মধ্যেই উক্ত সড়কের কাজ সম্পন্ন হবে। এখন ভুক্তভোগী মানুষকে আরে ২/৩ মাস ধৈর্য্য ধারণ করতে অনুরোধ জানিয়েছে তিনি।

তবে ফরিদগঞ্জের বর্তমান এমপি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি মুহম্মদ শফিকুর রহমান ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আ্যডভোকেট জাহিদুল ইসলাম রোমান এই দুই জনপ্রতিনিধিই এখন ওই রাস্তাটি দ্রুত সংষ্কারের জন্য প্রতিনিয়ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তাগাদা দিচ্ছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

প্রতিবেদন- মানিক পাঠান
৮ মে ২০১৯