Home / চাঁদপুর / চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের নববর্ষ উদযাপনে কর্মসূচি
pohela boishak

চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের নববর্ষ উদযাপনে কর্মসূচি

বাংলা নতুন বছরকে বরণ করে নেয়ার উৎসবের নানা আয়োজনের মধ্যে বাংলাদেশের ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা ’ মানবসভ্যতার প্রতিনিধিতশীল সংস্কৃতি হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করে। যাকে জাতিসংঘের অঙ্গসংস্থা ইউনেস্কো ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ কে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ `Intangible Cultural Heritage’ এর তালিকায় অর্ন্তভূক্ত করেছে ।

বাঙালির আত্মপরিচয়, ঐক্য,শান্তি ও অসম্প্রদায়িক চেতনাকে ধারণ করে ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’ বর্তমানে সার্বজনীন স্বীকৃত একটি উৎসব । যাকে বলা হয় ‘বাংলা নববর্ষ’। আর এ নতুন বছরের প্রথমদিনটি হচ্ছে পহেলা বৈশাখ। তাই এ দিনটি বাঙালি বেশ আড়ম্বরতার সাথে উদযাপন করে থাকে। এ দিন বাঙালি উৎসবে মেতে ওঠে। আর এ দিবসটি বেশ ক’বছর যাবৎ সরকারিভাবে উদযাপিত হয়ে আসছে।

সে ধারাবাহিকতায় পহেলা বৈশাখ বাংলা নববর্ষ ১৪২৬ বঙ্গাব্দ আনন্দঘন পরিবেশে উদযাপনে চাঁদপুর জেলা প্রশাসন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এ উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের প্রস্তুতিসভা মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১ টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শওকত ওসমান সভায় সভাপতিত্ব করেন । জেলা প্রশাসন,পুলিশ বিভাগ, সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণ,সাংবাদিক,সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং সুধীজন এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভায় জেলা কমিটি সহ ৪টি উপ-কমিটি ও ৩৩ টি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে ।

বর্ষবরণ উ্দযাপনে অতীতের বছরগুলোর সাথে মিল রেখে এবারো ব্যাপক কর্মসূচি নেয়া হয়। পহেলা বৈশাখ সকাল ৯ টায় চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ থেকে বর্ণাঢ্য ‘ মঙ্গল শোভাযাত্রা ’ বের করার মধ্যে দিয়ে সরকারিভাবে গৃহীত দিনের কর্মসূচি শুরু হবে।

সকাল দশটায় চাঁদপুর প্রেসক্লাবের পেছনে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে বর্ষবরণের মূল অনুষ্ঠান ও বৈশাখী মেলা হবে। বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান এদিন ভোরে তাদের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষে প্রশাসনের মূল অনুষ্ঠানে সমবেত হবে। এরপর ধারাবাহিকভাবে ডাকাতিয়ার পাড়ে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান মঞ্চে নানা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও বড় স্টেশন মোলহেডে থাকবে গ্রামীণ খেলাধুলা।

নববর্ষ উৎসব সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে উদযাপনে শোভাযাত্রা,আপ্যায়ন,বৈশাখি মেলা, মাঠ ও মঞ্চসজ্জা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে জেলা কমিটি ও ৪টি উপ-কমিটি যথাযথ দায়িত পারন করবে ।

শোভাযাত্রাকে জাঁকজমকপূর্ণ করতে জেলা শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,সাংস্কৃতিক সংগঠনের পাশাপাশি জেলা পুলিশ ও স্কাউটের বাদক দল অংশ নেবে। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো স্ব-স্ব ব্যানার নিয়ে অংশগ্রহণ করতে পারবে। শোভাযাত্রায় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্যে অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে বর্ণের সমারোহ ও বৈচিত্রের ভিত্তিতে প্রথম থেকে পঞ্চম স্থান অধিকারীদের পুরস্কৃত করা হবে।

বর্ষবরণ অনুষ্ঠান ও বৈশাখি মেলা, বৈশাখি উৎসব মঞ্চে পল্লীগীতি, ভাটিয়ালী, ভাওয়াইয়া, দেশীয় গান, সকাল ১১টায় বড় স্টেশন মোলহেডে দেশীয় খেলাধুলার ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া সুবিধাজনক সময়ে হাসপাতাল, কারাগার ও সরকারি শিশু পরিবারে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।

জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব অর্থায়নে জাঁকজমকপূর্ণভাবে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের উদ্যোগ নেবে।

এছাড়া জেলার সকল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকা ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে সক্রিয় থাকার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বড় স্টেশন মোলহেড থেকে প্রশাসনের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানস্থল ডাকাতিয়া নদীতে ফায়ার সার্ভিস ও কোস্টগার্ড থাকবে।

সভায় উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.জাহেদ পারভেজ চৌধুরী, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব জীবন কানাই চক্রবর্তী, নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা.সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, এনএসআই উপ-পরিচালক এবিএম ফারুক, চাঁদপুর পৌরসভার সচিব আবুল কালাম ভূঁইয়া, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আজিজুন্নাহার,চাঁদপুর প্রেসক্লাব সভাপতি শহীদ পাটোয়ারী, সাধারণ সম্পাদক লক্ষ্মণ চন্দ্র সূত্রধর, জেলা স্কাউটস্ কমিশনার অজয় কুমার ভৌমিক, চাঁদপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক মো.ফরিদ আহমেদ প্রমুখ।

প্রতিবেদক : আবদুল গনি
৪ এপ্রিল ২০১৯