‘আমি চাকরি ফিরে পেয়েছি। এটা আমার জন্য যেমন একদিকে আনন্দের দিন, তেমনি বেদনারও দিন বটে! আমার বাবার প্রতি প্রশাসনের অবহেলা এবং আমার মায়ের সঙ্গে প্রশাসনের যে আচরণ—তা কোনোভাবেই ভুলতে পারছি না।’
সরকারি চাকরিতে যোগদানের পর সাংবাদিকদের কাছে এভাবেই প্রতিক্রিয়া জানান নিজ দাফনে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা ‘গার্ড অব অনার’ প্রত্যাখ্যানকারী পরলোকগত বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেনের ছেলে নুর ইসলাম।
দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে হুইপ ইকবালুর রহিম এমপির বরাবরে ক্ষোভমিশ্রিত চিঠি লেখার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মৃত্যুবরণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল। গতকাল রবিবার সকালে নুর ইসলাম চাকরিতে যোগদান ছাড়াও পরিবার নিয়ে তাঁর নামে বরাদ্দ বাড়িতেও উঠেছেন। এর আগে বরাদ্দ করা সরকারি বাড়ি থেকে তাঁর পরিবারকে বের করে দিয়েছিলেন এসিল্যান্ড আরিফুল ইসলাম।
৩ নভেম্বর রবিবার সকালে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শিবেশ সরকার গাড়িচালক হিসেবে নুর ইসলামের যোগদানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিজ দাফনে রাষ্ট্রীয় সম্মান প্রত্যাখ্যান করে আলোচিত মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইলের ছেলে নুর ইসলাম বলেন, “আমার জন্য মৃত্যুর পরও বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধার সবচেয়ে বড় সম্মান, রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘গার্ড অব অনার’ তাঁর শেষ যাত্রার কফিনে গ্রহণ করেননি। মাকে বৃদ্ধ বয়সে অপমানিত, লাঞ্ছিত ও পায়ে আঘাত পেতে হয়েছে। আমি এই ঘটনারও সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করছি। যাতে করে আর কোনো মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁর পরিবারকে এই পরিণতির শিকার হতে না হয়।”
এ সময় তিনি হুইপ ইকবালুর রহিমের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আরো বলেন, ‘আমার বাবা বেঁচে থাকলে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে হুইপকে স্যালুট জানাতেন… বাবা মরেও আমার চাকরিটা নিশ্চিত করে গেলেন। এ জন্য আমি আমার বাবা, হুইপ ও আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ।’ (কালের কণ্ঠ)
বার্তা কক্ষ, ৪ নভেম্বর ২০১৯