Home / বিশেষ সংবাদ / ‘লাশ নিয়ে যান আপনার মেয়েকে খুন করে খাটের নিচে রেখে দেয়েছি’
murder-case-dhaka

‘লাশ নিয়ে যান আপনার মেয়েকে খুন করে খাটের নিচে রেখে দেয়েছি’

মোহাম্মদপুর থানা এলাকার শারমিন হত্যা মামলার মূল আসামি স্বামী আমির হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই ঢাকা মেট্রো (উত্তর)। যৌতুকের ৫০ হাজার টাকা না পেয়েই স্ত্রীকে বটি দিয়ে গলা হত্যা করেন আমির। আর হত্যার পরে তিনি নিজেই শাশুড়িকে ফোন করে বলেন, ‘আপনার মেয়েকে খুন করে খাটের নিচে রেখেছি, লাশ নিয়ে যান।’

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পিবিআই হেডকোয়ার্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই’র প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার এসব তথ্য জানান।

তিনি জানান, মোহাম্মদপুর থানা এলাকার শারমিন হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন ও ঘাতক স্বামী আসামি মো. আমির হোসেনকে (২৮) গতকাল চট্টগ্রাম ইপিজেড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পিবিআই প্রধান জানান, মামলার বাদী শারমিনের বাবা ছাবেদ আলী ঢাকার মোহাম্মদপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওই অভিযোগে বলা হয়েছে যে, আসামি মো. আমির হোসেন (২৮) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে গত চার মাস আগে মেয়ে শারমিন বেগমকে (২০) বিয়ে করেছেন। গত ৩০ জুন বিকেলে তার মেয়েসহ উক্ত আসামি বাসায় এসে ১০ হাজার টাকা যৌতুক চায়। তখন নিহত শারমিনের মা জানায় যে তার কাছে কোনো টাকা নেই । এ কথা শুনে আমির তার বউ শারমিনকে নিয়ে বাসা হতে চলে যায়।

বনজ কুমার জানান, পরদিন গত ১ জুলাই রাত সাড়ে ৮টায় আমির একা আবারো তার শাশুড়ির বাসায় আসেন এবং যৌতুক হিসেবে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এ সময় তার শাশুড়ি আসামিকে এক হাজার টাকা দিয়ে আর টাকা নেই জানালে আসামি বাদীর মেয়েকে শেষ করে দিবে বলে ক্ষিপ্ত হয়ে চলে যায়।

পিবিআই তদন্ত সূত্রে জানা যায়, ওই রাতেই আসামি রাত অনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে শারমিনের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে ফোন করে পুনরায় তার দাবিকৃত টাকা দিতে বলে। না হলে তার মেয়েকে খুন করবে বলে হুমকি দেয়। পরবর্তীতে ভোর ৪টার সময় উক্ত আসামি ফোন করে জানায় ‘আপনার মেয়েকে খুন করে খাটের নিচে রেখেছি, লাশ নিয়ে যান।’

এরপর ওই বাসার ম্যানেজারের স্ত্রী মমতাজের মাধ্যমে খবর পেয়ে বাদী পঙ্গু হাসপাতালে যান। হাসপাতালে গিয়ে তার মেয়েকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডান ও বাম হাতের কব্জিতে গভীর কাটা, ডান ও বাম পায়ের গোড়ালির উপরের অংশে গুরুতর জখম, পিঠের উপরে ধারালো ক্ষত চিহ্ন, সারা শরীরে রক্তমাখা অবস্থায় দেখতে পান।

গোঙানির শব্দ শুনে শারমিনকে উদ্ধার করে প্রতিবেশীরা

এই ঘটনার বিষয়ে শারমিনের মা ফজিলা বেগম জানান, বাড়ির ম্যানেজারের স্ত্রী মমতাজ বেগম গোঙানির শব্দ শুনে আশপাশের লোকজন ডেকে অন্যান্যদের সহযোগিতায় গুরুতর আহত অবস্থায় ভিকটিমকে চিকিৎসার জন্য জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (পঙ্গু হাসপাতাল) তিনি নিয়ে যান। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মেয়ে মারা যায়।

আটক হওয়া আসামির জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পিবিআই জানায়, আসামি আমির হোসেন ভিকটিম শারমিনকে বিবাহের আগে আরও দুটি বিয়ে করে। উক্ত সংসারে তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। মামলার ভিকটিম শারমিন আসামি আমির হোসেনের তৃতীয় স্ত্রী। আসামি তার দাবিকৃত যৌতুকের টাকা না পেয়েই শারমিনকে হত্যা করেছে। আর টাকার জন্যই সে একাধিক বিয়ে করেছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে আমির হোসেন।