চাঁদপুরে তিন নদীর মোহনার পশ্চিম দিকে পদ্মার মুখে আর মেঘনার বুকে জেগে উঠা এক টুকরো বালুর চর ইতিমধ্যেই মিনি কক্সবাজার নামে পরিচিতি পেয়েছে। স্থানীয়দের পাশাপাশি দেশের নানা প্রান্ত থেকে প্রতিদিন শত শত পর্যটক এখানে ভিড় করছে।
অথচ আসন্ন বর্ষাকে ঘিরে এই চরটি ক্রমেই যেনো মৃত্যুকূপ হিসেবে রুপ নিচ্ছে। কারণ আসন্ন বর্ষা মৌসুমকে ঘিরে নদীর নদী দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাছাড়া ছোট্ট ওই বালির চরটিতে অসংখ্য চোরা গর্ত, চোরাবালির স্থান রয়েছে। যার ফলে অতিদ্রুত দেশব্যাপি পরিচিতি পাওয়া এই মিনি কক্সবাজারের অনিরাপত্তার টুরিজম বন্ধ হওয়া প্রয়োজন বলে দাবি করছেন জেলার সচেতন মহল।
গত ১৬ জুন চাঁদপুর জেলা প্রশাসনের উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভায় অনেকেই এ কথা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। সভায় চাঁদপুর উত্তর ফায়ার স্টেশনের পরিচালক ফরিদ আহমেদ মনির বলেন, মেঘনার চরে কোন নিরাপত্তা নেই। সেখানে যাওয়ার বাহনগুলো সম্পূর্ণ ঝুঁকিপূর্ণ। নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে তা বন্ধ করে দেওয়া প্রয়োজন। এটি একটি অনিরাপত্তার ট্যুরিজম পথ। এ মিনি কক্সবাজার ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। সাঁতার জানে না এমন লোকরা সেখানে যাওয়া ঠিক না।
চাঁদপুর সদর সার্কেল জাহেদ পারভেজ চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, এটি মোটেও নিরাপদজনক টুরিজ্যম পথ নয়। এটি এখন মৃত্যুকুপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষার মৌসুম শুরু হয়ে যাওয়ায় ক্রমশ নদী ফুলে ফেপে উঠতে শুরু করেছে। এখঅনে যাওয়ার জন্য যেসব যানবাহন রয়েছে এগুলোও নিরাপদ নয়। বর্ষা শুরু হওয়ার সাথে সাথে নদীতে পানি বৃদ্ধি হচ্ছে। তাই এই মওসুমটি যদি পর্যটকদের জন্য এ স্থানটি বন্ধ করে দেওয়া হয় তাহলে আমরা সাধঅরণ মানুষকে নিরাপত্তা দিতে পারি। এটি একটি অনিরাপত্তার ট্যুরিজম।
রাজরাজেশ্বর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাজী হযরত আলী বেপারী চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, এই স্থানটি আমার ইউনিয়নে। এটি মোটেও নিরাপদ স্থান নয়। আমার ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ট্রলারযোগে আসার পথে নদী এতটাই উত্তাল দেখেছি তাতে করে এই চরে যাওয়া আসা জনসাধারণের জন্য মোটেও উচিত নয়। এটিকে বন্ধ করে দেওয়া এখন প্রয়োজন।
জেলা প্রশাসক মোঃ মাজেদুর রহমান খান বলেন, এটি ধরে বন্ধ করে দেওয়া যাবে না। ক্রমান্বয়ে তা করা হবে। ইতিমধ্যে আমরা জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে নৌকার মাঝিদেরকে ১শ লাইফ জ্যাকেট দিয়েছি। আরো ২শ লাইফ জ্যাকেট ও ১শ বয়া ইতিমধ্যে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি।
সম্প্রতি কুমিল্লার একজন কলেজ ছাত্র সাঁতার কাটতে গিয়ে সেখানে নিখোঁজ হন। পরের দিন তার লাশ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, কুমিল্লা কলেজের যে শিক্ষার্থী সেদিন মারা গিয়েছিল তা সাঁতার না জানার কারণে। আনন্দ করতে বন্ধুরা নদীতে সাঁতার কাটছিল। তারা জানতো একজন বন্ধু সাঁতার জানত না। মূলত সাঁতার জানত না দুই বন্ধু। যার জন্য একজনকে তারা পাড়ে নিয়ে গেলেও অন্য বন্ধুটি নদীতে ডুবে যায়।
প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম
১৮ জুন ২০১৯