মতলব উত্তর

মতলবে লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতি : আটক ৩

চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার শ্রীরায়েরচর বাংলাবাজার-মতলব আঞ্চলিক মহাসড়কে লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনায় ৫২দিন পর ঘটনার সাথে জড়িত ৩ ডাকাতকে আটক করে থানা পুলিশ।

আটককৃত ডাকাতরা চাঁদপুর আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি প্রদান করেছে। এতে করে লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনার রহস্য উদঘাটিত হয়। লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওসি মো. মিজানুর রহমান।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ ৫২ দিন পর লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতি ঘটনার রহস্য উদঘাটিত হয়েছে। আদালতে আটক ৩ ডাকাতের ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারকরে জবানবন্দি প্রদান করে।
মতলব উত্তর থানাধীন আনন্দবাজার-ঘাসিরচর পাকা সড়কে গত ১৮ জানুয়ারী ভোর রাতে একটি লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সে সংঘটিত দুঃসাহসিক ডাকাতি ঘটনার রহস্য দীর্ঘ প্রায় ৫২ দিন পর উদঘাটন করেছে মতলব উত্তর থানা পুলিশ।

মামলার ঘটনায় প্রকাশ, গত ১৭ জানুয়ারী তারিখ দিবাগত ভোর রাত আনমানিক ৪টার দিকে (১৮.১.১৯ইং) মতলব উত্তর থানাধীন আনন্দবাজার-ঘাসিরচর পাকা রাস্তায় মজিদ বেপারীর বাড়ীর সামনে রাস্তায় গাছ ফেলে ঢাকা মেট্টো-চ-০২-০৫৩৯ নম্বরের একটি লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্স আটকে লাশের সাথে থাকা আত্মীয়-স্বজনদের নগদ প্রায় ১ লাখ ৫হাজার টাকা এবং প্রায় ১লাখ ৩৬হাজার ১৮০ টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার ও ৩টি মোবাইল সেট লুট করে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা।

এ্যাম্বুলেন্সটি ঢাকা শ্যামলী শিশু হাসপাতাল হতে আফরিন আক্তার (৯) নামের এক শিশুর লাশ নিয়ে মতলব উত্তর থানাধীন শিকারীকান্দি গ্রামে যাচ্ছিল। আফরিনের চাচা মনির হোসেনের দায়েরকৃত এজাহারের ভিত্তিতে এ্যাম্বুলেন্স চালকসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩ জনের বিরুদ্ধে মতলব উত্তর থানার মামলা করেন।

দীর্ঘদিন যাবত মামলাটির রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা করে যাচ্ছিল মতলব উত্তর থানা পুলিশ।

স্থানীয়ভাবে প্রকাশ্য ও গোপনে তদন্তের পাশাপাশি তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে অফিসার ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমানের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মুরশেদুল আলম ভূঁঁইয়া ও এসআই ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে এসআই গোলাম মোস্তফা, এএসআই কাজী হাবিব, এএসআই নাহিদ, এএসআই জয়দেব ঘোষ, এএসআই আবু হানিফ এবং অন্যান্য অফিসার ফোর্স’সহ মতলব উত্তর থানা পুলিশ অভিযান পরিচালনা করেন।

পুলিশের টিমটি ১০ মার্চ দিবাগত রাত থেকে ১১ মার্চ মধ্যরাত পর্যন্ত মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ থানা, দাউদকান্দি এবং তিতাস থানা এলাকার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে প্রথমে উক্ত এ্যাম্বুলেন্স লুটের ঘটনায় জড়িত জয়কৃষ্ণ ঋষি (৩০), পিতা- মৃত ঈষান ঋষি ও লিটন মনি (৩০), পিতা- কালিদাস মনি, উভয় সাং- দুর্গাপুর, ঋষিকান্দি, মতলব উত্তর’কে এবং উল্লেখিত আটক ২ জনের স্বীকারোক্তি মূলক তথ্যের ভিত্তিতে কুমিল্লা জেলার তিতাস থানার লালপুর গ্রাম থেকে তাদের অন্যতম সহযোগী মোহাম্মদ আলী (৪০), পিতা- মৃত বাহার আলী প্রধান, সাং-খালপাড় দুর্গাপুর, মতলব উত্তরকে আটক করতে সক্ষম হয়।

১২ মার্চ ধৃত ৩ ডাকাতকে আদালতে উপস্থাপন করা হলে চাঁদপুরের বিজ্ঞ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মো. নুরে আলম এঁর আদালতে আসামীরা অকপটে দোষ স্বীকার করে কাঃ বিঃ ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে।

আসামীরা তাদের জবানবন্দিতে জানায়, একটি মাইক্রোবাস যোগে ৬-৭ লাখ টাকা আসবে মর্মে ইনফরমেশনের ভিত্তিতে তারা ৩জন আরও ৪ সহযোগীসহ পূর্বপরিকল্পনা করে ঘটনাস্থলে ডাকাতি করতে যায়। কিন্তু লাশবাহী এ্যাম্বুলেন্সকে ইনফরমেশন অনুযায়ী ৬-৭ লাখ টাকা বাহী মাইক্রোবাস মনে করে করাত দিয়ে রাস্তার পাশের গাছ কেটে রাস্তায় ফেলে বর্ণিত ডাকাতি সংঘটন করেছে।

মতলব উত্তর থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান বলেন, দীর্ঘ ৫৩ দিন পর একটি ক্লুলেস ডাকাতি ঘটনার রহস্য উদঘাটন করেছে মতলব উত্তর থানা পুলিশ। পলাতক ৪ জন ডাকাতের সন্ধানে এবং লুন্ঠিত মালামাল উদ্ধারে বিভিন্ন স্থানে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

করেসপন্ডেট
১৪ মার্চ,২০১৯

Share