চাঁদপুর

চাঁদপুরে নির্বাচন পরবর্তী জেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় যে যা বললেন

চাঁদপুর জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির ২০১৯ সালের প্রথম সভা রোববার (১৩ জানুয়ারি ) সকাল দশটায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরবর্তী প্রথম আইন-শৃঙ্খলা কমিটির সভায় সভাপ্রধানের বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক মো.মাজেদুর রহমান খান পিএএ। বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির পিপিএম, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাছির উদ্দিন আহমেদ।

উম্মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন মুক্তিযোদ্ধা সংসদ জেলা কমান্ডার এম এ ওয়াদুদ,স্বাধীনতা প্রদকপ্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ডা.সৈয়দা বদরুন নাহার চৌধুরী, প্রেসক্লাব সভাপতি শহীদ পাটওয়ারী ও জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ইন্সপেক্টর মো. মজিবুর রহমান। সভার শুরুতে গত মাসের কার্যবিবরণী উপস্থাপন করেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিটেস্ট মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জামান।
এরপর সড়ক দুর্ঘটনা, শহরের সৌন্দর্য বাড়ানো, যানজট, দুর্নীতি, মাদক, বিভিন্ন জায়গায় ছেলেদের আড্ডা এবং আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা হয়।
চাঁদপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ড.এএসএম দেলওয়ার হোসেন, জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধাক ডা.আনোয়ারুল আজিম, সিভিল সার্জন ডা.সফিকুল ইসলাম মন্টু, জেলা আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর জেলা কমান্ডেন্ট এএসএম আজিম উদ্দিন, কোস্টগার্ড কমান্ডার লে.এনায়েত বিএন , পাসপোর্ট অফিসের এডি, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকীসহ,উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তাগণ এবং কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ সভায় উপস্থিত ছিলেন।

সভাপ্রধানের বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মো.মাজেদুর রহমান খান বলেন, ‘জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সমস্ত বিভাগের অক্লান্ত পরিশ্রমে আমরা সফলভাবে সুষ্ঠু , মানসম্মত ,আর্ন্তজাতিকভাবে স্বীকৃত এবং সর্বজন গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচন উপহার দিতে সক্ষম হয়েছি।’

এজন্য তিনি পুলিশ বিভাগ,আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ, সেনাবাহিনী, বিজিবি, র‌্যাব, আনসার ভিডিপি, গোয়েন্দা বিভাগ, ডিজিএফআই, এনএসআই কর্মকর্তা, সদস্যবৃন্দ এবং আপময় জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান। জেলা প্রশাসক আরো বলেন, ‘ দুর্নীতি,মাদক, সন্ত্রাস,ইভটিজিং এসব দুষ্টক্ষত থাকতে পারবে না। চাঁদপুরকে বিউটিফিকেশন করা হবে এবং সৌন্দর্য নিয়ে আমাদের কর্মযজ্ঞের পরিকল্পনা রয়েছে।’

পুলিশ প্রশাসন ও পৌর মেয়র এবং জেলা প্রশাসন একসাথে কাজ করবে। রাস্তার ওপর কোনো ভ্যান থাকতে পারবে না। ম্যাজিস্ট্রেট দাঁড়িয়ে থেকে সব পরিস্কার করে দিয়ে আসবে। প্রেসক্লাব ঘাট, মহিলা কলেজ রোড, হাসানআলী স্কুল মাঠসহ আরো যে সব জায়গায় ছেলেদের আড্ডা , ইভটিজিং ও মাদক এসবের কোনো গন্ধের ছোঁয়া আমরা চাঁদপুর দেখতে চাই না।’
তিনি বলেন, ‘ মাদক নিয়ে আমরা অনেক কাজ করছি কিন্তু টিকাইতে পারছি না। উপজেলাগুলোর সাথে জেলা পর্যায় মাদক নিয়ন্ত্রণে আমরা অ্যাপ বানাচ্ছি। নিরাপদ সড়ক ও দুর্ঘটনারোধ কল্পে গাড়িতে ডিভাইজার লাগানোর পরামর্শ দেন তিনি।

পুলিশ সুপার জিহাদুল কবির তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘অন্যান্য জেলার তুলনায় চাঁদপুর জেলার নির্বাচন অত্যন্ত ভালো হয়েছে। কোনো সহিংসতা হয় নি। ভয়ংকর কিছু ঘটতে আমরা দেয়নি। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে আমরা সকল অফিসার অর্থাৎ টোটাল টিম আন্তরিকতার সাথে কাজ করেছে। যার জন্য চমৎকার একটি নির্বাচন উপহার দেয়া সম্ভব হয়েছে। মাদক নিয়ন্ত্রণে ২০১৮ সালে নতুন আইন হয়েছে। আশা করি মাদক অনেক কমে আসবে।

তিনি আরো বলেন, গতবছর আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক অনেকগুলো ইভেন্ট ছিল। ১৪ ডিসেম্বর, ১৬ ডিসেম্বর জাতীয় দিবস এর পর বড়দিন সবগুলো প্রোগ্রাম সুচারুভাবে উদযাপিত হয়েছে। গত মাসের চেয়ে আইন-শৃঙ্খলা বিষয়ক যে সব অপরাধ ছিল তা’কম হয়েছে। দস্যুতা ও ডাকাতি ছিল না।

পৌরসভার মেয়র নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন,‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন চাঁদপুরে অত্যন্ত সুন্দর এবং সু-শৃঙ্খলভাবেই অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর জন্য জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তিনি জেলা প্রশাসন , পুলিশ প্রশাসন এবং নির্বাচন সংশিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।’

তিনি বলেন, ‘ মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং দেশ এগিয়ে যাবে। জননেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকার এবার নির্বাচনে যে ইশতেহার দিয়েছেন । তার ভেতর মাদক,সন্ত্রাস এবং দুর্নীতি সমাজের দুষ্টক্ষতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। আমাদের সরকার আশা করি সফল হবে।’

সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১৩ জানুয়ারি ২০১৯

Share