চাঁদপুর সদর উপজেলার কল্যানপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাখাওয়াত হোসেন রনি পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ভাতাভোগীদের ভাতার বইয়ে মূল ভাতাভোগীর নাম মুছে অন্য ৬ ব্যক্তির নাম অন্তর্ভূক্ত করে ভাতাভোগীদের হয়রানী করর অভিযোগে উঠেছে
এ বিষয়ে সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ নূরুল ইসলাম খান।
এই অভিযোগের ভিত্তিতে সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান (স্মারক নং-উ.প.কা./চাঁদ-সদর/২০১৯-১৬৪) তার কার্যালয়ে ২৯ আগস্ট সকাল ১১টায় সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং স্বাক্ষীগনকে হাজির হয়ে শুনানীতে উপস্থিত থাকার জন্য বাদীকে নোটিশ প্রদান করেন।
বৃহস্পতিবার কল্যানপুর ইউপি চেয়ারম্যান শাখওয়াত হোসেন রনি পাটওয়ারী অনুপস্থিত থাকায় সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বাদী ও স্বাক্ষীগনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখেন ও কথা শুনেন। পরবর্তীতে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শুনানীর দিন ধার্য করে জানানো হবে বলে জানান।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মূল ভাতাভোগীরা হলেনঃ ১। মোঃ রজ্জব আলী খান, পিতা-হরমন, বই নং-১০১০৫, ভাতার নাম-বয়স্ক ভাতা ২। মোঃ জলন্তর খান, পিতা- মানিক খান, বই নং-১০১০৬, ভাতার নাম- বয়স্ক ভাতা, ৩। মোঃ মোস্তফা গাজী, পিতা- হাসিম, বই নং-২১৯৭, ভাতার নাম- প্রতিবন্ধী, ৪। মোঃ গোলাম হোসেন তালুকদার, বই নং-১০০৯৮, ভাতার নাম- বয়স্ক ভাতা, ৫। নুরজাহান বেগম, স্বামী- আশেক আলী, বই নং- ১০১৩১, ভাতার নাম- বয়স্ক ভাতা, ৬। রফিক গাজী, পিতা- নুর মোহাম্মদ, বই নং- ২১৮৮, ভাতার নাম- প্রতিবন্ধী।
ঘষামাজা করে ফ্লুইড দিয়ে লিখা অন্য ব্যক্তির নামগুলো হলোঃ আয়েশা বেগম, স্বামী- মোঃ লতিফ খান, অনিল চন্দ্র শীল, পিতা- সুরেন্দ্র চন্দ্র শীল, মোসাঃ পারুল বেগম, পিতা- বাদশা গাজী, খতেজা বেগম, পিতা- ছাত্তার খান, ছালেয়া বেগম, পিতা- ফয়েজ বক্স পাটওয়ারী, হান্নান গাজী, পিতা- কালু গাজী। সকলে ৮নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ৩নং কল্যাণপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাখাওয়াত হোসেন রনি এর বাড়িতে গিয়ে আপনারা (সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান) বিভিন্ন ভাতাভোগীদের মাঝে ভাতার বই বিতরণের সময় অনেকের ভাতার বই সে নিজের কাছে রেখে দেয় এবং ভাতাভোগীদের নাম ফ্লুইড দিয়ে মুছে অন্য লোকের নাম বসিয়ে সে নিজের হাতে লিখে লোক সমেত ফ্লুইড মারা বই দিয়ে ব্যাংকে টাকা তোলার জন্য পাঠায়। কিন্তু বইয়ের মধ্যে ঘষামাঝা দেখে ব্যাংকে আর তাদেরকে ভাতার টাকা প্রদান করে না।
ভাতার বিষয় ছাড়াও ৯নং ওয়ার্ডের জাহাঙ্গীর গাজী ও শহীদ পাটওয়ারী জানায়, সরকারী অনুদানের নামে আমাদের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা নেয়। পরে অনেক চাপাচাপির পর চলতি বছরের ৩০ জুন ৭০ হাজার টাকার দুটি চেক প্রদান করে। কিন্তু ব্যাংকে গিয়ে একাউন্টে কোন টাকা নাই বলা হয়।
ভুক্তোভুগী ৮নং ওয়ার্ডের ওহাব আলী গাজী জানান, ‘আমাদের কে ভাতার কার্ড দেওয়ার পর বাবুরহাট ভোট অফিসে (ইউনিয়ন চেয়ারম্যানের কার্যালয়) গেছি। ভোট অফিস থেকে আমাদের কে ব্যাংকে পাঠানো হলে ব্যাংক আমাদের বই আটকিয়ে সারাদিন বসিয়ে রাখে।’
ওয়ার্ড মেম্বার খোরশেদ আলম জানায়, আমার ওয়ার্ডে এই ৬টি ভাতার বইে সমস্যা হয়েছে। অভিযোগ সত্য। ভুক্তভোগীরা বিচায় পায় না দেখে উপজেলা চেয়ারম্যানের কাছে এসেছে।
অভিযোগকারী ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ সভাপতি মোঃ নূরুল ইসলাম খান বলেন, চেয়ারম্যান রনির কাছে ৬টি বয়স্ক ও বিধবা ভাতার বই দেওয়া হয়। যাদের নাম বইগুলো দেওয়া হয় তাদের নাম ফ্লুইড দিয়ে মুছে অন্য লোকদের নাম হাতে লিখে দেয়। তারা বইগুলো নিয়ে ভাতা উঠাতে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বইগুলো আটকে দেয়।
সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান জানান, ‘অভিযোগের পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার শুনানীতে স্বাক্ষীসহ হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে চেয়ারম্যান রনি কুমিল্লা থাকার কারনে শুনানির পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হবে।’
সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, ২ আগস্ট ২০১৯
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur