চাঁদপুর

চিকিৎসক সংকটে চাঁদপুর সরকারি হাসপাতাল নিজেই এখন রুগী!

*৬৫ জন চিকিৎসকের মধ্যে ১৯জন গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসকের পদ রয়েছে শূন্য
*৪ মাস ধরে চিকিৎসক ছাড়াই চলছে গাইনী বিভাগ, বন্ধ রয়েছে সিজারিয়ান অপারেশন
* চাহিদা অনুযায়ী সেবা না পেয়ে চরম ভোগান্তিতে রোগীরা, লাভবান দালাল চক্র

চাঁদপুর আড়াইশ শয্যার সরকারি জেনারেল হাসপাতালটি শুধুমাত্র এই জেলার ২৫ লক্ষাধিক মানুষের প্রধান চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রই নয়, এখানে প্রতিনিয়ত পাশ্ববর্তি শরীয়তপুর, ফেনী, নোয়াখালি জেলার গরীব-অসহায় রোগীরাও কম খরচে চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকেন। ফলে সরকারি চিকিৎসার এই প্রতিষ্ঠানটি চাঁদপুর ছাড়াও আরও ৩টি জেলার কাছে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।

অথচ গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালটিতে চিকিৎসক সঙ্কট বেশ প্রকট আকার ধারণ করেছে। আড়াইশ শয্যার এই হাসপাতালটিতে ৬৫জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও ১৯টি পদ এখনো শূন্য রয়েছে। এতে করে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য গড়ে তোলা এই সাহপাতালটি এখন নিজেই যেনো রোগী হতে চলেছে।

ফলে নিজেই রোগী হয়ে পড়া এই চিকিৎসাসেবা কেন্দ্র থেকে সেবা নিতে আসা রোগীরা চাহিদামতো সেবা তো পাচ্ছেই না, উল্টো নানানভাবে বিড়ম্ভবনার শিকার হচ্ছে। এর এই সুযোগকে কাজে লাগীয়ে লাভবান হচ্ছে হাসপাতালে অবস্থান নেয়া প্রাইভেট হাসপাতালের দালাল চক্র।

সুপেয় পানি সংকটে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল

এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্ববধায়ক ডা. মো. আনোয়ারুল আজীম চাঁদপুর টাইমসকে জানান, হাসপাতালে ৬৫জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পদ থাকলেও ১৯টি পদ এখনো শূন্য রয়েছে। যার মধ্যে রয়েছেÑ গাইনী বিভাগরে সিনিয়র কনসালটেন্ট, অর্থবেটিক, এ্যানেসথেনিয়া, মেডিক্যাল অফিসার, ইমাজেন্সির বিভাগের মেডিকেল অফিসার ইত্যাদি পদ। বর্তমানে ৪৬জন চিকিকিৎসকের নিয়মিত রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা এসব শূন্য পদে চিকিৎসক নিয়োগ চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েছি। তারা ব্যবস্থা নিবেন বলে জানিয়েছেন

৪ মাস ধরে গাইনী বিভাগে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকার বিষয়ে তিনি জানান, গাইনী বিভাগে সিনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী) ফাতেমা বেগম চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে অবসর জনিত পিআরএল ছুটিতে রয়েছেন। আর জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইনী) তাবেন্দা আক্তার ৮ ডিসেম্বর থেকে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে আছেন।

বর্তমানে সহকারী রেজিষ্টার হিসেবে নুসরাত জাহান ও মেডিকেল অফিসার হিসেবে রওসাবা নাসরীন পারভীন রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছে। এই বিভাগের জন্য জরুরী ভিত্তিতে ডাক্তার নিয়োগ চেয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে জানানো হয়েছে দিয়েছি।

এদিকে দীর্ঘ ৪মাস ধরে দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসক ছাড়াই চলছে হাসপাতালের গাইনী বিভাগের কার্যক্রম। গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগে কর্মরত সিনিয়র এবং জুনিয় কনসালটেন্ট (গাইনী) না থাকায় ডেলিভারী, চেকআপ, রেপ কেইস, পিএনসি, এএনসি’র মত বিভিন্ন রোগীরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পাশাপাশি অন্যান্য বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসা সেবা নিতে আসা রোগীরা পড়ছেন মারাত্মক দুর্ভোগে।

প্রতিবেদক- আশিক বিন রহিম
৭ মে ২০১৯

Share