বিশেষ সংবাদ

ধর্ষকদের খুনের দায়বহনকারী কে এই হারকিউলিস?

গত কয়েক দিনে গণমাধ্যমে নতুন এক খবর আসছে। ধর্ষণে অভিযুক্ত আসামিদের মৃত্যুর খবর। রাজধানীর অদূরে সাভার থেকে শুরু করে ঝালকাঠির ভাণ্ডারিয়া। ধর্ষণের অভিযোগে এখন পর্যন্ত নিহত তিনজন, হত্যা করা হয়েছে একই কায়দায়।

এতদিন প্রশ্ন ছিল, নতুন এই কায়দায় হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটাচ্ছে কে বা কারা? প্রথম দুই হত্যাকাণ্ডে কোনো ক্লু পাওয়া যায়নি।

সাভারে নিহত রিপনের লাশের সঙ্গে পাওয়া চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমি ধর্ষণ মামলার মূলহোতা।’ অপরদিকে ঝালকাঠিতে নিহত সজলের লাশের সঙ্গে থাকা চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমার নাম সজল। আমি পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার রহিমার (ছদ্মনাম) ধর্ষক। ইহাই আমার পরিণতি।’

প্রথম দুই হত্যাকাণ্ডে হত্যাকারীর পরিচয় পাওয়া না গেলেও তৃতীয় হত্যাকাণ্ডে ধর্ষকদের সাবধান করে এ বিষয়ে ক্লু দেয়া হয়েছে। ঝালকাঠিতে পাওয়া তৃতীয় মরদেহের বুকে লেখা ছিল, ‘আমি পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়ার রহিমার (ছদ্মনাম) ধর্ষক রাকিব। ধর্ষণের পরিণতি ইহাই। ধর্ষকরা সাবধান। হারকিউলিস।’ (hercules)

তৃতীয় চিরকুটে পাওয়া ক্লু’তে দেখা যায় হত্যাকারীর নাম হারকিউলিস। আসলে এটা হত্যাকারীর নাম নয়, বরং ক্লু। কারণ, গ্রিক পুরাণ অনুযায়ী হারকিউলিস ছিলেন গ্রিসের সর্বশ্রেষ্ঠ বীর। আর ধর্ষণে অভিযুক্তদের হত্যাকারী আসলে এই হারকিউলিসের কর্মকাণ্ড থেকে অনুপ্রাণিত।

হারকিউলিস সম্পর্কে গ্রিক পুরাণে কী আছে?
গ্রিক পুরাণ অনুযায়ী হারকিউলিস ছিলেন গ্রিসের সর্বশ্রেষ্ঠ বীর। তিনি যেমন সাহসী, শারীরিক শক্তি সম্পন্ন ছিলেন, তেমনি ছিলেন দয়ালু। কথিত আছে, হারকিউলিস শিশু অবস্থায় খালি হাতে বিষধর সাপ মেরে ফেলেছিলেন গলা টিপে।

প্রকৃতপক্ষে হারকিউলিস হলেন গ্রিক বীর ‘হেরাক্লেস’ এর রোমান পুরাণের নাম। গ্রীকরা তার কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে দেবতা এবং মর্ত্যের বীর- এই দুই পরিচয়েই পূজা করতো।

শিশুসাহিত্যিক সুকুমার রায়ও হারকিউলিসকে নিয়ে গল্প লিখেছেন।

গ্রিক পুরাণ অনুযায়ী হারকিউলিসের জন্ম থিবিসে। তিনি দেবরাজ জিউসের পুত্র। তার মা আক্লমিনা একজন মানুষ। জিউসের সন্তান হওয়ায় হারকিউলিসের জীবনের শেষ পর্যন্ত হেরা তাকে কখনোই ক্ষমা করেননি।

হারকিউলিস যখন শিশু তখনই হেরা তাকে হত্যা করার জন্য দুটি সাপ পাঠান। ঘুমন্ত শিশু হারকিউলিস ঘুম থেকে জেগে উঠলেন এবং শিশু হওয়া সত্ত্বেও ওই ভয়ঙ্কর প্রাণী দুটির গলা ধরে মেরে ফেললেন। হারকিউলিস সম্পর্কে তখন থিবিসের অন্ধ ভবিষ্যদ্বক্তা টাইরেসিয়াস আক্লমিনাকে বলেছিলেন, এই শিশু হবে মানবজাতির গর্ব।

হারকিউলিসের বিভিন্ন অভিযান নিয়ে রয়েছে গল্পের পর গল্প। তিনি নানা স্থানে গিয়েছিলেন আর স্থাপন করেছিলেন অনেক কীর্তি। ভয়ঙ্কর দানব অ্যান্টিউসের বিরুদ্ধে, নদী-দেবতা অ্যাকিলাসের বিরুদ্ধে লড়াই করার পাশাপাশি ট্রয়ের যুদ্ধে এক কুমারীকে উদ্ধার করেও তিনি মহিমান্বিত হন। অ্যাডমিটাসের মৃত স্ত্রী অ্যালসেস্টিসকে মৃত্যু-দেবতার হাত থেকে লড়াই করে ফিরিয়ে আনেন হারকিউলিস।

বিতর্কমূলক কাজ
অস্বাভাবিক শক্তি থাকায় সামান্য অসাবধানতার জন্যই হারকিউলিসের হাতে মানুষ মারা যাওয়ার একাধিক ঘটনার বর্ণনাও রয়েছে গ্রিক পুরাণে। বাল্যকালে রাগের মাথায় শিক্ষকের মাথায় বীণা দিয়ে প্রচণ্ড আঘাত করে হত্যা করেছেন হারকিউলিস।

এছাড়া হারকিউলিস মানবজাতির গর্ব হলেও তার মাধ্যমে হেরা আরও কিছু অনৈতিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছেন। তিনি একসময় হারকিউলিসের চিন্তাভাবনা এমনভাবে বদলে দিয়েছেন যে, বীর যোদ্ধা নিজের ছেলেদের জন্মকাহিনী নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়লেন। তিনি ভাবতে লাগলেন ওই সন্তানরা তার চির প্রতিদ্বন্দ্বী কাজিন ও Tiryns রাজ্যের রাজা ইউরেস্থিউসের ঔরসে মেগারার গর্ভে জন্ম নিয়েছে। ফলে তিনি ক্রোধে পাগল হয়ে তীর ছুঁড়ে হত্যা করলেন সবকটি সন্তানকে (মতান্তরে, আগুনে পুড়িয়ে মারলেন)।

ছেলেদেরকে মারার পর তিনি নিজের পালক পিতা অ্যাম্ফিট্রিয়ন-কে মারতে উদ্যত হলেন। কারণ, তিনি অ্যাম্ফিট্রিয়নকে নিজের পিতা না ভেবে ইউরেস্থিউসের পিতা স্থেনেলাস ভেবেছিলেন। সেসময় দেবী অ্যাথেনা এসে তাকে বাধা দেন আর তাকে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন করে দেন। ঘুম থেকে উঠার পর তার উপর থেকে হেরার যাদুর প্রভাব নষ্ট হয়ে যায়। এবার তিনি বুঝতে পারলেন কী ভয়ংকর কাণ্ড তিনি ঘটিয়েছেন।

প্রায়শ্চিত্ত
এমন ঘটনার পর প্রচণ্ড ভয় আর অনুতাপ তাকে চেপে ধরলো। তিনি ভাবলেন, আত্মহত্যাই এই পাপের একমাত্র শাস্তি। কিন্তু বন্ধু থেসেউস তাকে শান্ত করলেন, বললেন, ‘শাস্তি যদি পেতেই চাও, নির্বাসনে যাও।’

বন্ধুর কথা মতো তিনি থিবিস ছেড়ে বিওতিয়ার (Boeotia) রাজা থেস্পিয়াস-এর কাছে গেলেন বিশুদ্ধ হতে। হেলিকন পর্বতে থেস্পিয়াস তাকে বিশুদ্ধ করলেন। এরপর সেখান থেকে আলসিয়াস ডেলফি নামক অঞ্চলে গেলেন। সেখানে দেবতা অ্যাপোলোর মন্দির ছিল। আলসিয়াস অ্যাপোলোর কাছ থেকে জানতে চাচ্ছিলেন, কীভাবে তার কৃতকর্মের প্রায়শ্চিত্ত করা সম্ভব? এসময় হারকিউলিসকে বলা হলো টিরিনসে গিয়ে সেখানকার রাজা ইউরেস্থিউসের সেবা করতে। হারকিউলিসকে ওই রাজার অধীনে বারো বছর থাকতে হবে। এই ক’বছরে রাজা যতগুলো কাজ তাকে করতে দেবেন, সবগুলো করতে হবে। বদলে হারকিউলিস পাবেন দেবতাদের মত অমরত্ব!

হারকিউলিস এই বয়ান শুনে ক্ষেপে গেলেন। তিনি মোটেও পছন্দ করতে পারলেন না এই শাস্তি। কারণ ইউরেস্থিউসের বীরত্ব হারকিউলিসের ধারে কাছেও ছিল না। আর নিজে এত বড় বীর হয়ে তার চেয়ে কম বীরত্বের কারও অধীনে কাজ করবেন, সেটা হারকিউলিস মেনে নিতে পারছিলেন না। কিন্তু এই প্রস্তাবের বিপক্ষে যাওয়ার মতো সাহসও তার হলো না, পাছে পিতা জিউস ক্ষেপে যান! তাই একসময় হারকিউলিস ইউরেস্থিউসের অধীনে কাজ করতে গেলেন।

এই সুযোগে তাকে বিভিন্নভাবে ফাঁদে ফেলার চেষ্টা করছিলেন রাজা ইউরেস্থিউস, যেন হারকিউলিস নামের কোনো বীর দুনিয়ার ইতিহাসে না থাকেন, বরং তিনি যেন মরে বিলীন হয়ে যান। এই লক্ষ্যে তিনি একটার পর একটা দুর্ধর্ষ কাজ দিতে থাকেন হারকিউলিসকে, আর একটার পর একটা কাজ থেকে বের হয়ে আসতে পারলেও আবার তাকে মৃত্যু অনিবার্য বা ব্যর্থ হওয়ার কাজ দেয়া হয়।

ইউরেস্থিউস আসলে হারকিউলিসকে দশটি কাজ করতে দিয়েছিলেন। কিন্তু হারকিউলিস যখন কাজগুলো শেষ করলেন, তখন ইউরেস্থিউস দুটো কাজকে মেনে নিলেন না। কাজ দুটো হল– লার্নিয়ার হাইড্রাকে হত্যা, আর অজিয়াস নামক স্থান পরিষ্কার করা। কারণ হাইড্রাকে মারার সময় লোলাউস তাকে সাহায্য করেছিলো। আর অজিয়াস পরিষ্কার করার পর হারকিউলিস মজুরি গ্রহণ করেছিলেন।

এ দুটো কাজের বদলে তাই ইউরেস্থিউস আরও দুটো কাজ হারকিউলিসের ঘাড়ে চাপিয়ে দেন। ফলে মোট কাজের সংখ্যা দাঁড়ায় বারোটি। এই কাজগুলোই পরবর্তীতে 12 labors of Hercules হিসেবে পরিচিতি পায়।

ওই ১২টি কাজ হলো -১) নিমিয়ার সিংহকে হত্যা করা -২) লার্নিয়ার ৯ মাথা বিশিষ্ট হাইড্রাকে হত্যা করা -৩) সেরিনিয়ার হরিণ ধরে আনা -৪) ইরিম্যান্থিয়ার শূকর ধরে আনা -৫) একদিনের মধ্যে অজিয়ার আস্তাবল পরিষ্কার করা -৬) স্টিম্ফেলিয়ার পাখি হত্যা করা -৭) ক্রিট দ্বীপের ষাঁড়কে (যাকে বলা হয় ক্রেটান বুল) ধরে আনা -৮) ডায়োমেডেসের মাদি ঘোড়া চুরি করা -৯) অ্যামাজনদের (বিখ্যাত মহিলা যোদ্ধার দল) রাণী হিপোলিটা-র কোমর বন্ধনী সংগ্রহ করা -১০) গেরিয়ন নামক দানবের গবাদি পশুর দলকে ধরে আনা

বোনাস কাজ দুটো হলো – ১১) হেস্পেরিডিস-এর আপেল চুরি করা -১২) পাতালের অভিভাবক সেরবেরুস-কে ধরে নিয়ে আসা।

হারকিউলিসের কি মৃত্যু হয়েছিল?
হারকিউলিস একসময় ডিয়ানাইরাকে বিয়ে করেন। এক সেন্টর নেসাস ডিয়ানাইরাকে লাঞ্ছিত করতে চাইলে হারকিউলিস তাকে বিষাক্ত তীর দিয়ে আঘাত করেন। মারা যাওয়ার আগে সেন্টর ডিয়ানাইরাকে তার নিজের কিছু রক্ত দিয়ে বলেন যে এই রক্তের ব্যবহারে জাদুবলে হারকিউলিস তাকে ছাড়া অন্য কোনো নারীকে ভালবাসবেন না।

আসলে এটা ছিল নেসাসের চালাকি। ডিয়ানাইরা ওই রক্ত হারকিউলিসের পরিধেয় গাউনে মাখিয়ে দেন। জামাটি পরার সাথে সাথে হারকিউলিসকে ভয়ঙ্কর ব্যথা গ্রাস করলো। দেবতার কাছাকাছি হওয়ায় মৃত্যু তাকে গ্রাস করবে না তিনি তা ভাল করেই জানতেন। তাই তিনি একটি চিতা তৈরি করলেন ও তার উপর বসলেন। চিতায় আগুন জ্বলে উঠলে তাকে স্বর্গে তুলে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে বিয়ে দেওয়া হয় হেরার কন্যা যৌবনের দেবী ‘হিবির’ সাথে।

হারকিউলিসের কাহিনী নিয়ে অ্যানিমেশন মুভি তৈরি হয়েছে। এছাড়া হারকিউলিসকে নিয়ে তৈরি করা হয়েছে তুমুল জনপ্রিয় টিভি সিরিজ। রক অভিনীত হারকিউলিস সিনেমাও রীতিমত ঝড় তুলেছিল বিশ্ব চলচ্চিত্রে।

‘বিডি হারকিউলিস’দের প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু?
এখন প্রশ্ন হচ্ছে- হারকিউলিস যেভাবে অন্যের দ্বারা প্ররোচিত বা যাদুর শিকার হয়ে নিরীহ সন্তানদের হত্যা করলেন, ‘বিডি হারকিউলিস’রা সেভাবে কারও শিকার হবেন বা হচ্ছেন না তো? এছাড়া তারা কি হারকিউলিসের মতো প্রায়শ্চিত্ত করতে আগ্রহী?

এর উত্তর পাওয়া গেছে চ্যানেল আই অনলাইনে প্রকাশিত ‌‘‘গুলিবিদ্ধ লাশে ‘ধর্ষক’ লেখা চিরকুটের রহস্য কী?’’ শীর্ষক প্রতিবেদনে। ওই প্রতিবেদনে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেছেন: কাউকে হত্যা করা সবচেয়ে বড় অপরাধ, যারা এ ধরনের অপরাধ করছে তাদের খুঁজে বের করে প্রচলিত আইনের আওতায় আনতে হবে।

তিনি বলেন: কোন ধরনের অনাকাঙ্খিত মৃত্যুই কাম্য নয়, এই দুটি মৃত্যু স্বাভাবিক নয় অপমৃত্যুও বলা যেতে পারে, এগুলো কাম্য নয়। এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য যারা দায়ী তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে পারলেই অপরাধ প্রবণতা কমে আসবে।

মানবধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করলেও বিষয়টিকে সমাজের জন্য ইতিবাচক মনে করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ও অপরাধ বিশ্লেষক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন।

তিনি চ্যানেল বলেছেন, সমাজ ও রাষ্ট্রের ভেতর ধর্ষণের ঘটনা অসম্ভবভাবে বেড়ে গেছে। কর্মস্থল থেকে শুরু করে বাসে রাস্তায় বাসায় কোথাও কোনো বয়সের নারী নিরাপদ না, দুই থেকে শুরু নয় বছরের বাচ্চা পর্যেন্ত আমাদের সমাজের ধর্ষিত হয়। যে পরিমাণ ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে সেটা তালিকাভুক্ত হয় না। যে পরিমাণ ধর্ষণের আসামি থাকে তাদের দশ ভাগের বিচার হয় আর নব্বই ভাগের বিচার হয় না।

এমন রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক)। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক শীপা হাফিজা বলেছেন এ ঘটনাগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত প্রয়োজন যা প্রকৃত সত্য তুলে আনবে। আমাদের সংবিধান ও মানবাধিকারের মূলনীতি অনুযায়ী যে কোনো মানুষই আইনানুগ উপায়ে বিচার লাভের অধিকার রাখে। এ ধরনের বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড সমাজে ভুল বার্তা প্রদান করে।

‘আশা করছি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়টি দ্রুততার সঙ্গে খতিয়ে দেখবে এবং অপরাধের আইনানুগ শাস্তি প্রদান করবে।’

‘বিডি হারকিউলিস’দের থামানোর উপায় কী?
মানবাধিকারের কথা যতই বলা হোক না কেন, এটাও স্বীকার করতে হবে যে যারা এ হত্যাকাণ্ড পরিচালনা করছে তারা একটা বার্তা দিতে চাচ্ছে যা সমাজের জন্য খুবই ইতিবাচক। হত্যাকাণ্ড কোনভাবেই সমর্থনযোগ্য না হলেও এ ঘটনায় ধর্ষকদের কাছে বার্তা যাচ্ছে যে, এতদিন আইনের মারপ্যাঁচে বিচারে দীর্ঘসূত্রতা হলেও এখন থেকে কেউ যদি ধর্ষণ করো তাহলে পরিণতিটা নির্মম হত্যাকাণ্ডেই হবে।

এটা ঠিক যে, রাষ্ট্রের ভেতর কোনো হত্যাকাণ্ড হলে তার দায়িত্ব রাষ্ট্রের ওপরই বর্তায়। এখন এই হারকিউলিসদের থামাতে উদ্যোগ নিতে হবে রাষ্ট্রকেই। এজন্য যা করতে হবে তা হলো আইনের শাসন নিশ্চিত করা। ধর্ষণসহ অন্যান্য অপরাধের দ্রুত বিচার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তাহলেই আর কারও কথিত হারকিউলিস হয়ে আইন নিজের হাতে তুলে নিতে হবে না। রাষ্ট্র কি এই চিন্তা করছে নাকি অন্যকিছু? নাকি আসলে কিছুই ভাবছে না?

এ বিষয়ে এখনই কিছু না ভাবলে সোশ্যাল মিডিয়ায় সাধারণ মানুষের যে সমর্থন পাচ্ছে এই ‘হারকিউলিস’, তাতে সামনে ভয়াবহ অশনি সংকেতের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।

হারকিউলিস সংক্রান্ত তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া, সুকুমার রায়ের ‘হারকিউলিস’ গল্প এবং ‘Mythology মিথলজি’ নামক ফেসবুক পেজ।

Share