চাঁদপুর ফরিদগঞ্জে বৃহস্পতিবার(২১ মার্চ) সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্তকর্তার কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ (২য় পর্যায়) প্রকল্পে’র পক্ষ থেকে গ্রাম পুলিশদের ত্রৈমাসিক সম্মানী-ভাতা প্রদান করা হয়। ভাতা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আলী আফরোজ।
অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন গ্রাম আদালত বিষয়ক ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর (ডিএফ) নিকোলাস বিশ্বাস এবং প্রকল্পের সহযোগী সংস্থা ব্লাষ্টের উপজেলা সমন্বয়কারী মোঃ দেলোয়ার হোসেন। উল্লেখ্য যে, অনুষ্ঠানে ফরিদগন্জ উপজেলায় প্রকল্পাধীন ১০টি ইউনিয়নের মোট ৭৬ জন গ্রাম পুলিশদের সম্মানী-ভাতা প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আলী আফরোজ বলেন, গ্রাম আদালত সক্রিয়করণে গ্রাম পুলিশদের ভূমিকা আরো জোরদার করতে হবে। প্রকল্পের পক্ষ থেকে এই ভাতা প্রদানের মাধ্যমে গ্রাম পুলিশদের উৎসাহিত করা হচ্ছে যেন তারা গ্রাম আদালতের কাজে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা প্রদান করেন। বিশেষভাবে গ্রাম আদালতের সমন জারী ও আদালতে বিচার-কার্য চলাকালীন মামলার পক্ষদ্বয়কে শপথ পাঠ করানো সহ এজলাস কক্ষের বিচারিক পরিবেশ বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করা।
তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি গ্রাম পুলিশদের বেতন-ভাতা প্রায় দ্বিগুণ করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও অনেক গ্রাম পুলিশ যথাযথভাবে গ্রাম আদালতের জন্য কাজ করেন না। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
প্রধান অতিথি গ্রাম পুলিশদের উদ্দেশ্যে আরো বলেন, গ্রাম আদালতের কাজে কোন রকম অজুহাত দেওয়া যাবে না; কিংবা সমন জারীর নামে মামলার পক্ষদ্বয়দের কাছ থেকে কোন রকম অনৈতিক সুবিধা দাবী করা যাবে না। এ রকম কোন অভিযোগ কোন গ্রাম পুলিশের নামে উত্থাপিত হলে তার বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মনে রাখতে হবে যে, বাংলাদেশ সরকার গ্রামের সাধারণ মানুষ বিশেষ করে দরিদ্র ও অসহায় জনগোষ্ঠীর জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিতে প্রতিটি ইউনিয়নে গ্রাম আদালত স্থাপন করেছে। তাই সরকারের এই মহতি উদ্যোগ সফল করার জন্য আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে।
গ্রাম আদালত বিষয়ক ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর (ডিএফ) নিকোলাস বিশ্বাস বলেন, চাঁদপুর জেলার ফরিদগন্জ, শাহরাস্তি, কচুয়া, মতলব-উত্তর ও মতলব-দক্ষিণ উপজেলায় মোট ৪৪টি ইউনিয়নের ৩২৫ জন গ্রাম পুলিশদের এই প্রনোদনামূলক ভাতা দেওয়া হচ্ছে। প্রতি তিন মাস অন্তর অন্তর এই ভাতা প্রকল্পের পক্ষ হতে দেওয়া হয়। এ পর্যায়ে মোট ২,৬০,০০০ টাকা ভাতা বাবদ প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, প্রতিটি ইউনিয়নে মোট ১০ জন গ্রাম পুলিশ থাকার কথা। এরমধ্যে ৯টি ওয়াডে ৯ জন এবং ইউনিয়ন পরিষদে ১ জন গ্রাম পুলিশ দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু বাস্তবে এখনো অনেক ইউনিয়নে গ্রাম পুলিশের পদ শূন্য রয়েছে।
ডিস্ট্রিক্ট ফ্যাসিলিটেটর (ডিএফ) আরো বলেন, গ্রাম আদালত সক্রিয়করণে গ্রাম পুলিশদের ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। উচ্চতর আদালতে যেমন সরকারের পুলিশ বাহিনী দায়িত্ব পালন করে তেমনি গ্রাম আদালতে গ্রাম পুলিশ দায়িত্ব পালন করবেন। গ্রাম আদালতের ডেকোরাম অর্থ্যাৎ বিচারিক পরিবেশ বজায় রাখার ক্ষেত্রে গ্রাম পুলিশদের বিশেষ দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এর ব্যতয় ঘটলে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়ে। এজন্য প্রকল্পের পক্ষ থেকে এই প্রনোদনা দিয়ে গ্রাম পুলিশদের উৎসাহিত করা হচ্ছে।
করেসপন্ডেট
২২ মার্চ,২০১৯