মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের সশস্ত্র বাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি জেনারেল মুহম্মদ আতাউল গণি ওসমানী ১৯১৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩৪ সালে সিলেট সরকারি হাইস্কুল থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষা পাস করেন এবং ১৯৩৮ সালে আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি লাভ করেন তিনি।
১৯৪০ সালে ব্রিটিশ রাজকীয় বাহিনীতে কমিশন্ড অফিসার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৪২ সালে ওসমানী মেজর পদে উন্নীত হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তিনি বার্মা রণাঙ্গনে ব্রিটিশ বাহিনীর একজন অধিনায়করূপে যুদ্ধ করেন। দেশভাগের পর ১৯৪৭ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে উন্নীত হন।
১৯৫৬ সালে কর্নেল পদে উন্নীত হন এবং আর্মি হেডকোয়ার্টারে জেনারেল স্টাফ ও মিলিটারি অপারেশনের ডেপুটি ডিরেক্টর নিযুক্ত হন। ১৯৬৭ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
আতাউল গণি ওসমানী ১৯৭০ সালে রাজনীতিতে যোগ দেন এবং সত্তরের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার গঠিত হলে ওসমানী বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর প্রধান সেনাপতি নিযুক্ত হন।
স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল পদে উন্নীত হন এবং ১৯৭২ সালে সামরিক বাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর তিনি বঙ্গবন্ধুর মন্ত্রিসভায় মন্ত্রীর দায়িত্ব লাভ করেন। ওসমানী ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে পুনরায় সংসদ সদস্য হন এবং ডাক, তার ও টেলিফোন, যোগাযোগ, জাহাজ চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ ও বিমান চলাচল মন্ত্রী হন।
১৯৭৪ সালের মে মাসে ওসমানী মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন। ১৯৭৫ সালে একদলীয় সরকারব্যবস্থার বিরোধিতা করে তিনি যুগপৎ সংসদ-সদস্য পদ এবং আওয়ামী লীগের সদস্যপদ ত্যাগ করেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর খোন্দকার মোশতাক আহমদ তাকে রাষ্ট্রপতির প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা নিয়োগ করেন।
৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রিয় কারাগারে চার জাতীয় নেতার হত্যাকাণ্ডের পর তিনি পদত্যাগ করেন। ওসমানী ১৯৭৬ সালে জাতীয় জনতা পার্টি নামে একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেন। ১৯৭৮ সালে এবং ১৯৮১ সালে ওসমানী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।
আজীবন অকৃতদার ওসমানী ক্যানসার আক্রান্ত হয়ে লন্ডনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯৮৪ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।
বার্তা কক্ষ
১ সেপ্টেম্বর ২০১৯