Home / জাতীয় / চকবাজারের আগুনের ভয়াবহতা বৃদ্ধি : নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭ ইউনিট
Fire-আগুন
ফাইল ছবি।

চকবাজারের আগুনের ভয়াবহতা বৃদ্ধি : নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের ৩৭ ইউনিট

ঢাকার চকবাজারে একটি বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। সেই ভবন থেকে আগুন ছড়িয়েছে আরও কয়েকটি বহুতল ভবনেও। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট। আগুনে ছোট ছোট বিস্ফোরণ হচ্ছে।

এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত অর্ধশতাধিক মানুষ দগ্ধ-আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে এসেছেন, যাদের মধ্যে অন্তত ১৬ জন দগ্ধ হয়েছেন।

বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দিনগত রাত ১০টা ৩৮ মিনিটে চকবাজারের চুরিহাট্টা এলাকার ওই ভবনে এ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। ভবনটির নিচে কেমিক্যাল কারখানা থেকে আগুন ধরেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ তাৎক্ষণিকভাবে কেউ জানাতে পারেনি।

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স সদর দফতরের অপারেটর জিয়াউর রহমান বাংলানিউজকে জানান, চকবাজার চুরিহাট্টা এলাকায় একটি ভবনে আগুন লাগার পর আরেকটি ভবনে ছড়িয়ে গেছে। আগুন নেভাতে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট।

ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে মিলে আগুন নেভাতে কাজ করছেন স্থানীয়রা। যে যেভাবে পারছেন পানি সরবরাহ করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের আগুন নেভাতে সাহায্য করছেন।

এদিকে, অগ্নিকাণ্ডের কারণে পুরো এলাকা প্রায় অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। তবে আশপাশের এলাকায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের পাশাপাশি উপস্থিত দেখা গেছে পুলিশ ও র‌্যাবের বিপুলসংখ্যক সদস্যকে।।

সর্বশেষ রাত সোয়া ১টার দিকে ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষের কর্তব্যরত কর্মকর্তা মাহফুজ রিবেন বলেন, ভবনটির নিচে গোডাউন রয়েছে। কিন্তু সেটি প্লাস্টিক না কি কেমিক্যাল কারখানা তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। তবে কিছুক্ষণ আগে একটি বিস্ফোরণ হয়ে আগুন পাশের আরেকটি ভবনে ছড়িয়েছে।

তিনি বলেন, আগুনের প্রাথমিক কারণ এখনো জানা যায়নি। হতাহতদের স্থানীয় হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। তবে সংখ্যাটা এখনো নিশ্চিত নয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভবনটির নিচে পাওডারের মার্কেট রয়েছে। এর উপরের ফ্ল্যাটগুলোতে ২০-২২টি পরিবার থাকতো। তাদের সবাইকে নিরাপদে নামানো হয়েছে কি না এখনো নিশ্চিত না।

ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে পানির গাড়ি, ল্যাডারসহ অ্যাম্বুলেন্স নেয়া হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি স্থানীয়রা আগুন নেভাতে সাহায্য করছেন।

এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তারা সর্বপ্রথম একটি গ্যাস সিলিন্ডারের বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পান। সেই সিলিন্ডার থেকেই আগুন ছড়িয়েছে বলে তারা মনে করছেন।

অগ্নিকাণ্ডের পর এখন পর্যন্ত যে দগ্ধ ব্যক্তিরা ঢামেকে ভর্তি হয়েছেন তারা হলেন- রেজাউল (২১), জাকির হোসেন (৫০), সেলিম (৪৫) আনোয়ার (৫০) মোস্তাফিজ (৪০), জাহিদুল (২৮), ইভান (৩০), মাহমুদ (৫৭), রামিম (১২), সালাউদ্দিন (৫০), মোজাফ্ফর হোসেন (৩২) সোহাগ (২৬) সোহান (৩৫) ফজর আলী (২৫), হেলাল (২৫) ও সুজন (৪০)। এদের মধ্যে প্রথম দু’জনের অবস্থা গুরুতর।

যারা আহত হয়েছেন তাদের মধ্যে- আল আমিন (৩৫), কাউছার (৩০), জাহাঙ্গীর (২৩), ছালাম (৩০), রবিউল (৪০), সালাউদ্দিন (৩৪), আনিছুর রহমান (৫০), তানজিল (১৪), রমজানের (১২) নাম জানা গেছে। এদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত আছে।

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, দগ্ধদের কয়েকজনের অবস্থা গুরুতর। জরুরি বিভাগ ও বার্ন ইউনিটে তাদের চিকিৎসা চলছে।

ভিডিও দেখুন-

মনে করিয়ে দিল নিমতলী ট্র্যাজেডি :
২০১০ সালের ৩ জুন নিমতলীর ৪৩/১ নবাবকাটরায় পাঁচতলা বাড়িতে স্মরণকালের অন্যতম ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ঘটনায় হারাতে হয় ১২৩ জনকে। আহত হয় কয়েক শ মানুষ। আপনজন হারিয়ে নিঃস্ব হতে হয় অনেক পরিবারকে। মূলত কেমিক্যাল গোডাউনের আগুনেই ওই দিনের অগ্নিকাণ্ডটি ঘটে। গোডাউনের অতি দাহ্য রাসায়নিক পদার্থের কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে।

পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় চার হাজার কেমিক্যাল গোডাউন, কারখানা রয়েছে। এসব গোডাউন ও কারখানায় বিস্ফোরক ও দাহ্য পদার্থ থাকায় আবাসিক এলাকার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

বার্তা কক্ষ
২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯