Home / চাঁদপুর / বিএনপিমনা প্রার্থী ইব্রাহীম জুয়েলকে নিয়ে দু’মেরুতে নানা আলোচনা
jewel-pic

বিএনপিমনা প্রার্থী ইব্রাহীম জুয়েলকে নিয়ে দু’মেরুতে নানা আলোচনা

আগামি ২৪ মার্চ তৃতীয় ধাপে চাঁদপুরের ৭টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ছিলো প্রার্থীর মনোননয়পত্র যাচাই বাছাইয়ের দিন।

বাছাইয়ে স্বতন্ত্র পদে সদর উপজেলায় বিএনপিমনা প্রার্থী চাঁদপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েলের প্রার্থিতাসহ সদর ৪ চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ করেছেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত ওসমান।

সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জেলা রাজনীতির নানা সমীকরণে স্থানীয় সাংসদ সমর্থিত প্রার্থী নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান এরইমধ্যে নৌকা প্রতীকে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নিরবে ভোটের তারিখ গুনছেন।

বরাববরে মতোই জেলায় রাজনীতির আলোচনা বাইরে থাকা জাপা থেকে অ্যাড. মহসিন লাঙ্গল প্রতীকে মনোনয়ন সংগ্রহ করে নিজের প্রার্থিতা নিশ্চিত করে অন্য প্রার্থীদের গতিবিধি অনুকরণে সোস্যাল মিডিয়ায় নিজের ওয়াল থেকে প্রচারণা চালাচ্ছেন।

চেয়ারম্যান পদে মহাজোটের প্রার্থী নৌকা প্রতীকে নাজিম দেওয়ান ও মাহাজোটের শরীক জাপার প্রার্থী অ্যাড. মহসিনকে জোট রাজনীতির সমিকরণে একে অপরের পরিপূরক ভেবে চলছে রাজনীতির মাঠে আলোচনা। অ্যাড. মহসিন এর আগেও একাধিকবার উপজেলা ও জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে প্রত্যাহার করেছিলেন।

সে হিসেবে আওয়ামী সমর্থিত ভোটারদের চোখে ভোট ফ্যাক্টর প্রার্থী হিসেবে থাকছেন আগ থেকে প্রচারণায় এগিয়ে থাকা জেলা যুবলীগের আহবায়ক স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান পদে আলহাজ্ব মিজানুর রহমান কালু ভূঁইয়া।

এসব সমীকরণের বিপরীতে আওয়ামী বিরোধী শিবির ও বিএনপি-জামায়াতের ভোট মিলিয়ে জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েল চমক দেখাতে পারেন।

জোট তথা দল সমীকরণ কিংবা নেতিবাচক চাপের মুখে নতি স্বীকার করে জাপার লাঙ্গল আর স্বতন্ত্র পদে ইব্রাহীম জুয়েল নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে নৌকার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী জেলা যুবলীগের আহবায়ক কালু ভূঁইয়ার বিপরীতমুখী জয়ের চমক দেখাতে পারেন। এমনটি মনে করছেন আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র।

এদিকে সোস্যাল মিডিয়ায় জেলার ভোটারদের বৃহৎ অংশ প্রকাশ্যে বিএনপি জামায়াতের সমর্থন না করলেও মত প্রকাশে আওয়ামী বিরোধী শিবির হিসেবে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরছেন। ভোট সুষ্ঠ হবে কিান এ নিয়ে সংশয় থাকলেও ভোটারদের বৃহৎ অংশ তরুণ ও বিএনপিমনা প্রার্থী হিসেবে কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েলকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যম ফেসবুকে নানা মন্তব্য করছেন।

সেদিক থেকে ভোটের সমীকরণে ফ্যাক্ট হিসেবে দাঁড়াতে যাচ্ছেন সাবেক এ ছাত্রনেতা। তিনিও স্বতন্ত্র পদে মনোনয়ন ফরম জমা দিয়ে প্রাথমিক পর্ব যাচাইয়ে টিকে গেছেন। এখন নিজ দলের রাজনৈতিক বোদ্ধা ও বন্ধুদের সহায়তায় তৃণমূল পর্যায়ে প্রচারণায় এগিয়ে যাচ্ছেন। মুঠোফোনে তৃণমূল পর্যায়ের সমর্থক ও ভোটারদের মাঝে পাঠাচ্ছেন ক্ষুদে বার্তা। এসবের বাইরেও দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে ভোটের নানা কৌশল আঁটছেন।

তাঁর ঘনিষ্ঠজনরা জানাচ্ছে তরুণ ও নতুন ভোটারদের একটি বৃহৎ অংশ তাকে সমর্থন দিয়ে ভোটের সুযোগ খুঁজছেন। অনেকেই এ প্রার্থীকে ব্যাক্তিগত পর্যায়ে এসে উৎসাহ দিচ্ছেন। ইব্রাহীম জুয়েলের দল বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ফলে পদবীধারী জেলার মূল নেতারা প্রকাশ্যে সমর্থন না জানালেও তার পক্ষে প্রচারণা চালাতে কাউকে নিরুৎসাহিত করছেন না বলে দলের একাধিক সূত্রে জানা গেছে। জেলা পর্যায়ে বিএনপি পদবীধারী ও পদের বাইরে থাকা নেতাকর্মীদের বড় একটি অংশ তার জন্যে তৃণমূল পর্যায়ে নিরবে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।

এ অংশের কয়েকজন শীর্ষ নেতার সাথে কথা বলে জানা যায়, জাতীয় নির্বাচনে ভোট না দিতে পারার ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে উপজেলা নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে দলীয় লোককে জনপ্রতিনিধি হিসেবে বেছে নেয়ার সুযোগ খুঁজছে। এর বাইরেও সদর ইভিএমে ভোট হবে এমন ম্যাসেজ ভোট সুষ্ঠ হওয়ার আশা আকাক্সক্ষা বিরাজ করছে ভোটারদের মাঝে।

এ বিষয়ে কথা বলতে বৃহস্পতিবার কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহীম জুয়েলের সাথ প্রতিবেদকের কথা হয়।

বিএনপি সমর্থন করেও কেনো দলের সিদ্ধান্তের বাইরে নির্বাচনে যাচ্ছেন এমন প্রশ্নে ইব্রাহীম জুয়েল জানান, আমি দীর্ঘদিন ছাত্রদলের রাজনীতি করেছি। তৃণমূল পর্যায়ে আমার অনেক সমর্থক রয়েছে। তাঁরা দলীয় সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে আমাকে স্বতন্ত্র পদে নির্বাচনের উৎসাহ জুগিয়েছেন।

নেতাকর্মী ও ভোটারদের বড় একটি অংশ জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারেনি মামলা হামার শিকার হয়েছে। আমি তাদের খোজ খবর রেখেছি, উপজেলা নির্বাচন প্রশাসন সুষ্ঠভাবে আয়োজন করতে পারলে এসব নেতাকর্মী ও তাঁদের সংশ্লিষ্ট পরিবারের সদস্যরা আমাকে ভোট দিবে।’

ভোটারদের প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে মি. জুয়েল জানান, জাতীয় নির্বাচনে তরুণদের বড় একটি অংশ ভোট দিতে পারেনি। তাদের বিষয়ে আমি আশাবাদী। প্রশাসন নিরপেক্ষ ও আন্তরিক হলে ভোটের পরিবেশ সুষ্ঠ হবে। আর এ সুযেগে তরুণরা ভোট বিপ্লব ঘটাবে। তাই সৃষ্টিকর্তার ওপর ভরসা রেখে জয়ের বিষয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী।

স্টাফ কসেরপন্ডেন্ট
২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯