বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম সমন্ধে ফরিদগঞ্জের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলছে “বঙ্গবন্ধু উৎসব”।
২০২০ সাল গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কতৃক মুজিব বর্ষ ঘোষণা করা হয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে কোমলমতি শিশুদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মকে ছড়িয়ে দিতে ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ এবং বি রিলেটেড টু অডিও ভিজ্যুয়াল এডুকেশন (ব্রেইভ) এর যৌথ উদ্যোগে ব্যাতিক্রমধর্মী বঙ্গবন্ধু উৎসব নামক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানটি সমন্ধে অবহিত হওয়ার পর সরকারের পরিকল্পনা সচিব মোঃ নুরুল আমিন বঙ্গবন্ধু উৎসব পরিদর্শন করেন।
তিনি বলেন, ” এটি একটি চমৎকার এবং প্রশংসনীয় উদ্যোগ। কোমলমতী শিশুদের মাঝে বঙ্গবন্ধুকে ছড়িয়ে দিতে বঙ্গবন্ধু উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে জেনে আমি বেশ খুশি হয়েছি। শিশুদের বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে জানা উচিত। বঙ্গবন্ধু কেমন মানুষ ছিলেন সেটা শিশুদের উপলদ্ধি করা উচিত। সোনার বাংলা বিণির্মানে বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, সে স্বপ্ন প্রকৃত অর্থে বাস্তবে রূপ দিতে কোমলমতী এসব শিশুদের মাঝে বঙ্গবন্ধুর জীবনী ছড়িয়ে দেয়ার বিকল্প নেই।”
বঙ্গবন্ধু উৎসবের পৃষ্ঠপোষক, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাড. জাহিদুল ইসলাম রোমান বলেন, ” বঙ্গবন্ধু উৎসব ফরিদগঞ্জে শুধু নয়, পুরো বাংলাদেশেই বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। আমি বিশ্বাস করি বঙ্গবন্ধুকে যদি আমরা তরুন প্রজন্মের মাঝে তুলে ধরতে পারি তবে এই তরুনরাই একেকজন বঙ্গবন্ধু হয়ে দেশ সেবার কাজে মননিবেশ করবে। বঙ্গবন্ধু কেমন মানুষ ছিলেন তা আমরা সবাই জানি। উনি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাননি, উনি বাংলাদেশের মানুষের অধিকার চেয়েছেন।
একজন নির্লোভ মানুষ ছিলেন বঙ্গবন্ধু। জীবনে বহুবার তিনি কারাবরণ করেছিলেন বাংলাদেশের মানুষের অধিকার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে। নিজের পরিবারের কথা চিন্তা করেন নাই। তিনি স্বার্থপর ছিলেন না। তাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবনী আমাদের প্রত্যেকের জানা উচিত। বঙ্গবন্ধুকে হৃদয়ে লালন করা উচিত। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে, আমাদের সকলের উচিত বঙ্গবন্ধুর জীবন থেকে অনুপ্রেরণা নেওয়া।”
ফরিদগঞ্জ উপজেলার ইউএনও আলী আফরোজ বলেন,” বঙ্গবন্ধু উৎসব সম্পর্কে জেনেছি। খুব ভাল একটি অনুষ্ঠান। বঙ্গবন্ধু উৎসবের সফলতা কামনা করছি।”
বঙ্গবন্ধু উৎসবের প্রকল্প সচিব, রিফাত কান্তি সেন বলেন, ” বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানেই বাংলাদেশ। আজ আমরা যে স্বাধীন,সার্বভৌম রাষ্ট্রে বুক ফুলিয়ে বেঁচে আছি সেটা শুধু বঙ্গবন্ধুর কারণেই সম্ভব হয়েছে। দেশ আমাকে কি দিলো সে চিন্তা বড় নয়,আমি দেশকে কী দিলাম সে চিন্তাটাই আমার কাছে বড়। দেশটাকে কতটা দিতে পেরেছি সেটার মধ্যেই লুকিয়ে আছে দেশপ্রেম। ব্যক্তিগত ভাবে আমিও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম থেকে বেশ অনুপ্রাণিত হয়েছি।
মানুষের জন্য কিছু করতে পারার মধ্যে যে এক গভীর সুখ লুকিয়ে আছে তা আমি বঙ্গবন্ধু যে ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন বাঙালীর জন্য সেখান থেকেই অনুধাবন করেছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাঝে যে ভাল মানুসিকতা ছিলো সেটিই আমাদের তরুণ প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে।
যদি সাগর দেখতে হয়,তবে কক্সবাজার যেতে হয়,পাহাড় দেখতে হলে পাহাড়ের কাছে যেতে হয়, হাওয়া খেতে হলে নদীর কিনারে যেতে হয়, তেমনি ভাল মানুষ হতে হলে- ভাল মানুষের বই পড়তে হয়,ভাল মানুষের জীবনী পড়তে হয়। আমাদের সেই ভাল মানুষটাই হলেন বাঙালী জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা, মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাই তার জীবনী অবশ্যই আমাদের পড়তে হবে,জানতে হবে,উপলব্ধি করতে হবে।”
অনুষ্ঠানের স্কুল কমিটির সমন্বয়ক,মরিয়ম আক্তার বলেন,” বঙ্গবন্ধু উৎসবের মাধ্যমে আমরা বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম সমন্ধে জেনেছি। অনুষ্ঠানটির মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আমাদের সহপাঠীরা ব্যাপক ধারণা লব্ধ করেছে।”
উৎসবটি প্রথম ধাপে ফরিদগঞ্জের ১৬ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হবে। পাঁচটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধারাবাহিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।
প্রতিষ্ঠান গুলো হলো কড়ৈতলী উচ্চ বিদ্যালয়, পাইকপাড়া ইউজি উচ্চ বিদ্যালয়, খাজুরিয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়, রূপসা আহম্মদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, শোল্লা স্কুল এন্ড কলেজ।
আগামী ২৯,৩০ ও ৩১ অক্টোবর বাসারা উচ্চ বিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধু উৎসবের ধারাবাহিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
প্রতিবেদক : শিমুল হাছান, ২১ অক্টোবর ২০১৯