যেসব বিষয়ে ছোটদের প্রশ্রয় দেবেন না ।
‘ছোট’। শব্দটির মধ্যেই আদুরে একটা ভাব লুকিয়ে আছে। সেই আদরের জন্যই হোক কিংবা বেখেয়ালে হোক, পরিবারের ছোট কিংবা কনিষ্ঠদের বড়রা তেমন গুরুত্বই দেন না। নিজের সন্তান, ভাগনে-ভাস্তে কিংবা বয়সে ছোট ভাই-বোনদের সঙ্গে প্রায়ই মনের ভুলে নেতিবাচক আচরণ দেখাই। আর এতে তাদের মনের ওপর যে প্রভাব পড়ে, তার ছাপ কিন্তু আজীবনই থেকে যায়। ব্র্যাকের মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এ্যানি বাড়ৈ বলেন, ‘পরিবারের কনিষ্ঠ সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত নেতিবাচক আচরণ তার মনের ওপর কুপ্রভাব ফেলে। খুব গুরুত্ব দিয়ে ছোটদের সঙ্গে খেয়ালি আচরণ করা উচিত আমাদের। কিছু বিষয় আছে যেগুলোতে কখনোই প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়।’
তার অন্যায়কে প্রশ্রয় দেবেন না
নিজের সন্তানই হোক বা অন্যের সন্তান—সে কোনো অন্যায় করলে সেটা প্রশ্রয় দেবেন না। সে না বুঝে অন্যায় করলে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করুন। ন্যায়-অন্যায় আর লাভ-ক্ষতির দিকটি বুঝিয়ে বলুন।
ভাই-বোনের ঈর্ষাকে নিরুৎসাহিত করুন
বড় ভাই-বোনকে ছোটরা ঈর্ষা করে। উল্টোটাও ঘটে। এ ক্ষেত্রে সে কেন হিংসা করছে তার কারণটি খুঁজে বের করুন। আপনি সময় নিয়ে তাদের সঙ্গে সময় কাটানোর চেষ্টা করুন। নিজেদের বিপক্ষ না ভেবে দলীয় আচরণ যেন শেখে, তার দিকে গুরুত্ব দিন। অভিভাবক হিসেবে কাউকে পছন্দ বা গুরুত্ব না দিয়ে পক্ষপাতহীন আচরণ করুন।
ছিঁচকে চুরি কিংবা হাতটানকে নিরুৎসাহিত করুন
সন্তান কিংবা ছোটরা কোনো কিছু চুরি করলে তা কেন করেছে, তা খুঁজে বের করুন। সাধারণত আগ্রহ কিংবা অপ্রাপ্তি থেকেই চুরির অভ্যাস জন্মে। এ ক্ষেত্রে ছোটদের মারধর না করে বোঝানোর চেষ্টা করুন। বারবার বোঝানোর পরেও চুরির অভ্যাস বন্ধ না হলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।
অন্যকে অবজ্ঞা করা নিরুৎসাহিত করুন
ছোটদের অন্যকে অবজ্ঞা কিংবা অপমান করার আগ্রহ দেখা যায়। এ ক্ষেত্রে অন্যকে সম্মান দেওয়া, পারস্পরিক মূল্যবোধ আর সামাজিক রীতিনীতিগুলো জানিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করুন। ছোটবেলায় এমন অভ্যাস গড়ে উঠলে, বড় হলে সেই মানুষটি কিন্তু অধৈর্যশীল আর অসহিষ্ণু মানুষ হিসেবে গড়ে উঠবেন।
অসততাকে প্রশ্রয় দেবেন না
অসততা আর অন্যের ক্ষতি হয় এমন সব কাজ সম্পর্কে পরিবারের ছোটদের সচেতন করে তুলুন।
বৈষম্যকে এড়ানোর চেষ্টা করুন
আমরা বড়রা সামাজিক শ্রেণি অনুসারে মানুষের সঙ্গে আচরণ করি। শ্রমজীবী রিকশাওয়ালা কিংবা ক্যানটিন বয় কিংবা বাসার কাজের মানুষটিকে ছোটদের সামনেই কটু কথা বলি। এসব নেতিবাচক আচরণে ছোটরা উৎসাহিত হয়ে নিজেই চর্চা করে। নিজে এসব কাজে বিরত থাকুন, ছোটদেরকে বৈষম্যহীন মনোভাবাপন্ন করে তুলুন।
ঘ্যানর-ঘ্যানরের অভ্যাস পরিহার করুন
ছোটরা কিছু না পেলে আবদার করবেই, কিন্তু সেই আবদার পূরণ না হলেই বাধে বিপত্তি। ছোটরা কিছু না পেলে সারাক্ষণই আপনাকে বিরক্ত করতে থাকবে। এ ক্ষেত্রে কেন ছোটদের তার চাওয়া জিনিসটি দিচ্ছেন না, তা বুঝিয়ে বলুন। আবার সন্তানের পড়াশোনা কিংবা টেলিভিশন দেখা নিয়ে সারাক্ষণ কথা শোনাবেন না। আপনার ঘ্যানর-ঘ্যানর আর অনবরত কথার চাপ সন্তানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
শেখাতে যাবেন না কিছুই
সন্তানকে পরামর্শ দেবার চেয়ে সচেতনতা যেন বিকশিত হয়, তার দিকে গুরুত্ব দিন। পরামর্শ ছোটরা পছন্দ করে না, তাকে বুঝিয়ে নেতিবাচক দিকটি তুলে ধরুন। সন্তানকে জোর করে কিছু শেখাবেন না, এতে বেশির ভাগ সময়েই সন্তানের বিগড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। ব্রাইটসাইড অবলম্বনে জাহিদ হোসাইন খান
নিউজ ডেস্ক : আপডেট, বাংলাদেশ সময়১১:৩৫ এ.এম, ২৬ এপ্রিল ২০১৭,বুধবার
ইব্রাহীম জুয়েল