আমাদের দেশে ইদানিং স্থুলতা মারাত্মক সমস্যায় রূপ নিচ্ছে। উচ্চতা অনুসারে সবারই একটা নির্দিষ্ট ওজন থাকতে হয়। সাধারণভাবে স্বাভাবিক ওজনের চেয়ে ১০ ভাগ ওজন বেশি হলে তাকে স্থুলতা বা ওবেসিটি বলা যায়।
কারো ওজন হওয়া উচিৎ ৬০ কেজি, তাঁর যদি ৬৬ কেজির চেয়ে ওজন বেশি হয় তাকে আমরা স্থুলতা বলা যায়। স্থুলতার জন্য বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়। এ ছাড়াও স্থুলতার জন্য বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগ ও জটিলতা দেখা দেয়। স্থুলতা একটি রোগ। পুরুষদের চেয়ে নারীরা স্থুলতায় ভোগেন বেশি। ওজন কমালে মৃত্যু ঝুঁকিও কমে।
স্থুলতা একটি নিয়ন্ত্রণযোগ্য সমস্যা। স্থুলতার সঙ্গে বিভিন্ন রোগের সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। যেমন: হৃদরোগ, হার্ট অ্যাটাক, উচ্চ রক্তচাপ, হার্ট ফেইলিওর, উচ্চ কোলেস্টেরল, ডায়াবেটিস, মেয়েদের মাসিকের সমস্যা,পলিসিস্টিক ওভারি, বন্ধ্যাত্ব,গর্ভকালীন জটিলতা, ভ্রূণের মৃত্যু, স্ট্রোক, মাইগ্রেইন, কোমর, হাঁটু ও পায়ে ব্যথা, পা ফুলা থাকা, বগলের নিচে ও ঘাঢ়ে কালচে দাগ পরা, লিভারে চর্বি জমে যাওয়া, এসিডিটির সমস্যা, ঘুমের মধ্যে শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা ও নাক ডাকা, এজমা, পুরুষের যৌন ক্ষমতা হ্রাস, প্রস্রাব আটকে রাখতে না পারা, পুং লিঙ্গ ছোট থাকা, কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া, খাদ্যনালীসহ শরীরে বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধিসহ আরও অনেক রোগ ও জটিলতা দেখা দিতে পারে।
স্থুলতার কারণ
অধিক খাদ্য গ্রহণ, কায়িক পরিশ্রম না করা, বংশগত কারণ, কিছু কিছু হরমোন জনিত কারণে, কোনো কোনো ওষুধ জনিত কারণে এবং কখনও কখনও মানসিক সমস্যা থেকেও স্থুলতা হতে পারে।
স্থুলতা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব। এ জন্য খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা যেতে পারে, কায়িক পরিশ্রম ও ব্যায়াম করতে হবে, কম ক্যালোরির খাদ্য গ্রহণ করতে হবে, চর্বি ও চিনিযুক্ত খাদ্য গ্রহণ কমাতে হবে বা বিরত থাকতে হবে, আঁশ যুক্ত খাদ্য বেশি খেতে হবে।
এ ছাড়াও চিকিৎসকের পরামর্শমতে ওজন কমানোর ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।
ব্যায়ামের উপকারিতা
রক্তে অক্সিজেনের প্রবাহ বৃদ্ধি পায়, মাংসপেশিতে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়, শরীরের শক্তি বৃদ্ধি পায়, চর্বির পরিমাণ কমে, স্থুল ব্যক্তির ওজন কমতে সাহায্য করে, রুগ্ন ব্যক্তির স্বাস্থ্য ভালো হতে সাহায্য করে, রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিক থাকে, রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে, রক্তের কোলেস্টেরল স্বাভাবিক মাত্রায় থাকে, কর্মক্ষমতা বাড়ে, ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমে ও মৃত্যু ঝুঁকি কমে।
যারা কোমরের ব্যাথায় বা পায়ের সমস্যার জন্য ব্যায়াম করতে পারেন না, তারা চেয়ারে বসে বা বিছানায় শুয়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করতে পারেন।
শিশুদের স্থুলতা
২ বছর বয়সের পর থেকেই শিশুদের স্থুলতা আছে কিনা সেদিকে নজর দিতে হবে। শিশুদের স্থুলতাকে প্রথম থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে ভবিষ্যতে বিভিন্ন সমস্যায় আক্রান্ত হবে । (ডা.এম.মঞ্জুর আহমেদ, নয়াদিগন্ত)
নিউজ ডেস্ক
: আপডেট, বাংলাদেশ সময় ০৭: ০০ পিএম, ০৪ মার্চ ২০১৭, শনিবার
এজি/ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur