Home / আন্তর্জাতিক / যুক্তরাষ্ট্রে ৩৭ ইলেক্টোরাল পাল্টে দিচ্ছেন নির্বাচনের ফল!
যুক্তরাষ্ট্রে ৩৭ ইলেক্টোরাল পাল্টে দিচ্ছেন নির্বাচনের ফল!

যুক্তরাষ্ট্রে ৩৭ ইলেক্টোরাল পাল্টে দিচ্ছেন নির্বাচনের ফল!

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল সবার জানা। তারপরও কি কোনো নাটকীয় কিছু ঘটবে! ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের প্রতিনিধিরা পাল্টে দেবেন নির্বাচনের ফল!

পপুলার ভোটের ওপর নির্ভর করে তারা হিলারি ক্লিনটনকেই বেছে নেবেন! নাকি ডনাল্ড ট্রাম্পই যথারীতি প্রেসিডেন্ট থাকছেন!

এ বিষয়ে নিশ্চিত করে জানা যাবে আগামী ৩রা জানুয়ারি। আপাতত আজ ১৯শে ডিসেম্বর, সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দেবেন ইলেক্টোরালরা।

তারা আজ (১৯ ডিসেম্বর) যার যার রাজ্যে ইলেক্টোরাল ভোট দেবেন। তার আগে কিছু হিসাব কষতে বসে গেছেন রাজনৈতিক বোদ্ধারা। বেশ কিছু ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট প্রতিনিধি এ ভোটে ট্রাম্পের পক্ষ ত্যাগ করতে পারেন।

তাদের সংখ্যা ৩৭ বা ৩৮। যদি এসব ইলেক্টোর ট্রাম্পকে বাদ দিয়ে হিলারিকে ভোট দেন তাহলে হিলারির ভাগ্য খুলে যাবে। ৩৮ জন ইলেক্টোর তাকে ভোট দিলে তিনি অর্জন করতে পারেন ২৭০ ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট। আর তা হলে ট্রাম্প নন, হিলারিই হতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট।

আজকের ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের ফল জানা যাবে আগামী ৩রা জানুয়ারি। এদিন ফল ঘোষণা করবে কংগ্রেসের জয়েন্ট সেশন বা যৌথ অধিবেশন। সেদিনই নিশ্চিত করে বলা যাবে যুক্তরাষ্ট্রে এবারের বহুল আলোচিত নির্বাচনের ফল উল্টে যাবে কিনা। বলা হচ্ছে, যদি হিলারিকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ঘোষণা করা হয় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে এমন এক বিশৃঙ্খলা দেখা দিতে পারে যা ১৪০ বছরের মধ্যে দেখা যায়নি।

৮ই নভেম্বরের নির্বাচনে ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের হিসাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রিপাবলিকান ডনাল্ড ট্রাম্প। নিয়ম অনুযায়ী আগামী ২০শে জানুয়ারি তার শপথ। কিন্তু তিনি যে ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটে জিতেছেন তাদের অনেকে তার দিক থেকে আজ মুখ ঘুরিয়ে নিতে পারেন।

অর্থাৎ তাকে ভোট বা সমর্থন নাও দিতে পারেন। এসব ইলেক্টোর যদি ডেমোক্রেট হিলারি ক্লিনটনকে ভোট দেন তাহলে কি পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে! বিশ্লেষণে বলা হচ্ছে, যদি এমনটাই হয় তাহলে হিলারি ক্লিনটনও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে যেতে পারেন। নির্বাচনে ভোটাররা ভোট দিলেও তাদের ভোট প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সরাসরি কাজে আসে না।

কারণ, কোনো রাজ্যে যেসব ইলেক্টোর আছেন সেই রাজ্যে যে প্রার্থী সবচেয়ে বেশি ভোট পান তিনিই সব ইলেক্টোর পান। ধরে নেয়া হয় ওই ইলেক্টোররা বিজয়ী প্রার্থীকেই ভোট দেবেন। গণ্ডগোলটা এখানেই। আসলেই কি ইলেক্টোররা ওই প্রার্থীকে ভোট দেবেন কিনা তা নিয়ে এবার এক গোলকধাঁধা সৃষ্টি হয়েছে।

এ হিসাবের ফয়সালা হয়ে যাবে আজ ১৯শে ডিসেম্বর। এদিন ইলেক্টোররা স্ব স্ব রাজ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আনুষ্ঠানিকভাবে ভোট দেবেন। তারা ভোট দেবেন প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর পক্ষে বা বিপক্ষে। এক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের মোট ৫৩৮ জন ইলেক্টোর ভোট দেবেন।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ডনাল্ড ট্রাম্প যখন তার মন্ত্রিপরিষদ ও এজেন্ডা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন তখন সিএনএন বলছে, আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি কিন্তু এখনো প্রেসিডেন্ট নন। তার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন ৩১ কোটি ৮০ লাখ মানুষের প্রতিনিধি ৫৩৮ জন ইলেক্টোর।

এটাই যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের একটি বৈশিষ্ট্য। আজ প্রতিটি রাজ্যে ইলেক্টোররা তাদের প্রেসিডেন্ট বেছে নেবেন। এ ভোটে ডেমোক্রেটরা পপুলার ভোটের কারণে হিলারিকে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। কিছু রিপাবলিকান ইলেক্টোরকে ট্রাম্পের প্রতি আনুগত্যহীন বলে জানানো হচ্ছে। ডেমোক্রেট ও রিপাবলিকান উভয় শিবিরেই রয়েছে ট্রাম্পবিরোধী একটি প্রচারণা। ফলে কি ঘটবে চূড়ান্ত বিচারে তা এখনই বলা কঠিন। তবে এক্ষেত্রে তিনটি ঘটনার অবতারণা হতে পারে।

ঘটনা-১: ৮ই নভেম্বরের নির্বাচন অনুযায়ী যদি ইলেক্টোর পান ট্রাম্প অথবা কমপক্ষে ২৭০টি ইলেক্টোর পান তিনি, তাহলে সরকারিভাবে তিনিই হবেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট। যদিও এর অন্যথা হওয়ার আশঙ্কা কম।

ঘটনা-২: যদি কমপক্ষে ৩৭ জন ইলেক্টোর ট্রাম্পের পক্ষ ত্যাগ করেন অথবা ট্রাম্প-হিলারি উভয়কে ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকেন এবং তাতে কোনো প্রার্থীই কমপক্ষে ২৭০টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট না পান, তাহলে বিষয়টি গড়াবে কংগ্রেসে। এ সময় প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কংগ্রেসকে বেশ বেগ পেতে হবে। তখন আবার শুরু হবে কংগ্রেসেই ভোটাভুটি। তার আবার নিয়ম আলাদা।

ঘটনা-৩: যদি ট্রাম্পের পক্ষ ত্যাগ করে কমপক্ষে ৩৭ জন ইলেক্টোর হিলারিকে ভোট দেন তাহলে তিনিই হবেন যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট।

এসব ঘটনাক্রম নিয়ে এখানে সংক্ষিপ্ত আকারে বর্ণনা করা হলো- নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিন যুক্তরাষ্ট্রের কমপক্ষে ১৩ কোটি ৬০ লাখ মানুষ ভোট দিয়েছেন। তাতে পপুলার ভোটে ট্রাম্পের চেয়ে প্রায় ৩০ লাখ ভোট বেশি পেয়েছেন হিলারি। কিন্তু ইলেক্টোরাল কলেজ ভোটের হিসেবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন ডনাল্ড ট্রাম্প।

৮ই নভেম্বরের ওই নির্বাচনের ফল হিসেবে ট্রাম্প ৩০৬টি ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট পেয়েছেন বলে প্রজেকশনে বলা হয়। কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে তাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে হলে ১৯শে ডিসেম্বর কমপক্ষে ২৭০টি ইলেক্টোরাল ভোট পেতে হবে। এই ভোট গণনা ও ফল প্রকাশ করবে কংগ্রেসের জয়েন্ট সেশন বা যৌথ অধিবেশন।

আগামী ৩রা জানুয়ারি এ ফল প্রকাশ হবে ওই অধিবেশনে। এতে যদি ফল অন্যথা হয় তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে এক মারাত্মক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। বলা হচ্ছে, কমপক্ষে ১৪০ বছরের মধ্যে দেখা যায় নি এমন এক বিশৃঙ্খলায় চলে যেতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। ডিস্ট্রিক্ট অব কলম্বিয়া ও ৪৮টি রাজ্যে যে প্রার্থী বেশি পপুলারিটি ভোটে বিজয়ী হন এগুলোর সব ইলেক্টোর তাকেই দেয়া হয়।

এটা ‘উইনার টেক অল’ বা বিজয়ী প্রার্থীই সব ইলেক্টোর পাবেন পদ্ধতি নামে পরিচিত। তবে মেইনে ও নেব্রাস্কা এ দু’রাজ্য পরিচালিত হয় ‘ডিস্ট্রিক্ট সিস্টেমে’। এখানকার ইলেক্টোরাল ভোটগুলো রাজ্যজুড়ে ভোট ও প্রতিটি কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্ট হিসেবে পেয়ে থাকেন প্রার্থী। তবে এ যাবৎকালের মধ্যে প্রথমবারের মতো মেইনের ইলেক্টোরাল কলেজ ভোট বিভক্ত হয়ে গেছে। এখানকার তিনটি ইলেক্টোর ভোট পাবেন হিলারি ও ট্রাম্প পাবেন একটি ভোট। কারণ, দ্বিতীয় কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্টে ট্রাম্প বিজয়ী হয়েছেন।

৮ই নভেম্বরের নির্বাচনের ফল অনুযায়ী হিলারি ২৩২টি ইলেক্টোরাল ভোট পাবেন। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার জন্য তার প্রয়োজন কমপক্ষে ২৭০টি ভোট। অর্থাৎ সেই সংখ্যা অর্জন করতে হলে তার প্রয়োজন আরো ৩৮টি ভোট। ফলে তার ভাগ্য কি হবে তা নির্ধারণ হয়েই গেছে। কিন্তু যেমনটা শোনা যাচ্ছে যদি তাই হয় তাহলে কি হবে ফল!

শোনা যাচ্ছে কয়েক ডজন ইলেক্টোর ট্রাম্পের ওপর থেকে তাদের সমর্থন প্রত্যাহার করবেন। ৩৮ জন ইলেক্টোর ট্রাম্পকে বর্জন করে ভোট দেবেন হিলারিকে। আর এর মধ্য দিয়ে তারা হিলারিকে পৌঁছে দেবেন ২৭০ ম্যাজিক নাম্বারে। তবে তা হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ, বেশির ভাগ রাজ্যেই ইলেক্টোররা দলীয় আনুগত্য দেখিয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে ভোট দিয়ে থাকেন। তাই হয়তো তারা ট্রাম্পকে ত্যাগ করবেন না।

তবে পপুলার ভোটে বিজয়ী প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেয়া থেকে বিরত রাখার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে বা ফেডারেল আইনে কিছু বলা নেই। দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট না দেয়ার ক্ষেত্রে ২৯টি রাজ্যে কোনো আইন নেই। যদি কোনো ইলেক্টোর নিয়ম ভঙ্গ করে অন্য প্রার্থীকে ভোট দিয়ে দেন তাহলে শাস্তি হিসেবে তার জরিমানা হতে পারে।

অথবা তাকে সরিয়ে দিয়ে অন্য ইলেক্টোর আনার হুমকি দেয়া হতে পারে। কিন্তু এ নিয়ম অনুসরণ করার ঘটনা বিরল। যদি কোনো ইলেক্টোর স্বেচ্ছায় জরিমানা দিতে চান এবং তিনি বিদ্রোহ করে পক্ষ ত্যাগ করতে চান তাকে আটকাতে পারে না রাজ্য। ফলে এমন ইলেক্টোরকে বলা হয় ‘ফেইথলেস’।

যদি এমন ঘটনা ঘটেই যায় তাহলে কি হবে! যদি তারা ট্রাম্প বা হিলারি কাউকেই কার্যত বেছে না নেন এবং কেউই ২৭০টি ইলেক্টোর না পান তাহলে কি ঘটবে!

এক্ষেত্রে বিষয়টি গড়াবে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে। এ অবস্থায় কংগ্রেস কোনো প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণা করতে পারবে না। যদি ঘটনা তা-ই হয় তাহলে সিনেট যাকে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নেবে তিনিই হবেন যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট। সিনেটে কমপক্ষে ৫১টি ভোট পেলেই একজন প্রার্থী হবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং এক্ষেত্রে তিনিই হবেন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট।

তবে এ প্রক্রিয়াটি এত সহজ নয়। বিষয়টি কংগ্রেসে গড়ালে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দুটি প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়। প্রথমে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রতিটি রাজ্যের আকার, আকৃতি বিবেচনায় না নিয়ে প্রতিনিধি দল রাজ্যের পক্ষে একটি ভোট দেয়ার অধিকার পান।

অর্থাৎ একটি রাজ্য একটি ভোটাধিকার পায়। তখন ইলেক্টোররা ভোট দেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে। যদি এ নির্বাচনে কংগ্রেসে কোনো প্রার্থী ২৬টি বা তারও বেশি রাজ্যের ভোটে বিজয়ী হন তাহলে তাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়। এক্ষেত্রে ডনাল্ড ট্রাম্প বা হিলারি ক্লিনটন যে কেউ প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারেন।

তবে যদি কমপক্ষে ২৬টি রাজ্যের প্রতিনিধির ভোট না পান কোনো প্রার্থী তাহলে বার বার একই পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ করা হবে। ২০শে জানুয়ারির পূর্ব পর্যন্ত এ পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। প্রতিবারই যদি একই ফল দেখা দেয় সেক্ষেত্রে নতুনভাবে নির্বাচিত ভাইস প্রেসিডেন্টই হবেন ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট।

আবার এই ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন পদ্ধতি একটু আলাদা। কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ব্যর্থ হলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মতো ভাইস প্রেসিডেন্ট পদটিও কংগ্রেসের সিনেটে ভোটে দেয়া হয়। এ ভোটে যে প্রার্থী কমপক্ষে ৫১টি ভোট পান তিনিই ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

কিন্তু যদি দু’প্রার্থীই সমান সমান ভোট পান তাহলে নতুন আরেকটি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। তখন কে হবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট তা নিশ্চিত করবেন বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তার তখন একটি ভোট থাকবে। তিনি যে প্রার্থীর পক্ষে ভোট দেবেন তিনিই হবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট।

এক্ষেত্রে রিপাবলিকান মাইক পেন্স বা ডেমোক্রেট টিম কেইন- দু’জনেরই সমান সুযোগ থাকবে। তাই শেষ পর্যন্ত কি ঘটে তা জানতে অপেক্ষা করতে হবে ৩রা জানুয়ারি পর্যন্ত। (মানবজমিন)

নিউজ ডেস্ক ।। আপডটে, বাংলাদশে সময় ১১ : ০০ এএম, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬ সোমবার
এইউ

Leave a Reply