Home / উপজেলা সংবাদ / মতলব উত্তর / শিক্ষকের মুক্তি দাবি করায় মতলবে ছাত্রীদের ‘অবরূদ্ধ’ রেখে ‘ভয়ভীতি’
শিক্ষকের মুক্তি দাবি করায় মতলবে ছাত্রীদের ‘অবরূদ্ধ’ রেখে ‘ভয়ভীতি’

শিক্ষকের মুক্তি দাবি করায় মতলবে ছাত্রীদের ‘অবরূদ্ধ’ রেখে ‘ভয়ভীতি’

‘শ্লীলতাহানির’ অভিযোগে আটক গণিত বিষয়ের শিক্ষককের মুক্তির দাবিতে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায় ফরাযীকান্দি নেদায়ে ইসলাম ফাযিল মহিলা মাদ্রাসা ছাত্রীরা বুধবার (২৪ আগস্ট) বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন ও ক্লাশ বর্জন করেছে।

এ সময় তাদেরকে ‘প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ একটি রুমে আটকে রেখে জঙ্গি বলে পুলিশ ধরিয়ে দেয়ার হুমকি’ দেয়ার অভিযোগ করেছেন ছাত্রীরা।

শিক্ষার্থীদের একাধিক সূত্রে জানাগেছে, ‘আটক শিক্ষকের মুক্তির দাবিতে ক্লাস বর্জন করে অধ্যক্ষের অফিস কক্ষের সামনে বিক্ষোভ করে। এ সময় অধ্যক্ষ কয়েকজন শিক্ষার্থীদেরকে ভয় দেখিয়ে একটি কক্ষে অবরূদ্ধ করে রাখে।’

অবরুদ্ধ শিক্ষার্থী বিষয়টি মুঠোফোনে অভিভাবকদেরকে জানালে পরিস্থিতি আরো গোলাটে হয়।

আলিম দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী সোনিয়া আক্তার অভিযোগ করেন, ‘আমাদের গণিতের শিক্ষক আল-আমিন স্যারকে ষড়যন্ত্র করে জেলে দেওয়া হয়েছে। আমরা আমাদের প্রিয় শিক্ষকের মুক্তি চাই। অধ্যক্ষের কাছে আমরা স্মারকলিপি দিয়েছি। আমরা ক্লাস বর্জন ও বিক্ষোভ মিছিল করায় প্রধান শিক্ষক আমাদের আটকে রেখে পুলিশে ধরিয়ে দিবে এবং টিসি দিয়ে মাদ্রাসা থেকে বের করে দিবে বলে হুমকি দেয়।ৎ

দশম শ্রেণির ছাত্রী নাছিমা আক্তার ও সারমিন আক্তার অভিযোগ করেন , ‘অধ্যক্ষ মহোদয় জোরপূর্বক আমাদের একটি কক্ষে আটকে রাখে। আন্দোলন করলে পুলিশে দেবার ভয় দেখায়।’

তারা আরো অভিযোগ করেন, মাদ্রাসার পিয়ন ও কেরানীকে দিয়ে আমাদের মারার জন্য বেত আনতে পাঠায়। আমাদের মহিলা জঙ্গি বলে মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে।’

শিক্ষার্থীরা আরো জানায়, গণিত শিক্ষক জেল থেকে ফিরে না আসা পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরবে না।

এব্যাপারে দু’ছাত্রীর অভিভাবক নবীর হোসেন মোল্লা চাঁদপুর টাইমসকে জানান, ‘আমার দুই মেয়ে এই মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে। মোবাইলে খবর পেয়েছি তাদের রুমে আটকে রেখেছে। আমি এসে দেখি সকল ছাত্রীরা অধ্যক্ষের অফিস কক্ষের সামনে হট্টগোল করছে। কোন ভাবেই অধ্যক্ষ ছাত্রীদেরকে রুমে আটকে রাখতে পারেননা।’

অভিযোগের বিষয়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. শহীদুল্লাহ চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করেছে ঠিক। কিন্তু তাদেরকে কোন কক্ষে আটকে রাখা হয়নি। তারা কোন বিষয়ে আন্দোলন করছে তা জানার জন্য আমার কক্ষে ডেকেছিলাম। এবং তাদের নাম ঠিকানা লিখে রেখে অভিভাবকদের বিষয়টি অবহিত করেছি।’

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কাজী আব্দুল ওয়াহীদ মো. সালেহ চাঁদপুর টাইমসকে বলেন, ‘এ বিষয়টি আমার জানা নেই। আমি বিষয়টি জানার চেষ্টা করছি। এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।’

আটক শিক্ষকের বিষভয়ে তিনি বলেন, ‘যে শিক্ষক আটক হয়ে জেলে আছেন, তার মামলা আদালতে বিচারাধীন। আমি বিচারাধীন মামলা নিয়ে কোন কথা বলতে চাইনা।’

প্রসঙ্গত, গত ৮ আগষ্ট এক শিক্ষার্থীকে ‘শ্লীলতাহানির’ অভিযোগে মাদ্রাসার গণিত বিষয়ের শিক্ষক আল-আমিনকে আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। সে এখন জেলহাজতে রয়েছে ও মামলা বিচারাধীন।

ছাত্রীদের দাবি ওই শিক্ষককে ষড়যন্ত্র করে জেলে পাঠানো হয়েছে, তার মুক্তির দাবীতে ক্লাস বর্জন ও বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।

এ সংক্রান্ত আগের প্রতিবেদনটি ক্লিক/টাচ্ করে পড়ুন- মতলবে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগে শিক্ষক গ্রেফতার

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, মতলব উত্তর  :  আপডেট, বাংলাদেশ সময়  ৫:০০ পিএম,  ২৫ আগস্ট  ২০১৬, বৃহস্পতিবার 
ডিএইচ