চাঁদপুর শহরের কাজী নজরুল ইসলাম সড়কে চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সামনের অপর নাম ধরা যায় পাখি পাড়া। এখানে বিগত ক’বছর ধরে পাখিদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। প্রতিদিন বিচিত্র সব পাখিদের কিচিমিচির শব্দ পুরো এলাকা মুখরিত থাকে।
এ পাড়ায় প্রবেশ করতেই শোনা যায় পাখির কিচিরমিচির শব্দ এবং নাকে লাগবে পাখির বিষ্ঠার উৎকট গন্ধ। চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সামেন এবং জেলা প্রশাসকের বাসভবনের গাছগুলোতে এখন বিভিন্ন পাখির অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে।
দেখা গেছে, বিলুপ্ত প্রায় কালো পানকৌরি, সাদা বক, (পাখিদের স্থানীয় নাম) জ্যাটা বক, আম বক, কানি বক, রাতচোরাসহ অন্যান্য পাখিদের সমাগমে ভরে গেছে পুরো সড়ক। প্রায় ৮ থেকে ১০ বছর ধরে এখানকার গাছগুলোতে পাখ-পাখালির অভয়াশ্রম হিসাবে গড়ে উঠেছে। এ পাড়ায় এখন পাখিদের আনাগোনায় মনে হবে পাখিদের মেলা বসেছে।
সকাল-সন্ধ্যা ঝাঁকে ঝাঁকে, দলে-দলে পানকৌরি, সাদা বক, জ্যাট্যা বক, কানি বক, আম বক, রাতচোরাসহ বিভিন্ন প্রকারের পাখি যখন গাছে আসতে থাকে তখন পাখিদের কোলাহলে এলাকাটি মুখরিত হয়ে ওঠে।
আমগাছ, নাগলিঙ্গমসহ বিভিন্ন গাছ-গাছালি যেন ওদের জন্য আলাদা এক স্বর্গরাজ্য ও অভয়াশ্রম। মানুষের সঙ্গে মিতালি তৈরি করে নিরাপদে এতো কাছাকাছি পাখিরা বসবাস করছে, এতে মনে হয় তারা যেন প্রতিবেশী এবং সন্তানের মতো।
এদিকে প্রায় এক বছর আগে পাখিদের বিষ্ঠা রাস্তার প্রবেশ মুখের পথচারিদের গায়ে পড়তে থাকায় তখনকার সময় জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন জানানো হয় রাস্তার পাশের গাছগুলো কেটে ফেলার জন। তখন জেলা প্রশাসক পথচারিদের কথা ভেবে কয়েকটি কাছ কেটে ফেলে। পরে সেখানে থাকা পাখি গুলো হারিয়ে যায়। কমে যায় পাখির কিচিরমিচির শব্দ।
সেখানকার অনেকেই এসব পাখিদের ভালোবাসেন অকৃত্রিমভাবে। সকালে পাখিগুলো উড়ে আহারের জন্য আশপাশে খোলা ডাকাতিয়ার পাড়ে চলে যায়। সন্ধ্যা নামার আগেই দল বেধে ফিরতে শুরু করে। আবার কিছু পাখি দিনভর সেখানেই অবস্থান করে। এ যেন এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। এসময় চার পাশে শুধু পাখিদেরম কোলাহল ও কিচিরমিচির শব্দ। পান কৌরি, বক, রাতচোর পাখিরা বিভিন্ন গাছের চূড়ায় বসে ডানা ঝাপটায়।
আবার গাছের মাথার ওপর দিয়ে দুই-এক চক্কর দিয়ে এসে চূড়ায় বসে। আবার কোনটা গাছের এক ডাল থেকে অন্য ডালে, এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে নির্বিঘেœ উড়ে যেতে থাকে। সন্ধ্যা যত ঘনিয়ে আসে ততই বিভিন্ন গাছের সবুজ পাতাগুলো সাদা বকের রংয়ে সাদা ফুলের মতো দেখায়। সেখানে এক দারুণ দৃশ্য তৈরি হয়।
স্থানীয় ক’জন জানান, ‘আমরা প্রায় ৭ বছর ধরে এসব পাখির বসবাস দেখে আসছি এই এলাকায়। এই পাখিগুলো দেখতে খুব ভাল লাগে। তারা দিনরাত কিচিরমিচির করে। পাখিগুলোর ডাকে আমাদের সকালে ঘুম ভাঙে। আমাদের পাড়া এখন পাখিদের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে। তারা আমাদের কাছে নিকটাত্মীয়ের মতো হয়ে গেছে।’
[author image=”https://chandpurtimes.com/wp-content/uploads/2016/05/Shariful-Islam.jpg” ]প্রতিবেদক- শরীফুল ইসলাম [/author] : আপডেট, বাংলাদেশ সময় ১:৪০ এএম, ২৪ আগস্ট ২০১৬, বুধবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur