জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বলেছেন, ‘সরকারের কাছে আবার আবেদন করি, আসুন সবাই এক সঙ্গে বসি, আলোচনা করি। আলোচনার মাধ্যমে একটা সুরাহা করি। পৃথিবী দেখুক আমরা এক সঙ্গে বসতে পারি।’
শনিবার(১৬ জুলািই) বিকেলে রাজধানীর কাকরাইলে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এরশাদ এসব কথা বলেন।
বক্তব্যের শুরুতে তিনি বলেন, আমরা যারা সংসদ সদস্য আছি, তাদের উচিত জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করা। আমি বলব, সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে।
এরশাদ বলেন, আমি আবার ডাকছি, আহ্বান করছি, আসুন সবাই এক সঙ্গে বসি। পৃথিবীর মানুষ দেখুক, আমরা এক সঙ্গে আছি, এক সঙ্গে সংঘবদ্ধ হয়েছি। এখানে লজ্জা পাওয়ার কিছু নেই। আমাদের মানুষকে বাঁচাতে হবে। মানুষের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে। ব্যবসায়ীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।
তিনি যতদিন পর্যন্ত শান্তি ফিরে না আসবে ততদিন পর্যন্ত জাতীয় পার্টির সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশ চলতে থাকবে। জনগণের কাছে যাব শান্তির বাণী ছড়িয়ে দেব। কিন্তু এটা আমার একার পক্ষে সম্ভব না। এখানে সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে।
সাবেক এ রাষ্ট্রপতি বলেন, আজ সারা বাংলাদেশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতা ভুগছে। মানুষ আতঙ্কিত। এমন বাংলাদেশ তো আমরা চাইনি। আজ কোথাও শান্তি নাই।
তিনি বলেন, ‘যারা সন্ত্রাসী হামলা করেছে, তারা জেএমবি, আনসারুল্লাহ নয়, তারা ইউনিভার্সিটির ছাত্র। সব চেয়ে বিপজ্জনক হচ্ছে, তারা আত্মঘাতী। তারা জীবন দিতে এসেছে। এ ধরনের ঘটনা আগে বাংলাদেশে ঘটে নাই। যারা জীবন দিতে পারে, জীবন নিতেও পারে। আমাদের সরকারকে বুঝতে হবে, কেন শিক্ষিত ছাত্ররা, ধনীর দুলালরা অস্ত্র হাতে নিয়েছে। কী কারণে তাদের মনে অশান্তি সৃষ্টি হলো। কী কারণে তারা এতজন বিদেশিকে হত্যা করল।’
এ জন্য বেকারত্বকেও দায়ী করেন এরশাদ।
তিনি আরো বলেন, ‘যারা বেকার তারা সমাজের বোঝা, পরিবারের বোঝা। সরকারের পক্ষ থেকে কর্মসংস্থানের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। এ কারণে এ ধরনের প্রতিহিংসার মধ্যে ঢুকেছে।’
এরশাদ বলেন, ‘আমি সংসদে বলেছিলাম, আসুন আলোচনা বসি। যেসব লোক শান্তিতে বিশ্বাস করে, সন্ত্রাসে বিশ্বাস করে না। আগুন-জ্বালাও পোড়াওতে বিশ্বাস করে না। তাদের নিয়ে একসঙ্গে বসে আলোচনা করি। এ সঙ্কট থেকে সুরাহা বের করি। এখন পর্যন্ত আমরা বসতে পারিনি। কাজটা করতে হবে সরকারকে। সরকার ভালোভাবে কাজটা করতে পারেনি। আমি বলব-সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।’ এ সময় তিনি তার সময়কার সাফল্যের কথা তুলে ধরেন।
জাতীয় পার্টির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসে বাবলার সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন,
জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেত্রী এবং জাতীয় পার্টির সিনিয়র প্রেসিডিয়াম সদস্য রওশন এরশাদ, কো-চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম সদস্য সাইদুর রহমান টেপা, কাজী ফিরোজ রশিদ, জিয়াউদ্দিন বাবলু, প্রতিমন্ত্রী মশউর রহমান রাঙ্গা প্রমুখ।
নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট ০৬:৩০ পিএম,১৬ জুলাই ২০১৬,শনিবার
এইউ