গৃহবধূ শহরের হোক আর গ্রামের হোক, সবার ক্ষেত্রে বিয়ের পর নামকরণ গৃহবধূ। কিন্তু কাজে গ্রাম আর শহরের মধ্যে অনেকাংশে তফাৎ রয়েছে। গ্রামীন গৃহবধূদের কিছু কষ্টে চিত্র। লিখছেন তাহমিনা তাবাসসুম।
۞ গ্রামের কিষাণবধূ ভোর চারটায় ঘুম থেকে উঠে পুকুর থেকে পানি আনে,
۞ নামাজ সেরে ঘর-উঠান ঝাড়ু দেয়া,
۞ রান্নার জন্য চুলা জ্বালানো,
۞ গরুর খাবার দেয়া,
۞ ধান ঝাড়াই-মাড়াই করা থেকে শুরু করে গোলায় তোলা,
۞ ধানবীজ সংরক্ষণ করা,
۞ খাবারের জন্য শস্য ভাঙানো,
۞ হাঁস-মুরগি প্রতিপালন,
۞ শাকসবজি উৎপাদন এসব করতে করতেই বেলা শেষ হয়ে যায়।
۞ সারাজীবন এভাবেই কাটে কৃষাণীর।
শহরের বউদের কষ্টঃ
۞ কাকডাকা ভোরে ঘুম ভেঙে যায় বউদের।
۞ ঝটপট বিছানা ছেড়ে হাত-মুখ ধুয়ে ছুটতে হয় রান্নাঘরে।
۞ টেবিলে নাস্তা লাগানো,
۞ এক ফাঁকে বিছানা গোছানো,
۞ বাচ্চাকে ঘুম থেকে উঠিয়ে হাত-মুখ ধোয়ানো,
۞ পরিবারের সবাইকে নাস্তা করিয়ে বাচ্চাটিকে স্কুলে যাওয়ার জন্য রেডি করা,
۞ বৃদ্ধ শাশুড়ির প্রতি খেয়াল করা,
۞ স্বামী অফিসে যাবে বলে তার তদারকি করা এসব কিছুই বিরামহীনভাবে তাকে করতে হয়।
۞ তারপর চাকরিজীবী বউদের ছুটতে হয় অফিসের উদ্দেশ্যে।
۞ বাড়ি ফিরে বিকালের নাস্তা তৈরি করে সবাইকে খাওয়ানো,
۞ কার কখন কী প্রয়োজন সবকিছুতে নজর রাখা,
۞ অতিথি এলে সমাদর করা,
۞ বাচ্চাকে পড়ানো,
۞ রাতের খাবার রেডি করে সবাইকে খাওয়ানো।
۞ ঘুমাতে যেতে রাত বারোটা কি একটা বেজে যায়।
۞ এভাবেই নিত্যদিন ঘর ও অফিস সামলিয়ে বিরামহীন পথ চলেন নারীরা।
এত কাজ করার পরেও অনেক পরিবারে বউদের কপালে সুখ থাকেনা। স্বামীর পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন অত্যাচার সহ্য করেই সংসার করতে হয়। সন্তানদের কথা চিন্তা করে সবকিছু হজম করতে হয়। বিশেষ করে গ্রামের বউদের উপর অত্যাচারের মাত্রা একটু বেশীই হয়।
বিবাহিত ভাইদেরকে বলব, শুধুমাত্র টাকা উপার্জন করে দায়িত্ব শেষ মনে না করে অবসর সময়ে বউকে বিভিন্ন কাজে সাহায্য করলে দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর ভালবাসা-একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা-দায়িত্ববোধ আরো বাড়বে।