সদস্য থেকে ট্রিপল প্রমোশন পেয়ে বিএনপির ফরিদপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন । এ নিয়ে দলের সন্তোষ-অসন্তোষ সর্বোপরি নানাভাবে জলঘোলা করা হচ্ছে।
তবে এসব বিষয় মাথায় না নিয়ে হাইকমান্ডের প্রতি কৃতজ্ঞতাই প্রকাশ করেছেন শামা।
সমালোচনা উঠেছে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে তাকে পদায়ন করা হয়েছে। বিরোধীরা বলছেন, ‘সেখানে শামার চেয়ে জ্যেষ্ঠ নেতা বা সাবেক এমপি ছিলেন তাদের কাউকে এ দায়িত্ব দেয়া যেতো। এর জবাবে শামার সমর্থকরা বলছেন, শ্রমে, গুণে, নৈপুণ্যে, দক্ষতায় তিনি তার যোগ্যতা প্রমাণ করতে পেরেছেন, তার ফলস্বরূপ বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে বৃহত্তর ফরিদপুরবাসীর জন্য পুরস্কার। প্রথমবারের মতো বিএনপিতে সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নারী সদস্য রাখা হয়েছে।’
বিএনপির নতুন সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নাম ঘোষণার একদিন পর ১০ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শামার বনানীর বাসায় গিয়ে দেখা গেলো ফরিদপুর বিভাগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তিনি কথা বলছেন। একদল যাচ্ছে, আরেক দল বেরুচ্ছে। ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত শামা নেতাকর্মীদের কথা গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনছেন। নেতাকর্মীরা স্ব স্ব এলাকার সাংগঠনিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি বর্ণনা করছে। উপস্থিত সবাই মিষ্টি মুখ করছেন।
বৃহত্তর ফরিদপুর জেলা নিয়ে বিএনপির ফরিদপুর সাংগঠনিক বিভাগ হচ্ছে। নতুন সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের সঙ্গে কথা হয়।
সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হওয়ায় বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের সকল নেতাদের ধন্যবাদ জানান শামা।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু বৃহত্তর ফরিদপুরের ব্যাপার। আমার বাবাও দীর্ঘদিন ওই এলাকায় রাজনীতি করেছেন। আমার বাবার ইন্তেকালের পর বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সহযোগিতা পেয়েছি। এবং বেগম খালেদা জিয়া আমাকে সর্বাত্মকভাবে রাজনীতি করতে সংগঠন করতে সহযোগিতা করেছেন। অবশ্যই আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
বিএনপির ফরিদপুরের সাংগঠনিক পরিকল্পনা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘নিজের জেলা ফরিদপুরসহ দেশের প্রতিটি জেলা, প্রতিটা উপজেলাই আমি সফর করবো। এমনকি প্রতিটি ইউনিয়নেও আমি সফর করবো। এটা অবশ্যই আমার পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে। শিগগিরই আমি সফরে যাবো। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে দলের নেতাকর্মীরা অনেক ব্যস্ত। সেখানেও সফরে যেতে পারি।’
আওয়ামী লীগের ঘাঁটি গোপালগঞ্জ থেকেও বিএনপির আসন পাওয়া সম্ভব উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সংগঠন যদি ঠিকমতো দাঁড় করানো যায়, শক্তিশালী করা যায়। যে কোনো জেলা থেকেই আন্দোলন সম্ভব। শক্তিশালী সংগঠন করা সম্ভব।’
শামা ওবায়েদ বিএনপির সাবেক মহাসচিব প্রয়াত কে এম ওবায়দুর রহমানের একমাত্র কন্যা। বাবার আদর্শের রাজনীতিক কন্যা শুধু মূল দলেই নয় বিএনপির সহযোগী সংগঠনের মতো গড়ে তুলেছেন জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম দল। রাজনীতির বাইরেও শামার রয়েছে বিচরণ।
তার কাছে জানতে চাই, রাজনীতির বাইরের মানুষগুলো নতুন পদকে কীভাবে রেস্পন্স করছেন?
জবাবে তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে আপনাদের দোয়ায় ভাল রেসপন্স পাচ্ছি। সবাই আমাকে খুব উৎসাহ দিচ্ছে। বিগত সময় দিয়েছে। যাতে করে আমি ভাল করে কাজ করতে পারি। সুতরাং আমি খুব পজিটিভ রেসপন্স পাচ্ছি।’
বিএনপি তথা রাজনৈতিক দলগুলোতে পদপদবী নিয়ে অনেক অসন্তুষ্টি থাকে। সেক্ষেত্রে আপনি নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন সেখান থেকে সাংগঠনিক সম্পাদক হয়েছেন, বলা চলে আপনার ট্রিপল প্রমোশন হয়েছে। এটা কিভাবে দেখছেন?
শামা বলেন, ‘আমি যখন নির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলাম তখন আমি একটি রাজনৈতিক দলে নির্বাহী কমিটির সদস্যের যে দায়িত্ব কতর্ব্য থাকে তার চেয়ে অনেক বেশি কাজ আমি করেছি। আমার নির্বাচনী এলাকা দেখভাল করা আমার দায়িত্ব। এছাড়াও আমি অনেক কাজ করেছি। আমি বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি, তারেক রহমান সাহেবের প্রতি কৃতজ্ঞ, উনারা ভেবেছেন যে আমার সাংগঠনিক দক্ষতা আছে, আমি এ কাজ করতে পারবো। অনেক ক্ষেত্রে যেহেতু আমার বিচরণ, আমার এডুকেশন ব্যাকগ্রাউন্ড আছে। যেসব ক্ষেত্রে আমি কাজ করি, সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি, সেসব কাজ করে যেতে চাই। আশা করি আমাদের চেয়ারপারসন চাইবেন আমি সে কাজগুলো করে যাই। উনারা ভেবেছেন আমি এ পদের যোগ্য তাই কৃতজ্ঞ।’
||আপডেট: ০৭:৩৮ অপরাহ্ন, ১২ এপ্রিল ২০১৬, মঙ্গলবার
চাঁদপুর টাইমস /এমআরআর