Home / জাতীয় / লঞ্চ দুর্ঘটনা রোধে নতুন ১০ পরিকল্পনা
launch
ফাইল ছবি

লঞ্চ দুর্ঘটনা রোধে নতুন ১০ পরিকল্পনা

চাঁদপুরসহ সারাদেশে যাত্রীবাহী লঞ্চসহ সকল প্রকার নৌ-দুর্ঘটনা রোধে সরকার নতুন করে পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। এগুলো অনেকটা বাস্তবায়নও হচ্ছে।

জাতীয় সংসদে নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান জানিয়েছেন ‘সারাদেশে নৌ-দুর্ঘটনা রোধে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে ১০টি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে’

বৃহস্পতিবার বিকেলে ১০ম জাতীয় সংসদের নবম অধিবেশনে দিলারা বেগমের (মহিলা আসন-২০) এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য জানান।

মন্ত্রী বলেন, ‘২০১৪ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই বছরে শুধুমাত্র যাত্রীবাহী ৭টি লঞ্চ দুর্ঘটনায় ২০৩ মানুষ মারা গেছে। এই দুর্ঘটনা রোধ করতেই সরকারের এমন পরিকল্পনা। যার ফলে নৌ-দুর্ঘটনার হার পূর্বের তুলনায় অনেক হ্রাস পাবে।’

নৌ-দুর্ঘটনা রোধে সরকারের গৃহীত ১০টি কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন মন্ত্রী।

কার্যক্রমগুলো হলো:

১. প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সর্তকতামূলক বিজ্ঞপ্তি প্রচারসহ পোস্টার, ফেস্টুন এবং নদী বন্দর টার্মিনালে মেগাফোনের মাধ্যমে জনসচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।

২. নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, বিআরডব্লিউটিএ এবং সমুদ্র পরিবহন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে টিম গঠন করা হয়েছে, যারা প্রতিনিয়ত ঢাকা বন্দরের টার্মিনালে অধিক যাত্রীবহন রোধসহ লঞ্চে জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামাদিসহ সার্ভে সনদ অনুযায়ী মাস্টার ও ড্রাইভার যথাযথভাবে আছে কি না- তা নিশ্চিত করে থাকে।

এছাড়া ঈদ ও কালবৈশাখী মৌসুমে এ ধরনের টিমের কার্যক্রম বিশেষভাবে জোরদার করা হয়। পাশাপাশি কোনো লঞ্চে অধিক যাত্রী বোঝাই করলে এবং জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম পর্যাপ্ত না থাকলে ঐ লঞ্চের যাত্রা স্থগিত করাসহ নৌ-আদালতে মোকাদ্দমা দায়ের করা হয়ে থাকে এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ব্যবস্থা জোরদার করা হয়।

৩. নৌ-দুর্ঘটনা এড়ানোর লক্ষ্যে সকল নৌ-পথে চলাচলকারী নৌযানে কর্মরত মাস্টার, ড্রাইভার, সুকানী ও আনসারদের জন্য মাঝে মাঝে ঢাকা নদী বন্দরে নৌ-নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট কর্মশালার আয়োজন করা হয়। অন্যান্য বন্দরেও এরূপ কর্মশালারও আয়োজন করা হয়।

৪. নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, আগামী ১৫ মার্চ হতে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত সময়ে ফিটনেস ব্যতীত সকল লঞ্চ উপকূলীয় আংশিক অশান্ত নৌপথে চলাচল বন্ধ রাখা হবে।

৫. নৌ-নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলায় সতর্কতা অবলম্বনের বিষয়ে যাত্রী ও চালকদের পরামর্শ সম্বলিত নৌ-হুঁশিয়ারি লিফলেট কপি ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, চাঁদপুর, বরিশাল, পটুয়াখালী, নরসিংদী, ভৈরব, পাটুরিয়া ও আরিচা নদী বন্দরে বিলি করা হবে।

৬. দেশের বিভিন্ন নৌ-পথে নিরাপদ নৌ-চলাচলের স্বার্থে বিআইডব্লিউটিএ ইতোমধ্যে বয়া, বাতি, মার্কা, বিকনসহ পর্যাপ্ত নৌ সহায়ক যন্ত্রপাতি স্থাপন করেছে এবং এ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

৭. নদীমাতৃক ৪৭টি জেলার জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগকে অবৈধ যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ করার জন্য মোবাইল কোর্ট পরিচালনাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করা হয়েছে। সে অনুযায়ী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।

৮. নদী বন্দরগুলোতে লঞ্চে সহনীয় পর্যায়ে যাত্রী উঠার সঙ্গে সঙ্গে ভয়েজ ডিক্লারেশন রেখে লঞ্চসমূহকে তার নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

৯. প্রতিবছর দেশব্যাপী সাত দিন নৌ-নিরাপত্তা সপ্তাহ পালন করা হয়ে থাকে।

১০. ঈদ, পূজা-পার্বন এবং ইজতেমাসহ উৎসবের দিনগুলোতে অতিরিক্ত যাত্রী বহন পরিহারের লক্ষ্যে স্পেশাল লঞ্চ সার্ভিসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সবশেষে শাজাহান খান বলেন, ‘এই ১০টি কার্যক্রম প্রতিপালন করার কারণে নৌ-দুর্ঘটনার হার পূর্বের তুলনায় অনেক হ্রাস পেয়েছে। আর তাই নৌ-পথে নির্বিঘ্নে যাত্রী পরিবহনে সার্বিকভাবে সরকারের প্রায় শতভাগ সফলতা রয়েছে।’

নিউজ ডেস্ক : আপডেট ০৩:০৭ এএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৬, শুক্রবার
ডিএইচ