চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্ষার পানি শেষে এখানকার কৃষকেরা প্রতিবছরের ন্যায়ে এবারও মিষ্টি কুমড়া উৎপাদন করে আসছে। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে মিষ্টি কুমড়া যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। তবে উৎপাদনের তুলনায় চাহিদা কম থাকায় দাম না পেয়ে এখানকার কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন।
চলতি বছর হাজীগঞ্জ উপজেলায় প্রায় ৩শ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়েছে। এসব মিষ্টি কুমড়া এখন স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে চলে যাচ্ছে,ফেনী, নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলার বাজারে। ছোট থেকে বড় সাইজের প্রতি পিস মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৩০-৭০ টাকায়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার অলিপুর, সাদ্রা, জাকনী, সমেশপুর গ্রামের মাঠজুড়ে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ। তবে এ বছর বর্ষার পানি দেরীতে নামার কারণে জমিগুলো আবাদ একটু দেরিতে হয়েছে। তবে এখন প্রতিটি জমিতেই মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়েছে।
উত্তর অলিপুর গ্রামের কৃষক সাইফুল আলম জানান, আমরা প্রতিবছর বর্ষার শেষ দিকে এসে কচুরিপানা স্তূপ করে রাখি। পানি কমলে ওই কচুরিপানার স্তূপে মাটি দিয়ে লাগানো হয় মিষ্টি কুমড়ার চারা। গত কয়েক বছর এই পদ্ধতিতে মিষ্টি কুমড়া ও লাউ আবাদ করে আসছেন। আবাদের পরে কোন ধরণের প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় ফলন ভাল হয়েছে। এবছর ১০-১২ কেজি মিষ্টি কুমড়া মাত্র ৪০-৬০ টাকা ধরে বিক্রি করতে হচ্ছে। যা আমাদের খরচের সাথে হিসাব মিলছে না।
দক্ষিণ বলাখাল গ্রামের কৃষক মহসিন ও জসিম উদ্দিন জানান, আমরা এ বছর ৬০% জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করেছি। সপ্তাহে দুই দিন মিষ্টি কুমড়া বিক্রি করতে পারছি ।একদিনের উঠানো মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হয় কমপক্ষে ৫০-৮০ হাজার টাকা। শ্রমিকদের নিয়ে জমি থেকে কুমড়া কেটে চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক সড়কে এনে স্তূপ করেন। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা এসব মিষ্টি কুমড়া পাইকারি ক্রয় করে কুমিল্লা,ফেনী,নোয়াখালী, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলার আড়তগুলোতে ট্রাকে করে পাঠিয়ে থাকেন। এছাড়াও স্থানীয় খুচরা ব্যবসায়ীরা আমাদের কাছ থেকে নিয়ে বিক্রি করেন বিভিন্ন জেলার আড়তে।
হাজীগঞ্জ উপজেলা কৃষি হাসিব আব্দুল্লাহ জানান, হাজীগঞ্জ উপজেলায় এ বছর মিষ্টি কুমড়ার আবাদ হয়েছে ২৯০ হেক্টর জমিতে। বেশি আবাদ হয় পৌরসভার বলাখাল, সদর ইউনিয়নের অলিপুর, নদীর দক্ষিণ অঞ্চলের সাদ্রা, রামচন্দ্রপুর,সমেশপুর এলাকায়। আমাদের জনবল কম। তারপরেও প্রতিটি ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মকর্তারা কৃষকদেরকে পরামর্শ দিয়ে আসছেন। মিষ্টি কুমড়ার জমিগুলোতে আমরা এখন কীটনাশক ব্যবহার না করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। জমিতে হলুদ কাগজের মধ্যে আঠা দিয়ে টানানো হয়। এর মধ্যে পোকা মাকড় বসে মারা যায়। এ পদ্ধতিতে আমরা সুফল পাচ্ছি। এ উপজেলার মিষ্টি কুমড়া স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি হয়ে আসছে।
জ হি রু ল ই স লা ম জ য়
৫ ডি সে ম্ব র ২ ০ ২ ৫
এ জি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur