নারায়ণগঞ্জে চাঞ্চল্যকর সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে আজ শুক্রবার দুপুর আড়াইটায় জেলার মুখ্য বিচারিক হাকিম শহিদুল ইসলামের আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় তাঁকে বেশ হাসি-খুশি দেখাচ্ছিল।
এর আগে নূর হোসেনকে হেলমেট ও বুলেট প্রুফ জ্যাকেট পরিয়ে এজলাস কক্ষে নিয়ে আসা হয়। সেখানে উপস্থিত বেশ কয়েকজন আইনজীবীর সঙ্গে নূর হোসেনকে হাসি-ঠাট্টা করতে দেখা যায়। তবে কী নিয়ে নূর হোসেন হাসছিলেন তা শোনা যায়নি।
নূর হোসেন যেখানে হাসতে হাসতে কথা বলছিলেন, তাঁর পাশেই বসা ছিলেন নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা বেগম বিউটি। তাঁর চোখে-মুখে তখন অস্বস্তি ও হতাশা ফুটে ওঠে। পরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময়ও এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, নূর হোসেন আজ আদালতে যেমন উৎফুল্ল ছিলেন এবং হাসাহাসি করেছেন, তাতে তিনি স্বামীসহ সাত হত্যার বিচার পাবেন কি পাবেন না তা নিয়ে সংশয়ে আছেন।
এদিকে আদালতে নূর হোসেনের পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না। কেউ নূর হোসেনের জামিনের আবেদনও করেননি। শুনানি শেষে বিচারিক হাকিম শহীদুল ইসলাম তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। বিচারকের কক্ষ থেকে বের হওয়ার সময়ও নূর হোসেনকে হাস্যোজ্জ্বল দেখা যায়।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আরো জানান, ‘যেহেতু নূর হোসেন অভিযোগভুক্ত আসামি, তাই তাঁকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার কোনো সুযোগ নেই।’
‘নূর হোসেনকে কারা ব্যবহার করেছে জানা দরকার’
এজলাস কক্ষ থেকে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নিহত প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি, যিনি পরে ওই ওয়ার্ড থেকেই উপনির্বাচনে কাউন্সিলর হন।
সেলিনা ইসলাম বিউটি বলেন, ‘আমরা নূর হোসেনকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি। তাঁকে রিমান্ডে নিলেই প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসবে। কারণ, এই মামলায় যে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে সেখানে প্রকৃত ঘটনা বের হয়ে আসেনি। এখানে সাত খুনের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী ও কারা টাকা জুগিয়েছে তাদের কারো নাম আসেনি। নূর হোসেনকে এখানে ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু আসল নূর হোসেন কে আমি সেটা জানতে চাই। এই ঘটনায় নূর হোসেন কি একাই জড়িত? নাকি তাঁর সঙ্গে আরো সহযোগী ছিল। আমি বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’
‘নূর হোসেন কীভাবে হাসে? সাতটি পরিবারকে সে ধ্বংস করে দিয়েছে। আদালতে দাঁড়িয়ে তাঁর আইনজীবীদের সঙ্গে সে কীভাবে হাসে? চাঞ্চল্যকর এই হত্যার তথ্য বের করার জন্যই তাঁকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন আমরা করেছি।’
কাউন্সিলর সেলিনা ইসলাম বিউটি প্রশ্ন তোলেন, ‘কারণ, নূর হোসেন একাই কি এই হত্যা করেছে? তাঁকে কারা ব্যবহার করেছে? তাহলে কতিপয় র্যাব সদস্যকে অর্ডার কে দিল? এটাই আমার প্রশ্ন।’
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ নূর হোসেনকে বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মেজর লিয়াকত হোসেন নূর হোসেনকে গ্রহণ করেন। ওই সময় বিজিবি, পুলিশ ও র্যাবের বিপুলসংখ্যক সদস্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন।
নিউজ ডেস্ক ।। আপডেট: ১১:৫০ পিএম, ১৩ নভেম্বর ২০১৫,শুক্রবার
ডিএইচ
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur