চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে ১৭ বছর ধরে ভাঙ্গা ঘরের নিচে তাদের সংসার। চারদিকে বহুতল ভবনের পাশে সংখ্যালঘু হিসাবে পরিচিত বলে তাদের সম্পত্তির অস্তিত্ব খুঁজে না পেয়ে পরিত্যক্ত একচালা ভাঙ্গা ঘরে তাদের বসবাস। এমন মানবতর জীবন পার করতে দেখা যায় হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ড মমিন রোডের দাস বাড়িতে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মৃত মানিক চন্দ্র দাসের ছেলে দীপংকর চন্দ্র দাস, স্ত্রী রীনা মজুমদার ও তাদের দুই সন্তান এবং বৃদ্ধ মা মীরা রানী দাসসহ ৫ সদস্যের বসবাস একটি ভাঙ্গা ঘরে। দাস বাড়ির সামনে পথের সাথে তাদের এ ভাঙ্গা ঘরটির উপরে টিনের চালায় একাধিক চিদ্র, তিন দিকের বেড়ায় কাপড়চোপড় দিয়ে দাড়ানো। ঘরটির ভিতরে মাথা নিচু করে যাওয়া আসা করতে হয়। রাত হলে পরিবারের ছোট বড় ৫ সদস্য এক সাথে ঘুমাতে গিয়ে গাদাগাদি অবস্থা। চলাচলের পথে এক পাশে খোলা টয়লেট আর আরেক পাশে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বাউন্ডারির নিচে পুকুরের পানি ব্যবহার করে আসছে। সেই পুকুরে পাশ্ববর্তী বড় বড় আবাসিক ভবনের যাবতীয় ময়লা পানি ডুকে পরিবেশ দুর্গন্ধে পরিবারটি অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। তাছাড়া ঝড় বৃষ্টি হলে তাদের আতংক যেন বেড়ে যায়। বর্ষামৌসুমে অতি বৃষ্টি হলে রাস্তায় পানি জমে তাদের এ ভাঙ্গা ঘরে প্রবেশ করে পড়তে হয় চরম ভোগান্তিতে। বর্তমানে শীতে যেন পরিবারের ছোট বড় সদস্যরা ঠান্ডাজনিত রোগে ভুগছেন।
বর্তমান সরকারের চলমান উন্নয়নে গৃহহীন পরিবারকে ঘর করে দিলেও তাদের জায়গা জটিলতার অভাবে সেই সুযোগ থেকেও বঞ্চিত। পরিবারের একমাত্র বৃদ্ধ সদস্য প্রতিবন্ধী ভাতা আর স্থানীয় কাউন্সিলর কাছ থেকে চালের কার্ড পেয়ে কিছুটা লাগব হলেও বড় কোন সুযোগ সুবিদা পায়নি পরিবারটি। পরিবারের একমাত্র কর্তা যখন যেখানে দিনমজুর হিসেবে কাজ পায় তা দিয়ে চলে তাদের সংসার।
দীপংকর চন্দ্র দাসের স্ত্রী রীনা মজুমদার বলেন, টানা ১৭ বছর ধরে রাস্তার পাশে এ ভাঙ্গা ঘরে দুই সন্তান ও বৃদ্ধ প্রতিবন্ধি শাশুড়িসহ ৫ জনের সংসার। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পুকুরের পানি ব্যবহার করে আসতাম সেখানে জোরপূর্বক পাশ্ববর্তী দালানের ময়লা পানির লাইন দেওয়া গোসল করাসহ দুর্গন্ধ দুর্ভোগে পড়ে বর্তমানে বসবাস করা দায় হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আজাদ হোসেন মজুমদার বলেন, দীপংকর চন্দ্র দাসের পরিবারকে যখন যত সরকারি সুযোগ সুবিদা থাকে তাতে অন্তর্ভুক্ত করে আসছি। পৌরসভার রাস্তার উপর দখল করে থাকে, জায়গা না থাকায় ঘর করে দেওয়ার সুযোগ হয়নি।
প্রতিবেদক: জহিরুল ইসলাম জয়,২৩ জানুয়ারি ২০২৪
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur