গত কয়েক বছরের মতো এবারও আয়কর মেলা হবে না। তবে নভেম্বরজুড়ে দেশের প্রতিটি কর অঞ্চলে করদাতাদের ‘ওয়ান স্টপ’ বা বিশেষ সেবা দেয়া হবে বলে জানিয়েছে এনবিআর। করদাতারা নিজেদের কর অঞ্চলে গিয়ে বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমা দিতে পারবেন। তবে আয়কর মেলার মতো কর পরিশোধের সুবিধা পাবেন না। কারণ ব্যাংকের কোনো বুথ কর অঞ্চলে থাকবে না।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন।
কোভিড শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত প্রতি বছর সারা দেশে কর মেলার আয়োজন করা হতো; কিন্তু কোভিড শুরুর পর জনসমাগমে বিধিনিষেধ থাকায় তা বন্ধ হয়ে যায়। আইন অনুযায়ী, আগামী ৩০ নভেম্বর ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের রিটার্ন জমার শেষ দিন। এর মধ্যে সব কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীকে (টিআইএন) রিটার্ন জমা দিতে হবে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, আগামী বুধবার থেকে প্রতিটি কর অঞ্চলে রিটার্ন জমার যাবতীয় করসেবা পাবেন করদাতারা। দেশের ৩১টি কর অঞ্চলের ৬৪৯টি সার্কেল কার্যালয়ে করসেবা দেয়া হবে। সেখানে রিটার্ন জমার পাশাপাশি রিটার্ন ফরম পূরণেও সহায়তা করা হবে করদাতাদের। রিটার্ন জমার সঙ্গে সঙ্গে করদাতারা তাৎক্ষণিকভাবে পাবেন রিটার্ন জমার প্রাপ্তি স্বীকারপত্র। এ ছাড়া ই-রিটার্ন জমা দিতে আগ্রহী করদাতাদের জন্য আলাদা বুথ থাকবে। কেউ যদি ই-টিআইএন নিতে চান, তা-ও নিতে পারবেন। এ ছাড়া নতুন আয়কর সম্পর্কে যেকোনো তথ্য দিয়ে সহায়তা করতে থাকবে তথ্যকেন্দ্র। এভাবেই কর মেলার পরিবর্তে মেলার আদলে কর তথ্যসেবা মাস চালু করেছে এনবিআর।
এনবিআরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দ এ মুমেন বলেন, এ বছর আয়কর মেলা না হলেও এনবিআর আগামী ১ থেকে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত করদাতাদের জন্য ওয়ান স্টপ সার্ভিস জোরদার করবে। তিনি আরও বলেন, ‘কর অঞ্চলের বুথগুলোয় ই-টিন নিবন্ধন ও পুনঃনিবন্ধন সেবা দেয়ার ব্যবস্থা থাকবে।’
কর মেলা আয়োজনের উদ্দেশ্য ছিল জনগণকে কর দেয়ায় উদ্বুদ্ধ করা এবং দেশের কর-জিডিপি অনুপাত বাড়ানো। বৈশ্বিক বিবেচনায় এ অনুপাত এখনো সর্বনিম্ন।
এই উদ্যোগটি মেলায় রিটার্ন জমা দিতে আগ্রহী করদাতাদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ তৈরি করেছিল। এনবিআর ২০১০ সালে এ মেলার সূচনা করে এবং সাধারণত নভেম্বরে এর আয়োজন করা হতো।
২০২০ সাল থেকে কর মেলার আয়োজন করা হচ্ছে না। তখন করোনা মহামারির কারণে মেলার আয়োজন করা হয়নি। মহামারি শেষ হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাদের সিদ্ধান্ত বহাল রেখেছে। এ বছর নতুন ই-টিনধারীর সংখ্যা পাঁচ লাখ বেড়ে দেশে মোট ই-টিনধারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৫ লাখে। সারা দেশে ই-টিনধারীর সংখ্যা বাড়লেও সে অনুপাতে আয়কর রিটার্ন দাখিলকারীর সংখ্যা বাড়েনি। এনবিআরের তথ্যে জানা গেছে, গত বছর দেশে ৯০ লাখের মধ্যে প্রায় ৩৬ লাখ ই-টিনধারী আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন।
৬ নভেম্বর ২০২৩
এজি
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur