নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ মাছ ধরতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে জেলেরা। চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। নৌকা মেরামত আর জাল বুনায় এখন ব্যস্ত সময় কাটছে তাদের। বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) দিনগত রাত ১২টার পর থেকে সরকার ঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে। দীর্ঘ বিরতি শেষে আবারও নদীতে নামবে জেলেরা।
১২ অক্টোবর চাঁদপুরের ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার নদীতে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করে মৎস্য মন্ত্রণালয়। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরায় অসাধু জেলেদের জেল-জরিমানা করাসহ বিপুল পরিমাণ জাল ও ইলিশ জব্দ করেছে প্রশাসন।
চাঁদপুর সদর উপজেলার তরপুরচন্ডী ইউনিয়নের জেলে মোস্তফা দেওয়ান বলেন, নিষেধাজ্ঞা সময়ে আমাদের কেউ খোঁজ-খবর রাখেনি। ২২ দিনের জন্য যে চাল দেওয়া হয়েছে, তা দিয়ে সংসার চলে না। আবার ২৫ কেজি জায়গায় ২০-২২ কেজি চাল দিয়েছে। এই ২২ দিন খুব কষ্টে দিন কেটেছে। বিকল্প কোনো কাজ ছিল না। ধারদেনা ও কিস্তির টাকা দিয়ে সংসার চলেছে।
চাঁদপুর নৌ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, এ বছর জেলেরা খুব বেপরোয়া ছিল। সুযোগ পেলেই জেলেরা পুলিশের ওপর হামলা করতো। ২২ দিনের অভিযানে পাঁচ শতাধিক মাছ ধরার নৌকাসহ ১৫ শতাধিক জেলেকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া দুই শতাধিক নিয়মিত মামলা করা হয়েছে। যারা ইন্ধন দিয়ে জেলেদের মাছ শিকারে উদ্বুদ্ধ করেছে, সেসব আড়তদার ও জনপ্রতিনিধিদের আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা গোলাম মেহেদী হাসান বলেন, জেলেদের খাদ্য সহায়তা শতভাগ নিশ্চিত করা হয়েছে। এ বছর মৎস্য বিভাগ থেকে মা ইলিশ রক্ষায় আপ্রাণ চেষ্টা করা হয়েছে। জেলেদের খাদ্য সহায়তা ২০ কেজির জায়গায় ৫ কেজি বাড়িয়ে ২৫ কেজি দেওয়া হয়েছে। ইলিশ নির্বিঘ্নে ডিম পারলে ইলিশের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে।
চাঁদপুর মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আমিরুল ইসলাম বলেন, এরই মধ্যে আমাদের টিম গবেষণা শুরু করছে। ইলিশ ধরা শুরু হলে এ বছর ইলিশের লক্ষ্যমাত্রা জানা যাবে।
প্রতিবেদক: শরীফুল ইসলাম, ২ অক্টোবর ২০২৩