চাকরির বয়স শেষ হওয়ায় ফেসবুকে লাইভে এসে নিজের সব একাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেছিলেন মুক্তা সুলতানা। তিনি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগে ছয় মাসের চুক্তিভিত্তিক চাকরি পেয়েছেন।
বিষয়টি আজ সোমবার দুপুরে নিশ্চিত করেছেন মুক্তা সুলতানা নিজেই।
মুক্তা সুলতানা বলেন, ‘চাকরিটা পেয়ে আমি খুশি। প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে ১ লাখ তরুণের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে আমি আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ করতে পারব বলে আমাকে জানানো হয়েছে।’
ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক এই শিক্ষার্থী জানান, সেশনজট ও করোনার কারণে চাকরিতে আবেদনের বয়স পেরিয়ে গেছে। এ জন্য চাকরির বয়স বৃদ্ধির আন্দোলন করে আসছিলেন। কিন্তু দুই বছর আন্দোলন করেও সুফল মিলছিল না। পরিবারের খরচ সংস্থান করতে তাঁকে হিমশিম খেতে হচ্ছিল। তাই ক্ষোভে ফেসবুক লাইভে এসে শিক্ষাজীবনের সব সনদ পুড়িয়ে ফেলেন। তাঁর কষ্ট আর ক্ষোভের কথা শুনে আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক একটি প্রকল্পে তাঁর চাকরির ব্যবস্থা করে দেন।

আজ আগারগাঁওয়ে মুক্তা সুলতানার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী। এ সময় প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আপাতত ছয় মাসের জন্য মুক্তা সুলতানার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি, তিনি ছয় মাসের আগেই নিজের একটা জায়গা তৈরি করে ফেলতে পারবেন।’
চাকরি পেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কিশোরগঞ্জের মেয়ে মুক্তা।
গত মঙ্গলবার ইডেন কলেজের সামনে ফেসবুকে লাইভে নিজের সব একাডেমিক সার্টিফিকেট পুড়িয়ে ফেলেন মুক্তা সুলতানা। লাইভের ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি তাঁর মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের সার্টিফিকেট পোড়াচ্ছেন। এর আগে তিনি দেখান, তাঁর স্নাতক পরীক্ষা ২০১৩ সালে এবং স্নাতকোত্তর পরীক্ষা ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৫ সালে তাঁর পরীক্ষা হলেও ২০১৯ সালে সার্টিফিকেট ইস্যু হয়। ২০১৫ সালে পরীক্ষা দিয়েও তিনি ২০১৯ সাল পর্যন্ত চার বছর কোথাও আবেদন করতে পারেননি। চাকরির বয়সসীমা অনুযায়ী তাঁর আবেদনের সময়ের চার বছর কাজে লাগাতে পারেননি।
লাইভে ক্ষোভ প্রকাশ করে মুক্তা বলেন, ‘যে সার্টিফিকেট দিয়ে সরকারি চাকরিতে আবেদন করা যায় না, বেসরকারি চাকরিতেও আবেদন করা যায় না, সে সার্টিফিকেট রেখে কী লাভ? পোকামাকড়ে খাওয়ার চেয়ে ছাই বানানো অনেক ভালো!’
সরকারি চাকরির আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ করার জন্য আন্দোলনে যুক্ত আছেন মুক্তা। মঙ্গলবারের ফেসবুক লাইভে তিনি বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়াসহ পৃথিবীর কোথাও এই বয়সসীমা নেই। শুধু বাংলাদেশ আর পাকিস্তানে এ অবস্থা। ২৭ বছর পড়াশোনা করে যদি আবেদনই না করতে পারি, তা হলে পড়াশোনা করে লাভ কী?’
টাইমস ডেস্ক/ ২৯মে ২০২৩
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur