মুন্সিগঞ্জে স্কুলছাত্রী জেসিকা মাহমুদা জেসি (১৬) হত্যা মামলার প্রধান আসামি বিজয় রহমানকে গ্রেফতার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর ওয়ারী থেকে থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) বিকেলে স্কুলছাত্রী জেসিকাকে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান বিজয় রহমান। পরে তাকে নিয়ে যান পাঁচতলা বাড়ির ছাদে। পূর্বপরিচিত হওয়ায় বিষয়টি কেউ সন্দেহ করেননি। সন্ধ্যা ৬টার দিকে হাসপাতাল থেকে বিজয় ফোন দিয়ে জানান, জেসিকার অবস্থা খারাপ। তিনি ছাদ থেকে লাফ দিয়েছেন। সেখান থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে জেসিকার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় মামলার পর ছায়া তদন্ত শুরু করে র্যাবের গোয়েন্দা ও একাধিক ইউনিট। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে হত্যা মামলার প্রধান আসামি বিজয় রহমানকে শনিবার রাতে রাজধানীর ওয়ারী থেকে গ্রেফতার করা হয় বলেও জানান র্যাবের মুখপাত্র।
জেসিকা মাহমুদা মুন্সিগঞ্জ জেলা শহরের সরকারি এভিজেএম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। তিনি সদর উপজেলার কেওয়ার এলাকার সেলিম হোসেনের মেয়ে। মায়ের সঙ্গে শহরের কোটগাঁও এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো সে।
প্রেমঘটিত বিরোধের জেরে জেসিকাকে গত ৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় কোটগাঁও এলাকায় নিজ বাড়িতে ডেকে নেন বিজয় রহমান ও তার প্রেমিকা আবিদা আক্তার। সেখানে তাকে মারধর করা হয়। পরে ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার ঘটনা সাজান তারা। হাসপাতালে নেওয়ার পথে ওইদিন রাত ৮টায় মৃত্যু হয় জেসিকার।
ঘটনার পরদিন মুন্সিগঞ্জ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শৈবাল বসাক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, জেসিকা নামে এক কিশোরীকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন ২০ থেকে ২১ বছর বয়সী একটি ছেলে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছিল। পরে রাত ৮টার দিকে ওই কিশোরীর মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়। তার মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল। ছেলেটি দাবি করছিলেন, ‘জেসিকা পাঁচতলা ছাদ থেকে পড়ে গেছে।’ তবে এমন ঘটনা হলে রোগীর মাথা রক্তক্ষরণের চিহ্ন থাকতো, যা এ রোগীর ছিল না।
এদিকে, ঘটনার পরদিন থানায় হত্যামামলা করে নিহতের পরিবার। মামলায় বিজয় ও তার প্রেমিকা আবিদার নাম উল্লেখ করে আরও তিনজকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
আসামি আবিদাকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করে পুলিশ। আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন আবিদা। জবানবন্দিতে জেসিকা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন তিনি। তবে মামলার প্রধান আসামি বিজয় পলাতক ছিলেন।
বার্তা কক্ষ, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur