Home / চাঁদপুর / দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থায় চাঁদপুর শহরে যানজটে চরম দুর্ভোগ
যানজটে

দুর্বল ট্রাফিক ব্যবস্থায় চাঁদপুর শহরে যানজটে চরম দুর্ভোগ

দুর্বল হয়ে পড়েছে চাঁদপুরের ট্রাফিক ব্যাবস্থা। প্রতিনিয়ত শহরে বাড়ছে দীর্ঘ যানজট। যার কারণে প্রতিদিন যাত্রী, পথচারী ও চালক এবং শহরবাসির চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

গত দু’তিন বছর ধরেই চাঁদপুর শহরের বিভিন্ন সড়ক ও পয়েন্টে এমন দীর্ঘ যানজট লক্ষ্য করা গেছে। এর মূল কারন হচ্ছে শহরে যখন তখন তেলের লড়ী, ট্রাক, বড় বড় ডিস্ট্রিক গাড়ি, এবং নাম্বার বিহিন সিএনজি স্কুটারসহ অন্যান্য যানবাহন শহরে প্রবেশ করতে দেয়া।

কয়েকটি বিশ্বস্ত সূত্রে থেকে জানা গেছে, চাঁদপুর ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃপক্ষ নাম্বার বিহিন সিএনজি স্কুটার ও অন্যান্য যানবাহন মালিক ও চালকদের কাছ থেকে মাসোয়ারা আর্থিক লেনদেনে করে শহরে এসব কাগজপত্র বিহিন যানবাহন গুলো প্রবেশ করতে দেন। যার ফলে শহরে এমন তীব্র যানজটের কারণে চাঁদপুরের ট্রাফিক ব্যবস্থা অনেকটাই দুর্বল হয়ে পড়েছেন বলে দায়ী করছেন সচেতন মহল। সচেতন মহলের দাবি নাম্বার বিহিন গাড়ি শহরে ঢুকতে না দেয়া ও রাতের যেকোন একটা নির্দিষ্ট সময়ে বড় বড় ট্রাক এবং তেলের লড়ী গুলো শহরে প্রবেশ করলে হয়তো শহরে অনেকটা যানজট কমে আসতো।

কয়েক মাস ধরেই সরজমিনে দেখা গেছে শুক্র ও শনিবার ছুটির দিন ব্যতীত প্রায় প্রতিদিনই শহরের প্রধান প্রধান সড়ক গুলোতে তীব্র যানজট লেগে আছে।

বিশেষ করে শহরের মিশন রোড চার রাস্তার মোড়, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সড়ক, ছায়াবানী মোড়, কালী বাড়ি শপথ চত্বর, চিত্রলেখা মোড়, বিপনী বাগ, পাল বাজার ব্রীজের গোড়াসহ বিভিন্ন গুরত্বপূর্ণ পয়েন্টে ঘন্টার পর ঘন্টা দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে থাকে। এসব গুরত্বপূর্ণ স্থানে ট্রাফিক পুলিশ নিয়মিত দায়িত্ব পালন করলেও তেমন একটা যানজট নিরসন হতে দেখা যায়নি। অথচ পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে গত তিন চার বছর পূর্বেও চাঁদপুর শহরে এতটা যানজট ছিলোনা। তখন ক্ষনিক সময়ের জন্য আংশিক যানজটের সৃষ্টি হলেও তা কয়েক মিনিটের মধ্যে নিরসন হয়ে যেতো।

মাত্রাতরিক্ত অটোবাইক, নাম্বার বিহিন সিএনজি স্কুটার, এবং দিনের যেকোন সময়ে তেলের লড়ী, বড় বড় ট্রাক শহরে প্রবেশ করার কারনে প্রতিনিয়ত শহরে এমন যানজটের মুল কারন বলে দাবি সাধারণ মানুষের। এছাড়া ইদানিং সময়ে বিভিন্ন সড়কের পাশে মাটি খুঁড়ে গর্ত করে টেলিফোন ক্যাবল নেটওয়ার্কের লাইন স্থাপনের কাজ করার কারনেও যানজট আরো বেশি তীব্র হচ্ছে বলে দাবি সচেতন মহলের। একই ভাবে অতিরিক্ত অটোবাইক ও টেলিফোন ক্যাবল নেটওয়ার্কের লাইন স্থাপনের কাজকে যানজটের কারন বলে দাবি করছেন চাঁদপুর ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃপক্ষ।

সরজমিনে দেখা গেছে শহরের প্রায় প্রত্যেকটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টেই ট্রাফিক সদস্যরা নিয়মিত দায়িত্ব পালন করছেন। কিন্তু তা তদারকি না করার কারনে যানজট তেমন একটা নিরসন হচ্ছেনা। ট্রাফিক সার্জেন্ট ও ট্রাফিক সদস্যরা প্রতিদিন নিয়মিত দায়িত্ব পালন করার পরেও দেখা গেছে, শহরের মিশন রোডের মোড়, ছায়াবানী, কালীবাড়ি শপথ চত্বর, পাল বাজার ব্রিজের গোড়া সহ বিভিন্ন স্থানে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়ে থাকে। আর এর মূল কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত অটোবাইক, শহরে যখন তখন যে কোন সড়ক দিয়ে ট্রাক তেলের লড়ি এবং নাম্বারবিহীন গাড়ি প্রবেশ করতে দেয়া।

এ বিষয়ে চাঁদপুর ট্রাফিক বিভাগের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (প্রশাসন) মোঃ জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া যানজটের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ইদানিং শহরে একটু যানজট বেশি এটি সত্যি কথা। তবে আমাদের ফোর্স সর্বক্ষণ নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছে। এখানে রাস্তার তুলনায় এখানে সিএনজি ও অতিরিক্ত অটোবাইকসহ যানবাহনের সংখ্যা বেশি।

ইদানিংকালে সারা শহরে অপটিক্যাল ফাইবার ফাইভ নির্মাণের কাজ চলছে। সড়কের বিভিন্নস্থানে মাটি খুঁড়ে গর্ত করে রাখা হয়েছে। এটি কিন্তু যানজটের বড় কারন। যার ফলে শহরে একটু যানজট বেড়ে গেছে।

নাম্বার বিহিন যানবাহন থেকে মাসোয়ারা নিয়ে শহরে প্রবেশ করতে দেয়ার প্রসঙ্গে তিনি তা অস্বীকার করে বলেন, নাম্বার বিহিন গাড়ীর বিরুদ্ধে আমাদের যে ব্যবস্থা নেওয়ার তা অব্যাহত আছে। আমরা প্রতিনিয়ত সেই সকল গাড়িগুলোর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। ইদানিংকালে কিন্তু সেসব নাম্বার বিহীন গাড়িগুলো শহরে প্রবেশ করতে পারছে না। তারপরেও যদি এ ধরনের গাড়ি শহরে প্রবেশ করে থাকে আমাদের নজরে পড়লে অবশ্যই আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি।

প্রতিবেদক: কবির হোসেন মিজি, ২৯ নভেম্বর ২০২২