চাঁদপুর পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ডস্থ উত্তর রঘুনাথপুর গ্রামে প্রতারণা করে নেয়া, দলিল উদ্ধার করে ৪০ বছর পর নিজেদের ক্রয়-কৃত সম্পত্তিতে দখলে গেল ভুক্তভোগী দুটি পরিবার। ১৮ সেপ্টেম্বর রোববার দুপুরে উত্তর রঘুনাথপুর গ্রামের বর্ষাগাজী বাড়ির সামনে থাকা সাবেক ৯২ দাগের বর্তমান ১১৯৭ হালদাগের ক্রয়কৃত ৬ শতাংশ জমিতে ফিলার ও সাইনবোর্ড টানিয়ে দখলে যান ভুক্তভোগী পরিবারের লোকজন।
জানা যায়, চাঁদপুর পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের উত্তর রঘুনাথপুর এলাকার বর্ষা গাজী বাড়ির মৃত আব্দুল আজিজ গাজী তারই বড় ভাই মৃত মজিবুর রহমান গাজীর কাছ থেকে ১৯৭৭ সালে ৯ শতাংশ জমি ক্রয় করেন। কিন্তু মজিবুর রহমান গাজীর মৃত্যুর পর তারই পুত্র মনির গাজী ক্রয়কৃত ওই জমি এতদিন জোরপূর্বক দখল করে আসছিলো। তারপর ২০০৯ সালে মনির গাজী সু-কৌশলে বিভিন্ন মিথ্যে অজুহাত দেখিয়ে আব্দুল আজিজ গাজীর স্ত্রীর কাছ থেকে প্রতারণা করে ওই জমির দলিল নিয়ে যায়। একই সাথে মনির গাজী তার আপন বড় বোন মায়া বেগমের কাছেও ১ শতাংশ ৮০ পয়েন্ট জমি বিক্রি করেন। কিন্তু আপন বড় বোনকেও সেই জমি বুঝিয়ে দেননি মনির গাজী।
জমির দলিল প্রতারণা করে নিয়ে যাওয়ার কারণে এত বছর ভুক্তভোগী পরিবার গুলো তাদের ক্রয়-কৃত জমিতে দখলে যেতে পারেননি।
এদিকে চলতি বছরের আগস্ট মাসে আব্দুল আজিজ গাজীর ছেলে মোঃ বাবুল গাজী, শাহজালাল গাজী ও হৃদয় গাজী সহ তাদের পরিবারের লোকজনরা চাঁদপুর সদর সাব- রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে তাদের সেই প্রতারণা করে নেওয়া দলিলটি উদ্ধার করেন।তারই প্রেক্ষিতে ১৮ সেপ্টেম্বর রোববার দুপুরে তারা দুই পরিবার মিলে তাদের জমিতে সিমেন্টের পিলার গেঁথে বেড়া দিয়ে ও সাইনবোর্ড টাঙ্গিয়ে দখলে যান।
স্থানীয় এলাকার বেশ কয়েকজন জানান, ৪০ বছরের উপরে মৃত আব্দুল আজিজ গাজী তারই আপন বড় ভাই মজিবুর রহমানের কাছ থেকে এই জমি ক্রয় করেছিলেন। আর এত বছর পরে এসে তারা তাদের সেই ক্রয়কৃত জমিতে দখলে গিয়েছেন।
জমি ক্রয় করা মৃত আব্দুল আজিজ গাজীর পুত্র বাবুল গাজী ও শাহজালাল গাজী জানান, ১৯৭৭ সালে আমার বাবা আমারই জেঠা মজিবুর রহমান গাজীর কাছ থেকে ৯ শতাংশ জমি ক্রয় করেছিলেন। কিন্তু তারপর থেকে আমার জেঠাতো ভাই মনির গাজী সেই জমি জোরপূর্বক দখল করে আসছিলেন। এমনকি তার কয়েক বছর পরে সে আমার মাকে সহজ সরল পেয়ে আমাদের জমি-জামার কি অবস্থা সেটি দেখবে বলে আমার মায়ের কাছ থেকে প্রতারণা করে ক্রয়-কৃত ওই জমির দলিলটি নিয়ে যায়। আমরা বেশ কয়েক বছর ধরে অনেক চেষ্টার পর চাঁদপুর সাব-রেজিস্টার অফিস থেকে আমাদের সেই দলিলটি উদ্ধার করি এবং রোববার দুপুরে ওই জমির দখলে যাই।
মনির গাজীর আপন বড় বোন ভুক্তভোগী মায়া বেগম জানান, আমার ছোট ভাই মনির গাজী ২০১৭ সালে একই দাগে আমার কাছে এক শতাংশ আশি পয়েন্ট জায়গা বিক্রি করেন। এছাড়াও আমার বাবার ওয়ারিশ সূত্রেও এক শতাংশ বিশ পয়েন্ট জায়গা দিবে বলে জানায়। দুটি মিলিয়ে আমি মোট তিন শতাংশ জমি তার কাছে পাই। কিন্তু সেই জমি সে আজো আমাকে বুঝিয়ে দেননি। সেজন্য আমরা আমাদের জায়গা বুঝে পাওয়ার জন্য দখলে এসেছি।
প্রতিবেদক : কবির হোসেন মিজি, ১৮ সেপ্টম্বর ২০২২
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur