চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে খাস জমিতে মন্দির নির্মাণের অভিযোগ তুলে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার উপজেলার গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ওই নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। এদিকে খাস জমিতে মন্দির নির্মাণের চেষ্টা ও প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলার গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের খাজুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সম্মুখে বির্তকিত জমিতে দোল মন্দির নির্মাণ করতে গেলে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। এর আগে মন্দির নির্মাণের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিমুল চন্দ্র লোদ এবং পলাশ চন্দ্র লোদ মন্দির নির্মাণ করার জন্য সেখানে থাকা দু’টি বড় গাছ কেটে পেলে। মন্দির নির্মাণকালে ভূমি কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট নথি দেখাতে বললে তরা নথি দেখাতে ব্যর্থ হয়।
গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়ন ভূমি অফিস জানায়, গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়নের রাজ পরিবারের বংশধর দীপক বরণ সিংহ রায় গত বছর পরলোকগমন করেন। তবে বিএস খতিয়ান থেকে জানা যায়, দীপক রায় নিজ মালিকানাধীন ৭ একর ২৫ শতক সম্পত্তির মধ্যে কয়েকজনের কাছে অল্প পরিমাণ সম্পত্তি বিক্রি করে দেন। এছাড়া স্কুল, পুকুর এবং শিক্ষক বাসভবনের নামে খতিয়ান থাকলেও কোথায়ও দোল মন্দিরের নামে কোনো সম্পত্তির উল্লেখ নেই। তাছাড়া হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির নির্মাণ সংশ্লিষ্ট আইনে দেবোত্তরকৃত সম্পত্তিতে মন্দির নির্মাণের বিধান রয়েছে। তবে উক্ত জমি দেবোত্তর সম্পত্তি না হলেও হিন্দু সম্প্রদায়ের কতিপয় মানুষ জোরপূর্বক মন্দির নির্মাণের পাঁয়তারা চালাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, বর্তমানে যেই সম্পত্তিতে মন্দির নির্মাণের চেষ্টা চলছে তার ২০০ গজের মধ্যে পুরনো ঐতিহ্যবাহী আরেকটি মন্দির রয়েছে। এদিকে একটি মন্দির থাকার পরও কেনো পাশাপাশি আরেকটি মন্দির নির্মাণের চেষ্টা চলছে এ নিয়ে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মাঝেও মিশ্র প্রতিক্রীয়া দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে মন্দির নির্মাণের সঙ্গে জড়িত শিমুল চন্দ্র লোদ বলেন, ‘দিপক চন্দ্র সিংহ রায়’ দোল মন্দিরের নামে ২ শতাংশ জমি লিখে দেন। আমরা সেখানেই মন্দির করতে চাচ্ছি। এখানে আমরা বহু বছর ধরে পূজা করতেছি।’ তাদের দাবির পক্ষে কোনো নথিপত্র আছে কিনা, জানতে চাইলে তিনি বলেন- ‘আছে’। তবে সেটা ভূমি কর্মকর্তাকে দেখাতে পারেননি তিনি।
এ বিষয়ে ৬নং গুপ্টি পশ্চিম ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ‘সরকারি খাস ভূমিতে কিছু লোক মন্দির নির্মাণ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। এ রকম সংবাদ পেয়ে আমি সেখানে যাই। এবং তাদেরকে বাঁধা দিই। তারা তাদের স্বপক্ষে কোনো কাগজ পত্র দেখাতে পারেনি। এমনকি আমি কোথায়ও মন্দিরের নামে কোনো নথিপত্র পাইনি।’
উল্ল্যেখিত জমির মূল মালিকের আইনগত কোনো ওয়ারিশ না থাকায় উক্ত ভূমি খাস হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে বলে দাবী করেন এ ভূমি কর্মকর্তা।
প্রতিবেদক: শিমুল হাছান, ১৪ জুলাই ২০২২