চাঁদপুর টাইমস নিউজ ডেস্ক :
স্বামীর পরকীয়া ফাঁস করায় ফরিদপুরের সদর উপজেলার চরকৃষ্ণপুর গ্রামের গৃহবধু শিল্পী বেগমকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ শিল্পীর পরিবারের। তাই এ হত্যাকান্ডে বিচার দাবী শিল্পীর পরিবারের লোকজনসহ এলাকাবাসীর।
এরই মধ্যে শিল্পীর বিচার দাবীতে আন্দোলনে নেমেছে তারা। জানাগেছে, চার বছর আগে চর কৃষ্ণপুরের মৃত লাল মিয়া দেওয়ানের পুত্র ইসহাক দেওয়ানের সাথে বিবাহ হয় ফরিদপুর ও রাজবাড়ী জেলার সীমান্তবর্তী সুলতানপুর গ্রামের আলমাস মোল্লার কন্যা শিল্পীর। ইসহাক দেওয়ানের পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনভাই বিদেশে অবস্থান করায় তাদের স্ত্রীরা বাড়ীতে থাকতো, যাদের বিভিন্ন কাজের দেখভাল করতে হতো ইসহাককে। শিল্পীর পরিবারের অভিযোগ, এক পর্যায়ে মেঝভাইয়ের বউয়ের সাথে পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর এ অনৈতিক সম্পর্ক ধরা পড়ে শিল্পীর চোখে।
এ বিষয়টি ফাঁস করে দেয়ার পর থেকেই শিল্পীর সাথে সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এক পর্যায়ে শুরু হয় নির্যাতন। শিল্পীর ফুফু রওশনারা বেগম, চাচাতো বোন ইভা পারভীন, জেসমিন আরা ও লিপি পারভীন জানান, বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের কথা বাবার বাড়ীর সদস্যদের জানালেও কেউই গুরুত্ব দেয়নি। তাদের দাবী, স্বামীকে সৎপথে ফেরাতে নানা চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয় শিল্পী।
তারা আরো জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে ফোনে জানানো হয় শিল্পীর মৃত্যুর খবর। আর শিল্পীর বাবার বাড়ীর লোকজন ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌছালে পালিয়ে যায় স্বামীসহ স্বামীর পরিবারের লোকজন। শিল্পীর মা লাকী বেগম ও বাবা আলমাস মোল্লা দাবী করেন, বছরাধিকাল ধরে বিভিন্ন সময়ে শিল্পীর উপর নির্যাতন চালিয়ে আসছিল পাষন্ড স্বামী। সম্প্রতি বেড়ে গিয়ে ছিল নির্যাতনের মাত্রা। সন্তানের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছেননা বাবা-মা। স্থাণীয় ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন মোল্লা জানান, শিল্পীর এ হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে ক্ষুব্দ শিল্পীর নিজ গ্রামের মানুষ।
প্রতিবাদে ও হত্যাকারীদের বিচার দাবীতে বিক্ষোভ করেছে গ্রামবাসী। শিল্পীর হত্যার বিচার দাবী তাদের।
কোতয়ালী থানা পুলিশের তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক এনছের আলী জানায়, শিল্পীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে দাগ ও ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। তিনি বলেন, ভিসেরা রিপোর্ট পেলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে। এদিকে শিল্পীর মৃত্যুর পরই পালিয়ে গেছে শিল্পীর স্বামী, শাশুড়ী ও সন্দেহে (পরকীয়া) থাকা ইসহাকের মেঝভাইয়ের স্ত্রী। তবে, বাড়ীতে থাকা ইসহাকের বড়ভাইয়ের স্ত্রী সালমা বেগম জানায় জানায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে শিল্পী নিজেই ফোরাডন পান করে। আর শরীরে ক্ষতচিহ্ন প্রসঙ্গে তিনি জানান, ধরাধরি করে হাসপাতালে নেয়ার সময় ক্ষতের সৃষ্টি হতে পারে। তবে বিভিন্ন সময়ে শিল্পীর উপর অত্যাচারের বিষয়ে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি।
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur