Home / জাতীয় / অর্থনীতি / রোজাকে সামনে রেখে বাড়েছে সয়াবিন, আটা-ময়দা ও ডালের দাম
রোজাকে

রোজাকে সামনে রেখে বাড়েছে সয়াবিন, আটা-ময়দা ও ডালের দাম

দুই মাস পর শুরু হবে রোজা। ইফতারি ও সাহরিকে সামনে রেখে নতুনভাবে ভোজ্যতেল সয়াবিন ও পাম অয়েলের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এছাড়া মসুর ডাল (মোটা দানা) কেজিতে বেড়েছে ৩-৪ টাকা। আর ছোট দানা (নেপালি) বেড়েছে কেজিতে ৫-৬ টাকা। এছাড়া প্যাকেট আটা ও প্যাকেট ময়দার দাম কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকার মতো।

শুক্রবার (২৮ জানুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ময়দা বিক্রি হচ্ছে ৫২ টাকা কেজি দরে, যা আগে ছিল কেজিপ্রতি ৫০ টাকা। এক কেজি প্যাকেট আটা ৪২ টাকার পরিবর্তে বিক্রি হচ্ছে ৪৩ টাকায়। ডিম, মাছ, পেঁয়াজ ও আলুর দাম আগের মতোই চড়া।

এদিকে চালের দাম আবারও বেড়েছে। গত বুধ ও বৃহস্পতিবার মাঝারি চাল কেজিপ্রতি বিক্রি হয়েছে ৫৬ টাকা দরে। শুক্রবার সেই চালের দাম হয়ে গেছে ৫৮ টাকা কেজি।

খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, দুই দিন ধরে তেলের দাম বাড়তি। বোতলে সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৫-৮ টাকা বেড়েছে। খোলা সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ১০ টাকা পর্যন্ত। পাম অয়েলের দামও লিটারে ৫-১০ টাকার মতো বেড়েছে।

ব্যবসায়ীদের তথ্যানুযায়ী, নতুন আসা এক লিটার তেলের বোতলে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬৫-১৬৮ টাকা, যা আগে ছিল ১৬০ টাকা। আর পাঁচ লিটার বোতলের সয়াবিন তেলের দাম এখন ৭৮৫-৮০০ টাকা, যা আগে ছিল ৭৬০ টাকা।

খোলা সয়াবিন তেল লিটারপ্রতি খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন ১৫৫-১৬০ টাকা, যা আগে ছিল ১৫০-১৫৫ টাকা। পাম অয়েলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকা, যা আগে ছিল ১৩০-১৩৫ টাকা।

রাজধানীর কাওরান বাজারের ব্যবসায়ী মো. আকসেদ আলী বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে তেলের দাম বাড়তি। আগে যে খোলা সয়াবিন তেলের লিটার ১৫০ টাকায় বিক্রি করেছি, এখন তা ১৫৫ টাকা।’

মানিক নগর এলাকার ব্যবসায়ীরা ১৬০ টাকা লিটারে খোলা সয়াবিন বিক্রি করছেন।

ব্যবসায়ীরা ভোজ্যতেলের দাম বাড়িয়ে দিলেও গত ১৯ জানুয়ারি তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছিলেন, আগামী ১৫ দিন ভোজ্যতেলের দাম বাড়বে না। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারির পর ভোজ্যতেলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে জানান তিনি।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘আমাদের না জানিয়ে ব্যবসায়ীরা নিজেরা কিছু দাম বাড়িয়েছিল। সেটাও তারা (ব্যবসায়ী) বলেছে বিবেচনা করবে। তবে আন্তর্জাতিক বাজার, ডিউটি স্ট্রাকচারসহ সব দেখে ১৫ দিন পর বসে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। সামনে রমজান ও রোজার ঈদ। সেজন্য ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করেছি, তারা যেন স্বাভাবিকভাবে এলসি ওপেন করে।’

এর আগে আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের মূল্যবৃদ্ধির কথা উল্লেখ করে নতুন দাম কার্যকরের দাবি জানিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন। পরে সেটি যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ট্যারিফ কমিশনে পাঠায় মন্ত্রণালয়।

এদিকে রাজধানীর বাজারগুলোতে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা কমেছে। পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগি দাম কমেছে কেজিতে ১০ টাকার মতো।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৬৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৭০-১৭৫ টাকা। পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির কেজি এখন ২৩০-২৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৪০-২৮০ টাকা।

ভালো মানের দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজের কেজি ৪৫-৫০ টাকা। আলুর কেজি এখন ১৫ টাকা। ডিম ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০-১১৫ টাকায়।

সবজির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গাজর ও পাকা টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা কেজি। শিম কেজিপ্রতি ৩০-৬০ টাকা, শালগমের (ওল কপি) কেজি ৪০ টাকা, বরবটির কেজি ৭০ টাকা। ফুলকপির পিস ৪০ টাকা ও লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। লালশাকের আঁটি ১৫ টাকা ও পালং শাকের আঁটি ১৫ টাকা।

মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৬০০ টাকায়। অন্য মাছের মধ্যে কেজিপ্রতি নলা ১৭০-২০০ টাকা, চিংড়ি ৬০০-৬৫০ টাকা, তেলাপিয়া ও পাঙাস ১৫০-১৭০ টাকা, রুই ও কাতল ৩০০-৪৫০ টাকা, শিং ও টাকি ২৫০-৩৫০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১২০০ টাকায়। ছোট ইলিশ মাছের কেজি ৫০০-৬০০ টাকা।