চাঁদপুর সদর উপজেলার ১১ নং ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের রাফিয়া আদর্শ মহিলা মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক আব্দুল্লাহ গাজীকে ১৪ বছর বয়সী মাদ্রাসা ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে আটক করেছে পুলিশ।
৩ জুন বৃহস্পতিবার বিকেলে চাঁদপুর সদর মডেল থানার এসআই শাহরিন সঙ্গীয় সদস্যদের নিয়ে ইউনিয়নের ইব্রাহিমপুর গ্রাম থেকে শিক্ষক আব্দুল্লাহকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
ওই মাদ্রাসা থেকে শিক্ষক আব্দুল্লাহকে আটক করে অবরুদ্ধ রাখার পর বৃহস্পতিবার সারাদিন স্থানীয় সালিশিদের নিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায়।
তবে শ্লীলতাহানির ঘটনা জানতে পেরে পুলিশ সুপার মিলন মাহমুদ তাৎক্ষণিক চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশকে ঘটনাস্থলে পাঠায়।
অবশেষে মাদ্রাসার ছাত্রী শ্রীলতাহানি ঘটনাটি ৫০ হাজার টাকায় রফা দফা করে সালিশি দালালচক্ররা নিজেরা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায়।
স্থানীয়রা জানান, সদর উপজেলার ৯ নং বালিয়া ইউনিয়নের চাপিলা গ্রামের নেসার উদ্দিন হাজীর ছেলে আব্দুল্লাহ গাজী ২০১৫ সালে ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডে রাফিয়া আদর্শ মহিলা মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন। তার মাদ্রাসায় বর্তমানে দেড় শতাধিক ছাত্রী রয়েছে। শিক্ষক আব্দুল্লাহ তার মাদ্রাসায় অনেক ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছে, যা মান সম্মান ভয়ে নির্যাতিত কিশোরীরা কাউকে জানায় নি। অবশেষে ১৪ বছর বয়সী মেয়ে আদর্শ মহিলা মাদ্রাসায় গেলে তাকে জোরপূর্বক লম্পট শিক্ষক আব্দুল্লাহ শ্লীলতাহানি করে।
এ ঘটনায় নির্যাতিত কিশোরী মাদ্রাসায় না যাওয়ায় তার বাবা তার কাছে কারণ জিজ্ঞাসা করে। তখন সে তার বাবার কাছে লম্পট শিক্ষকের এ কুকর্মের ঘটনা জানান।
পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চান। এই ঘটনা স্থানীয় মহিলা ওয়ার্ড মেম্বারের স্বামী সহ বেশ কয়েকজন সালিশিরা ৫০ হাজার টাকার বিনিময় রফাদফা করে। তা অবশেষে পুলিশের কারণে সফল হয়নি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল্লাহ গাজী জানান, মাসুদ পাটোয়ারীর মেয়ে মাদ্রাসায় ভর্তি হয়। তবে শয়তানের ফেরে পরে কিশোরীর সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত হয়েছি। তা আমি ভুল করেছি এবারের জন্য ক্ষমা করে দেন। তবে আমার শ্বশুর গোবিন্দিয়া গ্রামের আমির খান খবর পেয়ে এসে ঘটনাটি সমাধানের চেষ্টা করছে।
এ বিষয়ে ৪/৫/৬ নং ওয়ার্ড মহিলা মেম্বার শান্তা বেগমের স্বামী মুজিব শেখ জানান, মাদ্রাসা ছাত্রীর সাথে অপকর্মের ঘটনাটি শিক্ষক স্বীকার করেছে ও ক্ষমা চেয়েছে। যেহেতু মেয়ের বাবা ভবিষ্যতে বিয়ের কথা চিন্তা করে থানা পুলিশকে জানাতে অপারগতা স্বীকার করেছে। নিজে দায়িত্ব নিয়ে লম্পট শিক্ষক আব্দুল্লাহকে আটকে রেখে স্থানীয়ভাবে ঘটনাটি সমাধান করার চেষ্টা করছি।
১১ নং ইব্রাহিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কাশেম খান জানান, মাদ্রাসার ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনাটি লোকমুখে শুনেছি। তবে আমি ঢাকায় আছি তাই ওয়ার্ড মেম্বারকে বলেছি অপরাধীকে পুলিশের হাতে তুলে দিতে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর সদর উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা সানজিদা শাহনাজ জানান, ঘটনাটি জানা নেই তবে ওয়ার্ড মেম্বারকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
সিনিয়র স্টাফ করেসপন্ডেট,৩ জুন ২০২১
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur