চাঁদপুর টাইমস স্বাস্থ্য ডেস্ক:
বাজার ছেয়ে গিয়েছে পাকা আম, লিচু ও নানান ধরণের গ্রীষ্মকালীন ফলে। কিন্তু একটু লক্ষ্য করলেই দেখবেন যে তার স্বাদ নেহাতই পানসে। বলতে গেলে কোন রকম স্বাদ-গন্ধই যেন নেই। পাকা আম, কাঁঠাল, লিচুর গন্ধে মৌ মৌ করবে চারপাশ, তাই না? কিন্তু আজকাল ফলে যেন কোনো ঘ্রানই নেই। এমনকি কলা বা পেঁপের মত সস্তা ফলের ক্ষেত্রেও একই হাল। পুরুষ্টু পাকা পেঁপে। কিন্তু কাটার পরে দেখা গেল ভিতরটা বিশ্রী রকমের কাঁচা। পাকা কলার খোসা ছাড়িয়ে কামড় বসাতেই টের পাওয়া গেল কলা মোটেই পাকেনি।
এর পেছনে কারণ কী? কারণ হচ্ছে কার্বাইড! হ্যাঁ, আজকাল ফল মাত্রই কার্বাইড দিয়ে পাকানো হয়।
ক্রেতা ঠকানোর ফন্দি করতে গিয়ে এক শ্রেণির ফল ব্যবসায়ী বহু বছর ধরেই হাতিয়ার করেছেন কার্বাইডকে। ইদানীং সেই প্রবণতা বেড়েছে মারাত্মকভাবে। ফল ব্যবসায়ীদের একটা বড় অংশই স্বীকার করেন যে, প্রতিযোগিতার বাজারে টিকে থাকতে এ ছাড়া পথ নেই। সমতের আগেই কার্বাইড দিয়ে দ্রুত পাকানো যায় ফলকে আর বিক্রি করা যায় চড়া দামে। কিন্তু কার্বাইডে পাকানো ফল খেলে শরীরে পুষ্টি তো যায়-ই না, উপরন্তু এর প্রভাব অত্যন্ত মারাত্মক হতে পারে বলে জানাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।
ফল পাকানোর জন্য ব্যবহৃত এই রাসায়নিকের পোশাকি নাম ক্যালসিয়াম কার্বাইড। হাওয়ার সংস্পর্শে এলে কার্বাইড থেকে অ্যাসিটিলিন নামে এক ধরনের গ্যাস বেরোয়। এবং এই গ্যাসের উত্তাপেই ফল পেকে যায়। সাথে জেনে রাখুন, ওই গ্যাসই লোহার কারখানায় লোহা কাটতে ব্যবহার হয়! এবং ৫০ টন আম, পাকাতে প্রয়োজন হয় মাত্র ১০০ গ্রাম কার্বাইড।
কার্বাইডে পাকানো ফল নিয়মিত খেলে ফল হতে পারে মারাত্মক। মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়ে স্নায়ুর সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া, পাকস্থলীর নানা সংক্রমণের পাশাপাশি কার্বাইড থেকে ক্যানসারও হতে পারে বলে আশঙ্কা চিকিৎসক মহলের। অন্তঃসত্ত্ব নারী কার্বাইডে পাকানো ফল খেলে সন্তানের হতে পারে নানান রকম অস্বাভাবিকতা।
কীভাবে চিনবেন কার্বাইড দিয়ে পাকানো ফল?
-ফলের চেহারা হবে উজ্জ্বল ও আকর্ষণীয়।
-গোটা ফলের চেহারা একই রকম হবে, রঙ একই রকম হবে। দেখে মনে হবে সমান ভাবে পেকেছে। গাছপাকা ফল কখনো সমানভাবে পাকে না।
-ফলের মাঝে স্বাভাবিক পাকা ফলের মোট মৌ মৌ গন্ধ থাকবে না।
-অনেক ফলে রসুনের মত হালকা গন্ধ থাকতে পারে।
বিশেষ সতর্কতা:
-ফল খাওয়ার আগে ভাল ভাবে ধুয়ে নেওয়া উচিত।
-খোসা সহ ফল না খাওয়াই ভাল।
-নির্দিষ্ট মৌসুমের আগেই কোনও ফল কেনা উচিত নয়।
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur