দেশের বিভিন্ন জেলার আরও ১৯টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ ২৫ হাজার (সোয়া ২ লাখ) টন চাল আমদানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার ৫ জানুয়ারি অনুমতির এ চিঠি খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের কাছে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গত ৩ জানুয়ারি ১ লাখ ৫ হাজার টন সিদ্ধ চাল আমদানির জন্য ১০টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দিয়েছিল খাদ্য মন্ত্রণালয়।
দেশের ভেতর লাগামহীন চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে এ পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এবার আমন মৌসুমে মোটা চালের দাম ৫০ টাকা ছুঁয়েছে। চালের দাম দুর্ভোগে ফেলেছে সাধারণ মানুষকে। এ পরিস্থিতিতে গত ২৭ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলনে চাল আমদানির শুল্ক ৬২ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২৫ শতাংশ করার ঘোষণা দেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।
শুল্ক কমিয়ে নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় চাল আমদানির কথাও ওইদিন জানিয়েছিলেন খাদ্যমন্ত্রী। পরে চাল আমদানি করতে ইচ্ছুক ব্যবসায়ীদের আবেদন করার জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এ আবেদনের শেষ সময় নির্ধারণ করা হয়েছে ১০ জানুয়ারি। আবেদন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যাচাই-বাছাই করে অনুমতিও দিয়ে দিচ্ছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
একই সঙ্গে সরকারি পর্যায়েও (সরকার-টু-সরকার) চাল কেনার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ ভাঙ্গা দানাবিশিষ্ট বাসমতি নয় এমন সিদ্ধ চাল শর্তসাপেক্ষে আমদানির জন্য অনুমতি দেয়া হয়েছে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে – যশোহরের মেসার্স মজুমদার অ্যান্ড সন্স ২০ হাজার মে. টন, মেসার্স লিটন এন্টারপ্রাইজ ১০ হাজার মে. টন, মেসার্স সুশান্ত কৃষ্ণ রায় ১০ হাজার মে. টন, মেসার্স গ্লোবাল এন্টারপ্রাইজ ৫ হাজার মে. টন।
সাতক্ষীরার মেসার্স মজুমদার এন্টারপ্রাইজ ২৫ হাজার মে. টন, ময়মনসিংহের মেসার্স মজুমদার ট্রেডার্স ৫০ হাজার মে. টন, গাইবান্ধার মেসার্স প্রধান ট্রেডার্স ৫ হাজার মে. টন, পাবনার পূর্বাশা ট্রেডিং ৫ হাজার মে. টন, দিনাজপুরের মেসার্স ইউনাইটেড রাইস মিল ৫ হাজার মে. টন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের মেসার্স হোসেন ট্রেডার্স ১০ হাজার মে. টন, মেসার্স ইসলাম ট্রেডার্স ৫ হাজার মে. টন, মেসার্স নবাব ফুড প্রোডাক্টস ১০ হাজার মে. টন চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছে।
এছাড়া শেরপুরের মেসার্স এবি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল ১০ হাজার টন মে., চাঁপাইনবাবগঞ্জের মেসার্স নজরুল সুপার রাইস মিল ১০ হাজার মে. টন, সাতক্ষীরার মেসার্স নিশাত ইন্টারন্যাশনাল ১৫ হাজার মে. টন, চট্টগ্রামের আল আমিন এস্টাব্লিশমেন্ট ৫ হাজার মে. টন, মেসার্স সামছুল আলম ১০ হাজার মে. টন, মেসার্স এস অ্যান্ড কোং ১০ হাজার মে. টন, বগুড়ার ফারিয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল ৫ হাজারমে. টন চাল আমদানির অনুমতি পেয়েছে।
চাল আমদানির শর্তে বলা হয়েছে, বরাদ্দপত্র ইস্যুর সাত দিনের মধ্যে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে হবে। এ সংক্রান্ত তথ্য খাদ্য মন্ত্রণালয়কে তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে হবে। ব্যবসায়ীদের মধ্যে যারা ৫ হাজার টন বরাদ্দ পেয়েছেন, তাদের এলসি খোলার ১০ দিনের মধ্যে ৫০ শতাংশ এবং ২০ দিনের মধ্যে পুরো চাল বাজারজাত করতে হবে।
এছাড়া যেসব প্রতিষ্ঠান ১০ থেকে ৫০ হাজার টন বরাদ্দ পেয়েছে তাদের এলসি খোলার ১৫ দিনের মধ্যে ৫০ শতাংশ এবং ৩০ দিনের মধ্যে সব চাল এনে বাজারজাত করতে হবে শর্ত দিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।
ঢাকা ব্যুরো চীফ , ৫ জানুয়ারি ২০২১
এজি