পটুয়াখালী ও বরিশালে প্রচুর ইলিশ পাওয়া গেলেও চাঁদপরের মেঘনায় আশানুরূপ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না। আর তাই হতাশায় ভুগছেন স্থানীয় আড়তদার ও জেলেরা।
মঙ্গলবার দুপুরে হরিনা এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, নদীতে তেমন একটা ইলিশ নেই। জেলেরা নদীতে সারাদিন পড়ে থেকেও নৌকার জ্বালানি খরচ পর্যন্ত উঠাতে পারছেন না।
জীবনের পুরো সময়টা কাটিয়েছেন জলিল মিয়া জেলের কাজ করে। কখনও অন্যকোনো কাজ শেখার চেষ্টাটুকুও করেননি। ভেবেছিলেন এই পেশা দিয়েই নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করবেন।
কিন্তু জীবনের এই পড়ন্ত সময়ে এসে পড়েছেন নানা বিড়ম্বনায়। সাংসারিক বিড়ম্বনার পাশাপাশি পড়েছেন নদীতে ইলিশ না পাওয়ার বিড়ম্বনায়। আর এর মূল কারণ হচ্ছে মেঘনার বুকে ইলিশ না পাওয়া।
শফিক, হারুন, মোতালেবসহ বেশ কয়েকজন জেলের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানায়, নদীতে যে পরিমাণ মাছ থাকার কথা তা একেবারেই পাওয়া যাচ্ছে না। নদীতে মাছ না থাকায় সংসার চালাতেও কষ্ট হচ্ছে।
স্থানীয় জেলে জসিম উদ্দিন জানান, ভোর ৪টায় নদীতে গেছিলাম। এখন বেলা ১১টা বাজে আসলাম। কিন্তু কোনো মাছের দেখা পাইনি। হাজার দু’য়েক টাকার মাছ পাইছি। এত কম মাছ ধরলে আমরাতো চলতে পারব না।
এ বিষয়ে হরিনা ঘাটের আড়তদার হারুন খাঁ জানান, এখন মাছের মৌসুম কিন্তু জেলেরা নদীতে মাছ পাচ্ছে না। কিছুদিন পর আবার মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম চালু হবে তাই আমরা খুব চিন্তায় আছি। জেলেরা নদীতে মাছ না পাওয়ায় তাদের যেমন ক্ষতি হচ্ছে তেমনি আমাদেরও। তাছাড়া আমাদের এখন অলস সময় কাটাতে হচ্ছে।
হরিনা ঘাটের আরেক আড়তদার আব্দুল কাদের ছৈয়াল জানান, জেলেরা এখন নদীতে তেমন একটা মাছ পাচ্ছে না। তাই আমরাও বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। এই নিয়ে আমরা খুব দুশ্চিন্তায় আছি কারণ আমরা জেলেদেরকে অনেক টাকা দাদন দিয়ে রাখি। নতুন করে আগামী বছরের জন্য আবার দাদনের সময় এসে গেছে। এখন কীভাবে কী করব তাই বুঝতে পারছি না।
মাছ কম পাওয়ার বিষয়ে চাঁদপুরের ইলিশ গবেষক ডাক্তার আনিসুর রহমান জানান, যেহেতু দক্ষিণাঞ্চলে যেমন পটুয়াখালী, ভোলা, চরফেশনসহ বিভিন্ন এলাকায় মাছ পাওয়া যাচ্ছে সেহেতু চাঁদপুরে অল্প সময়ের মধ্যেই মাছ ধরা পড়বে। এতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।
করেসপন্ডেট,৯ সেপেটম্বর ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur