কৃষিমন্ত্রী ড.মো.আব্দুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী, চলমান বন্যায় প্রায় ৩৪৯ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতির আর অবনতি না হলে কৃষি মন্ত্রণালয় যেসব কর্মসূচি নিয়েছে তাতে ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা যাবে এবং আমন ধান চাষে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।
সোমবার ২০ জুলাই কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে অনলাইনে কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে এসব তথ্য জানান কৃষিমন্ত্রী। সভা সঞ্চালনা করেন কৃষি সচিব মো.নাসিরুজ্জামান।
মন্ত্রী জানান, ২৫ জুন থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত প্রথম পর্যায়ের বন্যায় মোট ১৪টি জেলায় ১১টি ফসলের প্রায় ৭৬ হাজার ২১০ হেক্টর জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার মধ্যে ৪১ হাজার ৯১৮ হেক্টর জমি সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলো হলো- রংপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, সিলেট, সুনামগঞ্জ, জামালপুর, নেত্রকোণা, রাজশাহী, মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর এবং টাঙ্গাইল। এসব এলাকায় মোট ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ৩ লাখ ৪৪ হাজার জন।
দ্বিতীয় পর্যায়ে ১১ জুলাই থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত মানিকগঞ্জ, বগুড়া, টাংগাইল, নাটোর, নওগাঁ, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, জামালপুর, রাজশাহী, দিনাজপুর, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, ময়মনসিংহ, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, শেরপুর ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আগের ১৪টিসহ মোট ২৬টি জেলায় ১৩টি ফসলের প্রায় ৮৩ হাজার হেক্টর আক্রান্ত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ফসলের পরিমাণ এখনও নিরূপণ হয়নি।
কৃষি মন্ত্রণালয় ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এগুলোর মধ্যে অধিক ক্ষতিগ্রস্ত জেলাসমূহে কৃষকের জমিতে ২ কোটি ১৫ লাখ টাকার কমিউনিটি ভিত্তিক রোপা আমন ধানের চারা উৎপাদন ও ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ, প্রায় ৭০ লাখ টাকার ভাসমান বেডে রোপা আমন ধানের চারা উৎপাদন, ৫৪ লাখ টাকার মাধ্যমে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে রোপণের জন্য ট্রেতে নাবী জাতের আমন ধানের চারা উৎপাদন ও ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় আমন চাষ সম্ভব না হলে ৫০ হাজার কৃষকের মাঝে প্রায় ৩ কোটি ৮২ লাখ টাকার মাষ কলাই বীজ ও সার দেয়া হবে।
এ অনলাইন সভায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) মো. আরিফুর রহমান অপু, অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা) কমলারঞ্জন দাশ, অতিরিক্ত সচিব (সার ব্যবস্থাপনা ও উপকরণ) মো. মাহবুবুল ইসলাম, অতিরিক্ত সচিব (পিপিসি) ড. মো. আবদুর রৌফ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. নাজিরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর, বিএডিসি’র চেয়ারম্যান সায়েদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া, বন্যা উপদ্রুত অঞ্চল ও জেলাসমূহের কৃষি কর্মকর্তগণ এ অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন।
বার্তা কক্ষ ,২১ জুলাই ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur