বিশ্বজুড়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ও মৃতের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। এ ভাইরাসে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ফুসফুসের। করোনাভাইরাস প্রথমে মানবদেহের ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়। পরে শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেই এটি একজনের দেহ থেকে আরেকজনের দেহে ছড়ায়। তাই আমাদের ফুসফুস আগে থেকেই শক্তিশালী করা দরকার।
তাই প্রতিদিন যে সব খাবার আপনার ডায়েট নিয়ন্ত্রণ রাখবে এবং ফুসফুস সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে, তা হলো :
আঙ্গুর
আঙ্গুরের পুষ্টিগুণ অনেক। আমাদের দেশে রোগীর পথ্য হিসেবে আঙ্গুর ব্যাপক ব্যবহৃত হয়। এতে প্রোটিন, শর্করা, চর্বি, ক্যালসিয়াম, ফরফরাস, লৌহ, খনিজ, পটাশিয়াম, থিয়ামিন, রিবোফ্লাবিন, ভিটামিন-এ, বি, সি উপাদান রয়েছে। যা ফুসফুসকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। আপনি যদি ফুসফুস ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তবে এই খাবারটি প্রতিদিনের ডায়েটে রাখতে পারেন।
আপেল
আপেলে ফ্লাভোনয়েড নামে এমন এক ধরনের উপাদান রয়েছে, যেটি শ্বাসনালীর সিস্টেমকে ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং ফুসফুসের নানা সমস্যা থেকে আমাদের রক্ষা করে।
বেদানা
ফুসফুসের নানা ক্ষতি এড়াতে এবং ফুসফুস ভালো রাখতে নিয়মিত এ খাবারটি খান।
পেস্তা বাদাম
এটি ফুসফুসকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, পেস্তা বাদাম ফুসফুসের ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে। শুধু তাই নয়, কোলেস্টেরল কমাতেও ভূমিকা রাখে পেস্তা বাদাম।
গোলমরিচ
শ্বাসনালীর যে কোনও সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে গোলমরিচ।
গাজর
গাজরে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। বিটা ক্যারোটিন শরীরে প্রবেশ করে ভিটামিন ‘এ’ তে রূপান্তরিত হয়। আর এটি ফুসফুস পরিশুদ্ধ রাখতেও সহায়তা করে।
টমেটো
শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতাকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে টমেটো। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ টমেটো কোষ ভালো রাখতে সহায়তা করে। এর মধ্যকার লাইকোপেন শ্বাসযন্ত্রে সুরক্ষা স্তর তৈরি করে। ফলে বাতাসে থাকা দূষণ ও ধূলিকণার ক্ষতিকর প্রভাব থেকে তা রেহাই দেয়।
রসুন
রসুনে বিভিন্ন ধরনের অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি উচ্চ মাত্রার অ্যালিসিন রয়েছে। এগুলো প্রদাহের নানা সংক্রমণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে তা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া শ্বাস-প্রশ্বাসজনিত সমস্যা সমাধানেও রসুন অনেক বেশি কার্যকরী।
আদা
এটিতে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান রয়েছে। এটি ফুসফুসকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে। এজন্য নিয়মিত আদা-চা খেতে পারেন।
হলুদ
হলুদেও অ্যান্টি-আনফ্লামেটরি বিদ্যমান রয়েছে, যা ফুসফুস পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
বাদাম এবং মটরশুঁটি
বাদাম ও মটরশুঁটিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম। এগুলো অ্যাজমা রোগীদের খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। এগুলো ফুসফুসের ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শ্বাসযন্ত্রের দক্ষতা উন্নত করতেও সাহায্য করে।
পেঁয়াজ
পেঁয়াজে প্রচুর পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড বিশেষ করে ভিটামিন বি৬ এবং সি রয়েছে। যা ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
কফি
কালো কফি ফুসফুস ভালো রাখতে সাহায্য করে। কারণ কফি পানের পর শ্বাসতন্ত্রের ক্রিয়ার উন্নতি ঘটে। ফুসফুস সুরক্ষিত রাখতে নিয়মিত কফি পান করতে পারেন। তবে ২০০ মিলির বেশি কফি পান না করাই ভালো।
তুলসি
ঠাণ্ডা-কাশি দূর করতে তুলসির ব্যবহার বেশ উপকারী। এটি ক্ষতিগ্রস্ত ফুসফুসকে রক্ষা করে। রোজ তিন চা চামচ তুলসীপাতার রস খেলে শরীরের শ্বাসযন্ত্রের দূষিত পদার্থ বেরিয়ে যায়।
ব্রকলি
ব্রকলিতে বিভিন্ন উপাদান ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। ব্রকলিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি থাকায় এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে ভূমিকা রাখে। এ ছাড়া ফুসফুসকে রক্ষা করতেও ব্রকলি খুবই কার্যকরী।
বাঁধাকপি ব্রকলির মতো বাঁধাকপিও ফুসফুসের ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। সেই সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
মধু
এতে আছে ‘অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট’, ‘অ্যান্টিমাইক্রোবায়াল’ ও প্রদাহনাশক গুণাবলী। যা ফুসফুস পরিষ্কার করে। এছাড়া হাঁপানি, যক্ষ্মা, গলার বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় মধু ব্যবহার হয়ে আসছে। তাই প্রতিদিন এক চামচ মধু খাওয়ার অভ্যাস করুন।
বার্তা কক্ষ , ১৫ জুলাই ২০২০