চাঁদপুর জেলা থেকে কোভিড-১৯ ভাইরাস পরীক্ষার জন্যে প্রতিদিন শতাধিক রিপোর্ট ঢাকা যায়। কিন্তু দেখা গেছে যে, একটি ল্যাবের রিপোর্ট একদিনের মাথায় চলে আসে, আরেকটি ল্যাবের রিপোর্ট ১০/১২ দিন চলে গেলেও সেই রিপোর্ট আসেনি। এতে করে জেলায় করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ভয়ানকভাবে বাড়ছে।
১৮ জুন বৃহস্পতিবার চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ে মাত্র ৭টি রিপোর্ট আসে। ৭টির মধ্যে ৩ জনেরই পজিটিভ পাওয়া গেছে। এর কয়েকদিন আগে ১০টি রিপোর্টের মধ্যে ৯টি পজিটিভ এসেছে। যা আক্রান্তের হার ৯০ ভাগ। চাঁদপুর থেকে শত শত রিপোর্ট গেলেও সেগুলো পরীক্ষা হয়ে সময়মতো না আসায় এখন বলতে গেলে রিপোর্টের জট লেগেছে।
চাঁদপুর সিভিল সার্জন কার্যালয় থেকে জানা গেছে, গতকাল পর্যন্ত চাঁদপুর থেকে স্যাম্পল পাঠানো হয়েছে ৩ হাজার ৫শ’ ৫টি। এর মধ্যে গতকাল পর্যন্ত রিপোর্ট এসেছে ২ হাজার ৬শ’ ৯৮টি। রিপোর্ট পেন্ডিং অবস্থায় আছে ৮শ’ ৭টি। জানা গেছে যে, গত ৭ জুন যেসব স্যাম্পল চাঁদপুর থেকে গিয়েছে সেগুলোরও অনেক রিপোর্ট এখনো আসেনি। এ রিপোর্টগুলো আসলে এর যথার্থতা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহও থেকে যাবে।
সূত্র থেকে জানা গেছে, ঢাকা আগারগাঁওস্থ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ল্যাবরেটরি মেডিসিনে যেসব স্যাম্পল পরীক্ষার জন্যে যায় সেগুলো আসতে ৮/১০ দিন কি এর চেয়েও বেশি সময় লেগে যায়। অথচ ঢাকা মোহাম্মদপুরস্থ চাইল্ড হেল্থ রিসার্চ ফাউন্ডেশনে যেসব স্যাম্পল যায় সেগুলোর রিপোর্ট একদিনের ব্যবধানে চলে আসে। চাঁদপুরের রিপোর্টের এ জট লাগার বিষয়টি গত ক’দিন আগে জেলা করোনাবিষয়ক প্রতিরোধ কমিটির সভায় সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ সাখাওয়াত উল্লাহ স্থানীয় সংসদ সদস্য ও শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। শিক্ষামন্ত্রী এ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। কিন্তু এর সমাধান যতোই দেরি হচ্ছে ততোই চাঁদপুরের রিপোর্ট ঢাকা গিয়ে জমা হয়ে থাকছে। ফলে স্যাম্পল দেয়া ব্যক্তিরা সময়মতো রিপোর্ট না জানার কারণে তাদের স্বাধীনভাবে চলাফেরা করায় করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার যে তিনজনের পজিটিভ রিপোর্ট আসে সে তিনজনের অবস্থান হচ্ছে : কল্যাণপুর ইউনিয়নের দাসাদী গ্রামের ৫৫ বছরের একজন পুরুষ, চাঁদপুর শহরের বিষ্ণুদী মাদ্রাসা রোড এলাকার ২৪ বছরের এক নারী এবং বালিয়া ইউনিয়নস্থ ঢালীরঘাট এলাকার ৫৫ বছরের এক পুরুষ। এ তিনজনসহ জেলায় এখন আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হচ্ছে ৫শ’ ১১।
এদিকে মতলব দক্ষিণ উপজেলার ধলাইতলী গ্রামের মনু মিয়া (৬০) নামে এক করোনা পজিটিভ রোগীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ গোলাম কাওসার হিমেল। তিনি জানান, মনু মিয়া গত ১৩ জুন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মারা যান। এরপর তার স্যাম্পল নেয়ার পর ১৬ জুন পজিটিভ রিপোর্ট আসে। গতকাল তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ একজনসহ জেলায় এখন মৃত্যুর সংখ্যা হচ্ছে ৪৪ জন। এছাড়া সুস্থ হয়েছেন ১শ’ ৪৬ জন। আর চিকিৎসাধীন আছেন ৩শ’ ২১ জন।
বার্তা কক্ষ, ১৯ জুন ২০২০
Chandpur Times | চাঁদপুর টাইমস Top Newspaper in Chandpur