কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার ষোলদাগ গ্রামে রাসেল নামের এক যুবক চাকরির সুবাদে ঢাকায় বসবাস করেন। শরীরে করোনা উপসর্গ দেখা দেয়ায় গত ২৩ মে তিনি ঢাকায় নমুনা দিয়েই গ্রামের বাড়ি ভেড়ামারায় চলে আসেন। এসেই পরের দিন ২৪ মে লুকিয়ে বিয়ে করেন পাবনার ঈশ্বরদীতে।
বিয়ের রীতিনীতি মেনে বৃহস্পতিবার (২৮ মে) বউ নিয়ে শশুর বাড়িতে যান রাসেল। এদিকে, শুক্রবার (৩০ মে) সকালে ঢাকা থেকে জানানো হয় জামাই করোনা আক্রান্ত । এ খবর জানার পরেই ঈশ্বরদী থেকে নতুন বউ নিয়ে আবারও ভেড়ামারায় গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন রাসেল।
অপরদিকে, করোনা আক্রান্ত ছেলের সাথে গোপনে মেয়ের বিয়ে দিয়ে বিপাকে পড়ে গেছেন শ্বশুর বাড়ির লোকজন। বিষয়টি জানাজানি হলে ঈশ্বরদী থানা পুলিশ সন্ধ্যায় রাসেলের শ্বশুর বাড়িটি লকডাউন করে দেয়।
প্রতিবেশী ইমরান হোসেন জানান, ওই যুবক বিয়ের পর নতুন বউকে তার ভেড়ামারার বাড়িতে নিয়ে ৪ দিন অবস্থান করেন। ঈশ্বরদী থেকে ভেড়ামারায় জামাই বাড়িতেও বেড়াতে যান মেয়ের পরিবারের লোকজন।
ঈশ্বরদী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাহাউদ্দীন ফারুকী জানান, বর্তমানে নব-দম্পতিরা ভেড়ামারায় অবস্থান করছেন। বর করোনা পজিটিভ হওয়ায় আমরা তার শ্বশুর বাড়ি লকডাউন করেছি। সেই সাথে পুনরায় যাতে করোনা পজিটিভ ওই বর যাতে শ্বশুর বাড়িতে না আসে এজন্য কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এবং বাড়ি থেকে কাউকে বাইরে বের না হতে কঠোরভাবে নির্দেশ দেয়া হয়। বাড়ির সকলের নমুনা পরীক্ষার জন্য সংগ্রহ করা হবে বলেও জানান তিনি।
এদিকে করোনা পজিটিভ রাসেলের কোনো তথ্য অফিসিয়ালভাবে ভেড়ামারা উপজেলা প্রশাসনের কাছে আসেনি বলে জানায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহেল মারুফ।
তিনি জানান, রাসেল করোনা পজিটিভ এমন কোনো তথ্য অফিসিয়ালি আমাদের কাছে আসেনি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে ঈশ্বরদী থানা যদি আমাদের সহযোগিতা চায় তাহলে আমরা দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, শুক্রবার নতুন করে ১০ জনসহ কুষ্টিয়া জেলায় অদ্যাবধি ৫৭ জন কোভিড রোগী শনাক্ত হয়েছে। বহিরাগত বাদে জেলায় এর মধ্যে দৌলতপুরে ১৯, ভেড়ামারায় ৬, মিরপুরে ১০, কুষ্টিয়া সদরে ৭, কুমারখালীতে ১১ ও খোকসায় ৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৪৩ জন এবং নারী ১৪ জন। বর্তমানে হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ৩৩ জন রোগী।
বার্তা কক্ষ ৩০ মে ২০২০