শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার নড়িয়া সরকারি কলেজের এক ছাত্রীর অপহরণ নাটকে বিপাকে পড়েছিলেন তার পরিবার ও কলেজের কয়েকজন ছাত্রী। ঘটনার এক সপ্তাহ পর পুলিশ ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে জানতে পারে তিনি অপহরণ হননি, নিজেই আত্মগোপন করেছিলেন।
ওই ছাত্রীর নাম রেশমি রেজাউল রিয়া (২০)। তিনি নড়িয়া উপজেলার ডিঙ্গামানিক ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের থিরপাড়া গ্রামের রেজাউল করিম মাঝির মেয়ে এবং নড়িয়া সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
নড়িয়া থানা পুলিশ, রেশমির পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নড়িয়ার থিরপাড়া গ্রামের রেশমি গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কলেজে যাওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে আর বাড়ি ফেরেননি। দুপুর ১২টার দিকে তার ভাইয়ের মোবাইল ফোনে কল দেন রেশমি। বলেন, ‘কলেজের ছয়-সাত ছাত্রী আমাকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে।’
পরে মোবাইল বন্ধ করে দেয়া হয়। পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজ করেও তাকে না পেয়ে বিকেলে তার বাবা রেজাউল করিম মাঝি নড়িয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এতে তার পরিবার ও কলেজের কয়েকজন ছাত্রী বিপাকে পড়েন। পরে বুধবার (৪ মার্চ) দুপুরে ঢাকার হাতিরঝিল থেকে তাকে উদ্ধার করে পুলিশ।
রেশমির প্রতিবেশী রফিকুল ইসলাম আকাশ বলেন, আমার বোন নড়িয়া সরকারি কলেজে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়ে। রেশমি আত্মগোপন করার পর তার পরিবার আমার বোনকে দোষারোপ করেছিল। রেশমির বাবা রেজাউল করিম মাঝির সঙ্গে আমাদের দীর্ঘদিন ধরে জমি-সংক্রান্ত বিরোধ চলছে। আমাদের ফাঁদে ফেলার জন্য পরিকল্পিতভাবে রেজাউল করিম এ কাজ করেছেন।
তিনি বলেন, রেশমি আত্মগোপন করার পর কয়েকবার আমাদের বাড়ি পুলিশ আসে। আমার বোনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। আমাদের পরিবার বেশ চিন্তায় ছিল।
নাম প্রকাশ্যে অনুচ্ছুক নড়িয়া সরকারি কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, রেশমি কলেজের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে। তার কারণে কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা চিন্তিত ছিলেন। তার শাস্তি হওয়া উচিত।
রেশমির বাবা রেজাউল করিম মাঝি বলেন, আমার মেয়েকে কেউ অপহরণ করেনি। সে স্বেচ্ছায় আত্মগোপন করেছিল। পুলিশ রেশমিকে উদ্ধার করেছে।
নড়িয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুর রহমান বলেন, নিজ ইচ্ছায় আত্মগোপন করেছিলেন রেশমি। গত বুধবার দুপুরে ঢাকার হাতিরঝিল থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। তার বাবা বিয়ে দেন না বলে রাগ করে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিলেন রেশমি।
বার্তা কক্ষ,৭ মার্চ ২০২০